‘যদি দেশে থাকতে চাও মুখ বন্ধ করে চুপচাপ থাকো, নয়তো ভাগো’

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র করছেন উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেছেন, ‘আবারও যেসব দোসর ষড়যন্ত্র করছে তাদের হুঁশিয়ারি করে বলে দিতে চাই, যদি থাকতে চাও মুখ বন্ধ করে চুপচাপ থাকো, নয়তো দেশ থেকে ভাগো। যদি আবারও কোনো ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয় তাহলে বাংলাদেশ, বীর চট্টলা চুপ থাকবে না। এই চট্টলা থেকে আবারও আওয়াজ যাবে। আবারও যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে।’

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর সিআরবিতে সাংস্কৃতিক সংগঠন বিকিরণের উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই স্মৃতিচারণ ও শহীদদের স্মরণে সাংস্কৃতিক জলসা অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন খান তালাত মাহমুদ রাফি।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসা এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক ভাই জুলাই বিপ্লবে আহত হয়েছেন। আমরা প্রেশার গ্রুপ হয়ে সবসময় কথা বলতে চাই। আমি প্রশ্ন করতে চাই-সরকার এখনো কেন আমার আহত ভাইদের চিকিৎসা নিশ্চিত করেনি। কেন আমার আহত ভাইয়েরা চোখের, পায়ের, হাতের যন্ত্রণায় হাসপাতালে এবং ঘরের বেড়ে কাতরাচ্ছেন।’

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার সমালোচনা করেন খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নাকি দেশের বাইরে যান চিকিৎসার জন্য। আমি বলতে চাই-বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের মতো চিকিৎসা-ব্যবস্থা করতে হবে। আর নয়তো আপনি দেশের বাইরে যান, তাহলে আপনার আর দেশে ফেরার দরকার নেই। ঢাকায় যে চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য আমাদের যেতে হয়, তা চট্টলায়ও থাকতে হবে।’

এখন থেকে দেশের কৌশল নির্ধারণ আর গণভবন থেকে হতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন রাফি। বলেন, ‘আগে দেশের স্ট্র্যাটেজি তৈরি হতো গণভবন থেকে।আজকের পর থেকে তা হবে বাংলাদেশের প্রতিটি জনগণ থেকে। আমরা গণভবনের সেই স্ট্র্যাটেজি মেকিং আর চাই না।‘

শেখ হাসিনার দেশ ছাড়া নিয়েও কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক। বলেন, ‘ছাত্র-জনতা পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছিল সেই সাহসী পদক্ষেপ। এক পর্যায়ে সারাদেশে পুলিশ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের বুলেট অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল ছাত্র-জনতার সামনে। যখন বুঝে গেছে বুলেট দিয়ে আর কাজ হবে না তখন (শেখ হাসিনা) চলে গেছেন।’

প্রভু চলে গেলেও দোসররা রয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন রাফি। বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে তাদের আবির্ভাব ঘটছে তাঁদের। কখনো অনলাইন যোদ্ধা-কখনো গুঁজব লীগ হয়ে তারা ফিরে আসছে। আবারও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চাইলে আপনারা আর বাংলার মাটিতে থাকতে পারবেন না। সেজন্য যেসব আওয়ামী সন্ত্রাসী ঘুরে বেড়াচ্ছে খোলা হাওয়ায় তাদের গ্রেফতার করতে হবে।’

সংকটময় সময়ে ঐক্যবদ্ধ হলেও পুনর্গঠনের সময়ে আবারও বিভাজন দেখা যায় উল্লেখ করে রাফি বলেন, ‘ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় সংকট সময়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। কিন্তু দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব যখন আমাদের কাঁধে পড়ে তখন আমাদের মধ্যে বিভাজন দেখা যায়। স্বৈরাচারী সরকার সবসময় বিভাজিত করে আমাদের সব জায়গা থেকে মাইনাস করে দিতে চেয়েছে। একাত্তরের পর বিভাজন দেখা গেছে, ৯০ এর গণঅভ্যাত্থোনের পরও বিভাজন হয়েছে। আমরা ছাত্রসমাজ সিদ্ধান্ত নেব আবারও কি বিভাজিত হবো, নাকি দেশ গঠনে আমরা থাকব। যদি বিভাজিত হই তাহলে পরে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আবারও যুদ্ধ করতে হবে। আমরা চাই না আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম রক্ত ঝরাক।’