শাজাহানপুর থানায় হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা, আটক ৮
বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলার মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামানসহ ৮ জন সন্ত্রাসীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে থানা চত্বরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামানের বাংলোবাড়ি এবং মাঝিড়াস্থ তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার আড়িয়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন মিয়াকে ২টি বার্মিজ চাকুসহ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। মিঠুন মিয়ার নামে হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। মিঠুন মিয়াকে থানায় নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে থানায় প্রবেশ করে আসামি মিঠুন মিয়াকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
এসময় থানার ওসি শহিদুল ইসলামকে ধাক্কা দেয় এবং অপর পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। মারধরে অন্তত ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে এসআই আনিছুর রহমান, কন্সটেবল ইসমাইল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, রুহুল আমিন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
পুলিশ আরও জানায়, নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, জমি দখল, সরকারি কাজে বাধাসহ ৮-১০টি মামলা রয়েছে। এক বছর আগে হাট-বাজার ইজারা টেন্ডারের সময় উপজেলা অডিটোরিয়ামে সবার সামনে থেকে কৌশলে দরপত্র চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নুরুজ্জামান চেয়ারম্যানের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা নুরুজ্জামান সন্ত্রাসীদের গড ফাদার। তার বিশাল এক সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। এই বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে মাদক, ইট বালু মাটি সিন্ডিকেট, জমি দখলসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ভয়ে নিজ দলীয় নেতাকর্মীসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। এমন কি গণমাধ্যমকর্মীরা পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে সন্ত্রাসী স্টাইলে থানায় প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামি ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় থানায় হামলা, আগ্নেয়াস্ত্রসহ একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সন্ত্রাসী নিধনে অভিযান চলমান থাকবে।