সংস্কারের প্রতিজ্ঞা করে দায়িত্ব নিয়েছি: সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
আমরা ক্ষমতা নেইনি, দায়িত্ব নিয়েছি এবং প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছি যে, আমাদের এবার কিছু সংস্কার করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের পরিবার ও আহত ছাত্র-জনতার দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সন্তান ও অভিভাবক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা আমাদের পায়ের তলার মাটিটা দিল, পতাকাটা দিলো আমরা কিন্তু তাদের সেই সম্মানটা দিতে পারিনি সেদিন। সেখান থেকে আমাদের শুরু হলো আশা আকাঙ্ক্ষা, আমাদের স্বাধীন দেশ, সাম্যের দেশ, গণতন্ত্রের দেশ কেমন হবে। ৫৩ বছর গেলো, গণতন্ত্র শুধু পিছাতেই থাকলো। কোনোদিনও আমাদের হাতে এসে পৌঁছালো না গণতন্ত্র। যতবার আমরা ছোবল দিয়ে ধরতে গেছি, ততবারই হাত ফসকে বেরিয়ে গেলো।
শারমিন মুরশিদ বলেন, এরশাদবিরোধী আন্দোলন সহ যত আন্দোলনই আমরা বলি না কেন এক মুহুর্তের জন্য আমাদের গণতন্ত্রকে দেখতে পাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জায়গা থেকে। ক্ষণিকের জন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, ক্ষমতায় আসা। যারায় ক্ষমতায় এসেছে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো টুকরো টুকরো করে দিয়েছেন। কারণ তাদের ইচ্ছে, তারা ক্ষমতায় এসেছেন, ক্ষমতা থেকে যাবেন না। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর এই আচরণ আমাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কঠিন করে দেয়। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করতে আমরা পারি না।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, আবার আন্দোলন, আবার ক্ষণিকের নির্বাচনে সবাই গ্রহণ করে আবার স্বৈরাচারী মনোভাব, ক্ষমতায় এসেছি আর ছাড়বো না। ২০০৮ একই ঘটনা ঘটলো। ১৫ বছর একটির পর একটি ন্যাক্কারজনক, অত্যন্ত অশোভন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল করলো দেশটিকে। ৭১ আমি দেখেছিলাম কিশোরী হিসেবে, ২০২৪ যখন আমি দেখি, আমার একাত্তরের মুকিযোদ্ধাদের পুনর্জন্ম দেখি।
৭১ এ আমরা যা পাইনি আবার তোমরা সেই স্বপ্নটা জাগিয়ে তুললে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্যায়ে জর্জরিত একটা সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঝাপিয়ে পড়লে। তারপর যা ঘটলো কোনও কবিতাও তা ব্যাখ্যা করতে পারবে না। তোমাদের সাহস, দুঃসাহস আমাদের নির্বাক করেছে। সেদিন আমি বুঝতে পেরেছি, যে মানুষ মরণ ভয় পায় না, যে তরুণ মৃত্যু ভয় পায় না সেই তরুনকে সারা বিশ্ব ভয় পাবে।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রথম দিন থেকেই বলছি, আমরা ক্ষমতা নেইনি, আমরা ক্ষমতায় বসিনি, আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এবং এই দায়িত্বটা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছি যে আমাদের এবার কিছু সংস্কার করতে হবে। এত বছর ধরে যে ধারায় আমরা চলেছি সে ধারায় তো আর চলা যাবে না।
তোমরা বলো রাষ্ট্র মেরামত, আমরা সেটাকে বুকে ধারণ করে ফেলেছি উল্লেখ করে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, মেরামত করতে হবে, সংস্কার করতে হবে, পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচন, এই একটা জায়গায় যদি আমরা সবাই দাঁড়ায়, একটু যদি তলিয়ে দেখি নির্বাচন ব্যবস্থাটা কেন ভেঙ্গে গেলো, সর্বোপরি প্রশাসন ব্যবস্থাটাই ভেঙ্গে গেছে সেখানে দাঁড়িয়ে যদি দেখি তিন মাসে অনেক বড় সংস্কার করে দিবোক্স তোমরাও আমাকে বিশ্বাস করবে না, আমরাও পারবো না করতে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম ক্যাবিনেটের মিটিংয়ে প্রথম কথায় হলো যে বাচ্চারা আত্মত্যাগ দিয়ে এই দেশকে নতুন আলোর পথ করে দিলো তাদের প্রতি আমাদের প্রথন দায়িত্ব। তাদের সুস্থ করা, পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, মূল ধারায় নিয়ে আসা এটা আমাদের প্রথম দায়িত্ব। বলাটা সহজ কিন্তু করতে গিয়ে এটা মোটেই সহজ ছিলো না। প্রথম দেড় মাসে আমরা তিন মন্ত্রণালয় তালিকা করেছি, আমরা জানি সেটা অসম্পূর্ণ। সেটা ওয়েবসাইটে দিয়েছি, সেখানেও সীমাবদ্ধতা আছে।