ঈদের জন্য হাতে কাটা সেমাই ও নকশী পিঠা বানানোয় ব্যস্ত গৃহবধূরা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

আর মাত্র তিন দিন পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ উপলক্ষে গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন রকমের নকশী পিঠা বানানোয় ব্যস্ত সময় পার করছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার নারীরা। ঈদের দিন সকালে অতিথি আপ্যায়নে কিংবা আত্মীস্বজনের বাড়িতে ঈদ উপহার হিসেবে হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন ধরনের নকশী পিঠা ছাড়া চলে না।

পরিবারের সবার মধ্যে ঈদ -আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য তৈরি হয়ে থাকে হাতে কাটা সেমাই নানা রকমের নকশী পিঠা। ধনী কিংবা দরিদ্র সকল পরিবারে কম বেশি সবাই বানিয়ে থাকে। তবে বর্তমান সময়ে অনেকেই শখের বশে হাতে কাটা সেমাই ও বিভিন্ন ধরনের নকশী পিঠা বানিয়ে হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা।

বিজ্ঞাপন

গফরগাঁও উপজেলার পৌরশহর ও বিভিন্ন গ্রামে বাড়ির উঠানে, ঘরে আঙিনায় কিংবা বাসার ছাদে পিঠা ও সেমাই বানানোর দৃশ্য এখন সবার নজরে পড়বে। পিঠা তৈরির জন্য একসঙ্গে জড়ো হচ্ছে নারী ও স্কুল - কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা। কেউ নকশী পিঠা, কেউ হাতে কাটা সেমাই, কেউ বাবুই ঝাঁক পিঠা বানাতে আবার কেউ এগুলো রোদে শুকনোতে ব্যস্ত সময় পার করছে। এসব পিঠার মধ্যে অন্যতম হলো নকশী পিঠা, জামাই পিঠা, ঝর্ণা পিঠা, সিরিজ পিঠা, বাবুই ঝাঁক পিঠা, পয়সা পিঠা, ঝুড়ি পিঠা, সাবুদানা পিঠা, পাতা পিঠা, ঝিনুক পিঠা, হাতের সেমাই ও কলের সেমাই।

পৌরশহরের গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বলেন, হাতে কাটা সেমাই বিভিন্ন ধরনের নকশী পিঠা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এগুলো আমরা নিজেরা খাই এবং আত্মীস্বজনদের বাড়িতে পাঠাই। এগুলো বানানো ও শুকানোর মধ্য ও ঈদের আনন্দ কাজ করে।

বিজ্ঞাপন

কলেজ ছাত্রী স্বর্ণা আক্তার বলেন হাতের সেমাই, নকশী পিঠা, সিরিঞ্জ পিঠা, পয়সা পিঠা, এগুলো আমাদের গ্রামীন ইতিহাসের অংশ। এগুলো ছাড়া আমাদের ঈদ আনন্দ জমে উঠে না।

গৃহবধূ তমা আক্তার বলেন, আমরা দলবেঁধে বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও সেমাই তৈরি করে থাকি। এসব পিঠা তৈরি করতে চালের গুঁড়া, বেলুনি, পিড়ি, কাটার, খেঁজুর কাঁটা অথবা সুঁই, তেল, কলাপাতা, রঙ ইত্যাদি লাগে। পরে কাঁচা পিঠা রোদে শুকানো হয়। এগুলো ঈদের দিন সকালে গরম তেলে ভেঁজে চিনি অথবা গুড়ের শিরার ডুবিয়ে খাওয়ার জন্য পরিবেশন করা হয়।

গফরগাঁও আলতাফ গোলন্দাজ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও নারী উদ্যোক্তা শ্রেষ্ঠ জয়িতা জুলেখা খাতুন সোমা বলেন, গফরগাঁও এর ঘরোয়া মেয়ে, গৃহবধূরা পিঠা নিয়ে কাজ বেশি করছে। আলহামদুলিল্লাহ এতে ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে, সমাজের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তাদের জীবনমানও উন্নত হচ্ছে। পিঠাগুলো নতুন আঙ্গিকে দেশীয় ঐতিহ্য সমাজে তুলে ধরছে। আমাদের গ্রাম বাংলার নারীরা দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও পিঠা রপ্তানি করবে ইনশাআল্লাহ।