র্যাগ ডে অনুষ্ঠানে ঝগড়ার জেরে কলেজ ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
জাতীয়
গাজীপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে র্যাগ ডে অনুষ্ঠানে সহপাঠীদের মধ্যে বাক বিতর্ক থেকে ঝগড়ার জের ধরে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল- আমীন (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে কলেজের অদূরে চন্দ্রা ডাইনকিনি মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
নিহত আল আমীন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে। তিনি ওই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রলীগের সভাপতি পদে নিযুক্ত ছিলেন।
এ ঘটনায় আরও তিনজন গুরুত্বর আহত অস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার (৫ জুন) দুপুরে চন্দ্রার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে র্যাগ ডে অনুষ্ঠানে সহপাঠীদের মধ্যে ছাত্রলীগের দলীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে বিষয়টি সমাধানের জন্য ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতারা কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ডানকিনি মোড়ে সমবেত হয়।
এই সময় উভয় পক্ষে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কয়েকজন যুবক হঠাৎ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অপর গ্রুপের উপর হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি কোপে তিনজন গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল আমীনকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাছিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজনের নাম আমরা জানতে পেরেছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা চলমান।
মাসকলাই মূলত ডাল জাতীয় শস্য। এটি সাধারণত চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেশি চাষ হয়ে থাকে। মাসকলাইয়ে তেমন পরিচর্যারও দরকার হয় না। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় মাত্র এক হাজার টাকা। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা মাসকলাই চাষে ঝুঁকছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মাসকলাই চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭৫০ হেক্টর জমিতে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি তৈরি না করেও মাসকলাই চাষ করা যায়। চাষ করার পর থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই মাস। এক বিঘা জমিতে মাসকলাই উৎপাদন হবে ৩-৪ মণ। প্রতি মণ মাসকলাই বাজারে বিক্রি হয় ২৫০০ হাজার থেকে ৩ হাজার হাজার টাকা। মাসকলাই চাষে সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি ব্যয় হয় মাত্র এক হাজার টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের যোগীবাড়ি গ্রামের সজীব বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে মাসকলাই চাষ করছি। এতে তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে খরচ হবে এক হাজার টাকার মতো। জমিতে শুধু বীজ ছিটিয়ে দিলেই হয়, কোনো পরিচর্যা করা লাগে না।
আরেক কৃষক জানান, আমি প্রতি বছরই মাসকলাই চাষ করি। খরচ একেবারেই কম।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, মাসকলাই খুবই লাভজনক শস্য। চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয় এ ফসল। চাষিরা ভালো লাভবান হচ্ছেন। জমি চাষ না করেও পরিত্যক্ত জমিতে মাসকলাই চাষ করা যায়।
দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য দেওয়া আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এটি তামিলনাডু-শ্রীলংকা উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১৪ নভেম্বর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়াও বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় রাতের তাপমাত্রা কমতে পেতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।
বায়ুদূষণের তালিকার শীর্ষ দশ থেকে বের হতে পারছে না রাজধানী ঢাকা। শহরটিতে বাতাসের মান আজ 'অস্বাস্থ্যকর' পর্যায়ে রয়েছে। পঞ্চম স্থানে থাকা শহরটির স্কোর ১৬৩।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৩২মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
আইকিউএয়ার'র তথ্য অনুযায়ী, বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। ৮৭৫ স্কোর নিয়ে এই শহরের বাতাস দুর্যোগপূর্ণ বা বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। এই শহরটির দূষণ স্কোর ৪৯৯ অর্থাৎ সেখানকার বাতাসও বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে।
লাহোরে দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় শিশুদের সুরক্ষা দিতে লাহোরের কয়েকটি শহরে সব স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও পাঞ্জাব প্রদেশের কয়েকটি শহরেও এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বায়ু দূষণের তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়। এই শহরটির দূষণ স্কোর ২০৪ অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মান খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। এরপর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে কাতারের দোহা। দোহার বায়ু দূষণের মানের স্কোর ১৬৩।
