ছাগলের চামড়ার দাম নেই, পড়ে আছে সড়ক-খালপাড়ে

  • জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

কয়েকবছর ধরে চামড়া নিয়ে তেলেসমাতির ঘটনায় এবার কোরবানি পশুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু তারপরেও চামড়া নিয়ে সংকট কাটেনি। বাজারে ছাগলের চামড়ার দাম না পেয়ে কেউ সড়কের পাশে, আবার কেউ খালের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছে।

এবারের ঈদে পশু জবাইয়ের পর পাইকারি বাজার পোস্তা ও সাইন্সল্যাব এলাকায় ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা। আর গরুর চামড়ার মান ও সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৮ জুন) দুপুরে রামপুরা খালের বনশ্রী অংশে সড়কের পাশে খাল পাড়ে কয়েকটি স্থানে শত শত পিস ছাগলের চামড়া ফেলে দেওয়া হয়েছে।

সড়কের পাশে দোকানদার ও এলাকাবাসী জানান, সোমবার কোরবানি শেষে বাসা বাড়ি থেকে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গরুর চামড়া সংগ্রহ করলেও ছাগলের চামড়া কেউ সংগ্রহ করেনি। ফলে যারা ছাগল কোরবানি দিয়েছে তারা বাধ্য হয়ে রামপুরা খালে ফেলে দিয়েছে। চামড়া দাম না পেয়ে একদিকে কাঁচা চামড়ার গন্ধে জনজীবন অতিষ্ঠ হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে।

বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম যখন হু হু করে বাড়ছে, তখন কমছে কোরবানির গরু-ছাগলের চামড়ার দাম। গত বছরের তুলনায় এবার পাঁচ টাকা বাড়ানো হলেও পরিসংখ্যান বলছে, গেল এক দশকে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম কমেছে ৩০ টাকা। একদিকে সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করছে, অন্যদিকে উপযুক্ত দাম না পেয়ে বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুচরা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা রাজু হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, সোমবার কোরবানি শেষে খালে অনেকে ছাগলের চামড়া ফেলে দিয়েছে। আবার আজকে সকালেও এখানে ফেলে রেখে চলে গেছে। সড়কের পাশে চামড়া এই ভাবে ফেলে রাখায় এই রাস্তা দিয়ে হাটা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সড়কের পাশে মোটর সাইকেলের গ্যারেজ মালিক জুয়েল বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুনেছি ছাগলের চামড়া নাকি কেউ কিনছেনা। তাই গতকাল বাসা বাড়ি থেকে তাই কেউ ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করেনি। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে রামপুরা খালে চামড়া ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এত কম টাকায় চামড়া বিক্রি করার চেয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা ভালো। চামড়ার যে মূল্য হয়, সেই পরিমাণ টাকা দান করে দেব। এ ছাড়া চামড়া কেউ কিনতেও চাইছে না। এর আগে যে চামড়ার কদর ছিল, এখন আর সেই কদর নেই।

ছাগলের চামড়া কেন বিক্রি হয় না এই বিষয়ে বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়ারের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে, সোমবার ঈদের দিনে রাজধানীতে যেসব মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গরুর চামড়ার সঙ্গে ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে এসেছেন তারাও বিপাকে পড়েছেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা রাজধানীর সাইন্সল্যাব এলাকায় চামড়া অনেকেই চামড়া বিক্রি করতে পারে নাই। আবার কেউ কেউ প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ১০ টাকা করে বিক্রি করেছে।