পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরা থেকে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধাম দর্শন ৫ যুবকের

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরা থেকে সীতাকুণ্ড পৌঁছালেন ৫ যুবক

পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরা থেকে সীতাকুণ্ড পৌঁছালেন ৫ যুবক

ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশী তিথিতে পায়ে হেঁটে দেশের সব তীর্থ স্থান ভ্রমণ করার সংকল্প নেন ৬৫ জন। তবে দিন শেষে বের হলেন মাত্র ৫ জন। যে কথা সেই কাজ বাড়ি থেকে সবার সম্মতি নিয়ে পঞ্চপান্ডবের মতো এক মন নিয়ে বের হয়ে পড়লেন সেই তীর্থ যাত্রায়।

তারা হলেন, বলাবাড়িয়া গ্রামের মহাদেব সরকারের ছেলে জয় সরকার (২২), একই গ্রামের অমল কৃষ্ণ সরকারের ছেলে প্রসেনজিৎ সরকার (২৮), একই গ্রামের খোকন মন্ডলের ছেলে গণেশ মণ্ডল (২৯), বালিয়াপুর গ্রামের মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে দেবু সরকার (২৫) এবং সোনাবাঁধাল গ্রামের প্রবাস মন্ডলের ছেলে নয়ন মন্ডল (২০)।

বিজ্ঞাপন

টানা ১৩ দিন পায়ে হেঁটে সাতক্ষীরা থেকে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধাম পৌঁছেছিলেন এই ৫ যুবক। তাদের সবার বাড়ি সাতক্ষীরাতে। তাদের এই দুর্গম পথ খালি পায়ে হেঁটে যাওয়ার গল্প শুনতে হাজির হন বার্তা২৪.কমের ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট মৃত্যুঞ্জয় রায়।

রোববার (৭ এপ্রিল) সকালে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে শুরু হয় তাদের  আলাপ।

বিজ্ঞাপন

তারা বার্তা২৪.কম'কে জানান, আমরা চৈত্র মাসের ১ তারিখে বালাপোতা তারকনাথ বাবার ধামে গিয়ে সংকল্প করি যে বাবার এই মাসে খালি পায়ে হেঁটে বাবার উদ্দেশে রওনা হবো। তখন কথা বলতে বলতে বের হলো সতী মায়ের পীঠের এই চট্টগ্রাম চন্দ্রনাথ ধামের কথা। আমরা দৃঢ় ভাবে সংকল্প করি যেকোনো কঠিন বাধা বিপত্তি পার করে হলেও আমরা ওখানে যাব খালি পায়ে। সন্ন্যাস গ্রহণ করতে হলে যদিও বাবা মায়ের সম্মতি লাগে তাই বাড়িতে চলে আসলাম বাবা মায়ের আশীর্বাদ নিতে। এতোটা দুগর্ম পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে সেখানে, এটা শুনে কারোর বাবা মা রাজি হয় না। বাবা এক পর্যায়ে রাজি হলো এবং চৈত্র মাসের ২ তারিখ থেকে আমরা রওনা হলাম চন্দ্রনাথ ধামের উদ্দেশে।

দেবু সরকার বার্তা২৪.কম'কে জানান, প্রথমে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা ভয়কে জয় করে মনকে স্থির করে বাবার নামে বের হয়ে পড়েছিলাম। আমরা ঘণ্টায় প্রায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে চলতাম । এটা আমাদের প্রতিদিনের হাটার সংকল্প ছিল যাতে করে আমরা এই পথ হেঁটে অতিক্রম করতে পারলে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব।

আপনাদের চলার পথে কোনো বাধা বিপত্তি আসছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের চলার পথে অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমন ও দিন গেছে যে আমরা না খেয়ে ছিলাম বা এমনও দুলর্ভ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে যে আমাদের টার্গেটের মধ্যে কোনো মন্দির পায় নি। তবে পেয়েছি তা থেকে একটু দূরে। আমরা টানা ২ দিন না খেয়ে ছিলাম। তবে একজন আমাদের ডেকে নিয়ে খাবার খেতে দিল।

সামনে আপনাদের আর কোনো মিশন আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের তীর্থ ভ্রমণ সব সময় অব্যাহত থাকবে। কাছে দূরে আমরা সব সময় চালিয়ে যাব। পায়ে হেঁটে সেখানে দর্শন করব। তবে সামনে আমরা বড় একটা মিশনের সংকল্প নেবো বাইরের দেশে যাওয়ার। যদি আপনারা আমাদের আশীর্বাদ বা সাপোর্ট করেন তাহলে এটা আমাদের জন্য ভালো হবে। আমরা সফল হতে পারব।