চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শুরু, তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৭ শতাংশ। এটিই চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার সাথে চুয়াডাঙ্গায় শীত পড়তে শুরু করেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা কমে দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর আজ শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ আরও নীচে নেমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যায়, সকালে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়েছেন দিনমজুর ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। তবে এই ঠাণ্ডার কারণে কাঙ্খিত কাজ পাচ্ছেন না তারা। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গণপরিবহন চললেও ছিল না তেমন যাত্রীর চাপ। তবে স্বস্তির খবর হলো রাতে ঘন কুয়াশা থাকলেও সকালে বেলা বাড়ার সাথে সূর্যের দেখা মিলেছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রিতে। এর মধ্যদিয়ে চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলো। তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ অব্যহত থাকবে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। তবে ঘুন কুয়াশা অব্যহত থাকতে পারে।
এদিকে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা। খুব প্রয়োজন না হলে মানুষ সকালে বাইরে বের হচ্ছেন না। অপেক্ষা করছেন রোদ ওঠার। অনেকে আবার জীবিকার তাগিদে তীব্র ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে বের হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর একটি ইটভাটার শ্রমিক সানোয়ার হোসেন বলেন, 'প্রতিদিন ভোররাতে ইটভাটায় কাজে যেতে হয়। সেখানে আবার ইট তৈরি করতে কাদা-পানির কাজ করতে হয়। শীত তো লাগেই, কিন্তু কিছু করার নেই। কাজে না গেলে সংসার চলবে না।
এদিকে, তীব্র শীতে চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে বৃদ্ধ ও শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগ। সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিচ্ছেন এসব রোগী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তারা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।