ঈদ ও বৈসাবির ছুটিতে পাহাড়ে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের আশা
প্রকৃতি ভালোবাসেন এমন পর্যটকদের সারাবছরই টানে দেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা গুলো। কি বর্ষা, কি শীত যখনই কোন উপলক্ষ্য পান খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে ছুটে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। এ বছরও ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের ছুটিতে তার ব্যতিক্রম নয় খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে। রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতির আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, এ বার ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ মিলে ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন চাকরীজীবীরা। এ সুযোগে অনেকে ঘুরতে আসছেন পাহাড়ী জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সাজেকে। গেল শুক্রবার থেকে সাপ্তাহিক ও ঈদের ছুটি শুরুর পর পর্যটকদের দেখা মিলছে। এবার ঈদুল ফিতরের সাথে বাংলা নববর্ষ ও পাহাড়ের অন্যতম সামাজিক উৎসব বৈসাবি একই সময়ে হওয়ায় দেশ বিদেশের ব্যাপক পর্যটক আগমন ঘটবে খাগড়াছড়ি জেলায়। সে লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন হোটেল, মোটেল ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটির সাজেক ভ্যালীর রয়েল সাজেক রিসোর্টের পরিচালক জিয়াউল হক জানান, ঈদের আগে ও পরে মিলে রিসোর্টের সব রুম বুকিং হয়েছে। ইতোমধ্যে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। এপ্রিলের ১৮ তারিখ পর্যন্ত বুকিং রয়েছে বলে জানান তিনি। সাজেকে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুযোগ সীমিত দাবি করে ঈদের বন্ধে পর্যটকে চাপ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করেন তিনি। ভোগান্তি এড়াতে রুম বুকিং কিংবা যোগাযোগ না করে আসতে আহ্বান জানান তিনি।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতিরি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম জানান, সাজেকে ২ শতাধিক কটেজ রিসোর্ট ঈদের জন্য আগাম বুকিং পেয়েছে। রমজানে পর্যটক না থাকায় টানা বন্ধে অনেক কটেজ রিসোর্ট সংস্কার কাজ চালিয়ে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত পর্যটন বরণে। আশা করা হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও বৈশাখীর ছুটি মিলে দারুণ ব্যস্ততা যাবে সাজেকের ব্যবসায়ীদের।
খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল গাইরিং এর ব্যবস্থাপক সীমা চাকমা জানান, পুরো রমজান মাস জুড়ে হোটেল বুকিংয়ে বিশেষ ছাড় ছিল। ঈদুল ফিতরের জন্য যারা রমজানের মধ্যে বুকিং দিচ্ছেন তারাও এ অফার পাচ্ছেন। পর্যটকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
একই কথা বলছেন পরিবহন, খাবার হোটেল সহ পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা। খাগড়াছড়ি জীপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেবনাথ জানান, ঈদুল ফিতর, বৈশাখী ও বৈসাবি উৎসব ঘিরে খাগড়াছড়িতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম ঘটবে। বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের আসা যাওয়ায় পরিবহন ব্যবহৃত হবে। বিশেষ করে সাজেক রুটে পর্যটকদের চাপ থাকবে বেশী। পর্যটকদের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, বিনোদন কেন্দ্র ছাড়াও এলাকা ভিত্তিক পুলিশের টহল থাকবে ঈদ, বৈসাবি ও বৈশাখকে ঘিরে। খাগড়াছড়িতে আগত পর্যটকরা যেন নির্বিঘ্নে ঘোরাঘুরি করতে পারেন সে লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ তৎপর রয়েছে।
খাগড়াছড়ি ও সাজেকে ঈদুল ফিতর, বৈশাখী ও বৈসাবির এ মৌসুমে লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।