ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না রুস্তমের

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২.কম,নরসিংদী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফুটবলার হবে এটা দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। শুধু নামে নয়, একজন তারকা ফুটবলার হবে এমন স্বপ্ন দেখেছিল সেই ছোটবেলা থেকেই। আর বাবা হয়ে তার খেলা দেখবো এমন মনোবাসনা পুষে ছিলাম মনে। আর তাই আমি বাবা হয়ে তাকে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিতাম। তাকে আশা দিয়েছিলাম এসএসসি পাশের পর কলেজে ভর্তি করে দেব। আর তখন ভালোমানের একটি ফুটবল ক্লাবে ভর্তি করিয়ে দিব। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রুস্তমের বাবা মাইন উদ্দিন।

রুস্তম আলী নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দি এলাকার মাইন উদ্দিনের ছেলে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর-২ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় নরসিংদীর শিক্ষার্থী মো. রুস্তম।

বাবা মাইন উদ্দিন আরও বলেন, ১৮ জুলাই সহপাঠীদের সাথে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে রাবার বুলেটে আহত হয় রুস্তম। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে আন্দোলনে যেতে বারণ করা হয়। এসময় রুস্তম পরিবারকে জানায়, ‘প্রতিটি মা-বাবা যদি তাদের সন্তানদের আন্দোলনে যেতে না দেয় তাহলে আন্দোলনটা করবে কে? মা-বাবার কাছে সব সন্তানইতো প্রিয়।

তোমরা যদি আমাকে আন্দোলনে যেতে বাধা দাও তবে আন্দোলন করবে কে? ছেলের এমন উত্তরে আমরা অনেকটাই লজ্জিত হয়ে গেলাম। পরদিন ১৯ জুলাই দুপুর ২টার দিকে সহপাঠীরা মোবাইল করে জানায় রুস্তম গলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর আল হেলাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় রুস্তম।

মিরপুর-২ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রস্তমের জানাজার কথা ছিল। কিন্তু তাতে বাধা দেওয়া হয়। ফলে ঢাকায় তার জানাজা পড়া সম্ভব হয়নি। পরে সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দিতে আনা হয়। সেখানে ২০ জুলাই পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

পিরিজকান্দিতে নিহত রুস্তমের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল। এ সময় তিনি রুস্তমের বাবা মাইন উদ্দিনের হাতে অনুদানের অর্থ তুলে দেন।

ছাত্র আন্দোলনে নিহত রুস্তমের বিষয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, হাজারো ছাত্র-জনতা হত্যার পর শেখ হাসিনা ৪৫ মিনিটের বেশি বাংলাদেশে থাকতে পারেনি। শহীদ রুস্তমসহ সব হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবেনা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের অবদান মূল্যায়ন করে শেষ করার মতো নয়।