উল্লেখ্য, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে, তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
রাজধানীর সড়কে চলাচলকারী মানুষের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দীর্ঘ যানজট। আর এই যানজটের প্রধান কারণ সড়কে চলা অটোরিকশার দাপট। যার নেই কোনো বৈধতা। ফলে তিন চাকার এই যানটিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণও হারাচ্ছেন অনেকে।
অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলেও মিলছে না সুফল। মূলত সড়কে পুলিশের উপস্থিতি টের পেলেই অটোরিকশা চালকরা রাস্তা পরিবর্তন করে পালিয়ে যায়। ফলে এসব অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী ট্রাফিক পুলিশের সাথে অটোরিকশা চালকদের ‘ইঁদুর-বিড়াল খেলা’ চলছে, মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত প্রায় লাখ খানেক অটোরিকশা ডাম্পিং করা হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে নিয়মিত অভিযানও।
তবে অভিযান অব্যাহত থাকলেও নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খেতে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা সদস্যদের। গেল সেপ্টেম্বর মাসে শুধু রাজধানীতেই ১ সপ্তাহে ২০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ জানাচ্ছে, ২২-২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সাত দিনের অভিযানে ৯ হাজার ৩০১টি অটোরিকশার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জব্দ করা ৪ হাজার ১৫৯টি রিকশার সিটও।
অভিযানকালে ডাম্পিং করা হয় ৬৬০টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও জব্দ করা হয় ৩টি রিকশার ব্যাটারি। অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ৫ হাজার ৮৩৯টি রিকশার বিরুদ্ধে । নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পরও দিন দিন রাজধানীর সড়কে বেড়েই চলেছে অটোরিকশার দৌরাত্ম্য। যার ফলে ঘটছে নিয়মিত দুর্ঘটনা।
প্রধান সড়কগুলিতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার দাপট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কি ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে বা তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খোন্দকার নজমুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ধরতে পারলে আমরা এদেরকে ডাম্পিংয়ে পাঠাচ্ছি। রাজধানীর সড়কে এদের দাপট কমাতে আমরা নিয়মিত অভিযানও পরিচালনা করছি। অভিযানে এদেরকে ধরতে পারলে আমরা ব্যাটারি ডাম্পিংয়ে দিচ্ছি আবার রিকশাও ডাম্পিংয়ে দিচ্ছি। একটা না একটা ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিচ্ছি।’
এখন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কি পরিমাণ ব্যাটারি বা রিকশা ডাম্পিংয়ে দিয়েছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত প্রায় লাখ খানেক ডাম্পিং করেছি। এই অবস্থাই চলছে আরকি, ইঁদুর বেড়াল খেলা।'
‘এগুলো দেখাতো আর পুলিশের কাজ না’
উৎপাদকদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন-জানতে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা এসব অটোরিকশা তৈরি করছের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ কি পুলিশের কাজ? এদের পারমিশন (অনুমতি) আছে কিনা? এরা বৈধ কিনা? লাইসেন্স ঠিক আছে কিনা? এগুলো দেখাতো আর পুলিশের কাজ না। এই কাজগুলো যাদের; তাদেরই এই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তাদের কাছে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তাদের কথা বলার অনুমতি নেই বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা তারা বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বলতে পারবেন। আমাদের কথা বলা নিষেধ আছে। যেকোন বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে গেলে অনুমতি লাগবে।’
দেশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে অন্যতম রাজধানী ঢাকা। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জনশুমারির প্রতিবেদন লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই শহর ও পাশ্ববর্তী জেলায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৫ জন। আর ২০১৪ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোর বস্তি শুমারি অনুযায়ী, দেশে বস্তিবাসীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২২ লাখ এবং ঢাকা শহরের দুই সিটি করপোরেশনে মোট ৩ হাজার ৩৯৪টি বস্তিতে মোট ঘরের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজারের মতো। এ হিসাব অনুযায়ী, সাড়ে ৬ লাখের মতো লোক এসব বস্তিতে বসবাস করেন, যা গত ১০ বছরের ব্যবধানে বহুগুণ বেড়েছে।
রাজধানীর বস্তিতে বসবাসকারী পুরুষের অধিকাংশের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম এই রিকশা। ফলে বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের হিসেবের মতই অন্ধকারেই থেকে যায় রাজধানীতে চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার সঠিক পরিসংখ্যানও।
সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কত, এর সঠিক কোনো তথ্য নেই কোনো সংস্থার কাছে।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় আনুমানিক প্রায় ৪ লাখেরও অধিক অবৈধ রিকশা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায়ও প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ অবৈধ রিকশা রয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে।
এছাড়াও রাজধানীর সড়কে প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন নতুন রিকশার চলাচল। এর মধ্যে বড় একটি সংখ্যা ব্যাটারিচালিত। শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ফলে মালিক পক্ষও রিকশায় যুক্ত করছেন ব্যাটারি। সেই সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও। গেল (৭ নভেম্বর) বৃহস্পতিবারও রাজধানীর ডেমরা বামৈল এলাকায় অটোরিকশার ধাক্কায় ইউসুফ (৬৫) নামে এক ব্যক্তি প্রাণ হারান।
সমাধান কোন পথে, কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসনে প্রশ্নে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান কথা বলেন বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে। তিনি বলেন, 'পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মামলা দিচ্ছে, কিন্তু এটা সমাধান নয়। আমাদের ঢাকা শহরের আশেপাশে অসংখ্য লোকাল গ্যারেজ রয়েছে। এই লোকাল গ্যারেজগুলো থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদন যদি বন্ধ করা না হয় তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
‘গ্যারেজগুলো থেকে অবৈধভাবে উৎপাদন করা হয়, সেজন্য গ্যারেজে অভিযান চালাতে হবে। ব্যাটারিচালিত রিকশার যে সরঞ্জামগুলো রয়েছে সেগুলোর আমদানি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। আমদানি নিয়ন্ত্রণে না আনলে শুধু সড়ক থেকে রিকশা ধরে লাভ নেই’-বলেন এই যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ।
সংখ্যায় অটোরিকশার পরিমাণ এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা এর উপর নির্ভরশীল, এটিও একটি জটিল সমস্যায় পরিণত হয়েছে-মনে করেন ড. মো. হাদিউজ্জামান।
অটোরিকশা নিয়ে এই সমস্যা রাতারাতি কমানো যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে সরকারের অতি দ্রুত কিছু নীতিমালা তৈরি করা উচিত। প্রথমত, সড়কের সক্ষমতা কতটুকু হবে এবং তার বিপরীতে কি পরিমাণ এধরনের রিকশাকে চলার অনুমতি প্রদান করা হবে-সেটির বিজ্ঞানসম্মত হিসাব-নিকাশ থাকতে হবে। সড়কে তো শুধু ব্যাটারি চালিত রিকশা চলবে না, প্রাইভেটকার থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। সেজন্য সড়কে কি পরিমাণ অটোরিকশা চলবে এই ধরনের নীতিমালা তৈরি করা অতি গুরুত্বপূর্ণ।’
এই সংকট সৃষ্টির পেছনে সরকারের সংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠানের দায় দেখন ড. হাদিউজ্জামান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বি আর টি এ অনুমোদন না দেওয়ার কারণে এখন যে যার মতো করে গ্যারেজ তৈরি করছে। সরকারের উচিত একটা স্ট্যান্ডার্ড ডেভলপমেন্ট করা। অটোরিকশাগুলো যেভাবে তৈরি করা হচ্ছে সেখানে তারা বিজ্ঞানসম্মত কাঠামো থেকে অনেক দূরে আছে। এটার কাঠামোগত দুর্বলতা, ডাম্পিংসহ অনেক ধরনের দুর্বলতা রয়েছে, যার ফলে দুর্ঘটনাও ঘটছে। সে জন্য টেকনিক্যাল ইন্সট্রাকশন তৈরি করতে হবে।’
জীবন-জীবিকা নির্বাহে ঢাকা শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করা ৮ লাখ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার চালকদের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি। বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এই পরিচালক বলেন, ‘পরিবারের ৪ জন ধরলেও প্রায় ৩২ লাখ মানুষ এই রিকশার জীবিকার ওপর নির্ভরশীল। পলিসির দুর্বলতা থেকেই যাচ্ছে। সেজন্য অত্যধিক মোটরসাইকেল বেড়ে যাওয়ার পর এখন আর নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ব্যাটারি চালিত রিকশার একই অবস্থা।’
সমন্বিত পদক্ষেপের অভাবই পরিবহণ খাতে এই বিশৃঙ্খলার কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অটোরিকশা সরঞ্জাম উৎপাদন করা এখন এক ধরনের শিল্প হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ব্যাপার আছে। যে মোটর ও ব্যাটারিগুলো বাহির থেকে দেশে আসছে, সেটা কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই আসছে-সেই প্রশ্ন তুলছেন তারা।
‘বিআরটিএ যদিও বলে তারা এটির অনুমোদন দেয়নি এবং এগুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করে না, কিন্তু আমি বলবো বিআরটিএ হচ্ছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। ট্রাফিক পুলিশ সড়কে নামার পর অটোরিকশার লাইসেন্স আছে কিনা, বৈধতা আছে কিনা এগুলো তারা চেক করছে। কিন্তু এটার উৎপাদন যেখান থেকে হচ্ছে, যেখানে আমদানি হচ্ছে সেই জায়গায় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ যে সকল স্টেক হোল্ডার রয়েছে তাদের পার্টিসিপেশন থাকতে হবে। কিন্তু এ জায়গায় যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। সেজন্য সংখ্যাগতভাবে এই অটোরিকশা ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে। এটা ঠেকাতে হলে মূল জায়গা থেকে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুধু সড়ক থেকে সরালে হবে না’-যোগ করেন হাদিউজ্জামান।