টাঙ্গাইলের বাসাইলে দুই বছরের শিশু সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বাসাইল পূর্ব মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
নিহত শিশু মোহাম্মদ আলী (২) বাসাইল পূর্ব মধ্যপাড়া এলাকার ইব্রাহিম আলীর ছেলে।
সাবেক প্যানেল মেয়র সাজ্জাদ হোসেন আলাল ও স্থানীয়রা জানান, বাসাইল পৌর এলাকার পূর্ব মধ্যপাড়া গ্রামের ইব্রাহিমের দু্ই বছরের শিশু ছেলে মোহাম্মদ আলীকে রাত ৩টার পর ঘরে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশেপাশের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ভোরে বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা হিরা বেগম স্বীকার করে রাগের বশে শিশুটিকে রাত ৩ টার দিকে পানিতে ফেলে দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
হিরা বেগমের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, এ সময় আমার হিতাহিত কোনো জ্ঞান ছিল না। কিভাবে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারিনি।
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কচুরিপানার ডাটা শুকিয়ে তা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নান্দনিক ফুলদানি, ফুলের টব, মাদুর, পাপোশ, ঝুড়িসহ দৈনন্দিন ব্যবহারের নানা সামগ্রী। এই কাজে নিয়োজিত ৩০ জন নারীকে আলোর মুখ দেখিয়েছে বগুড়ার সোনাতলার আলোর প্রদীপ যুব সংগঠন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ঘর সাজানোর আকর্ষণীয় রকমারি সামগ্রী তৈরির কাজে নিয়োজিত ৩০ জন নারীর মধ্যে রয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা প্রত্যেকেই মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বাড়তি আয় করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কাবিলপুর। এই গ্রামের যুবক মেহেরুল ইসলাম ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে মাস্টার্স শেষ করে আবার এলএলবি পাস করেছেন। চাকরি কিংবা আইন পেশায় না জড়িয়ে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। ২০০৮ সালে তার নিজ হাতে গড়ে তোলা আলোর প্রদীপ যুব সংগঠনের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তা তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। সেই অনুযায়ী বগুড়া শহরের নারুলী এলাকার স্বপ্নডানা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ ৩০ জন নারীকে যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন তিনি।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা কাবিলপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালে জন্মানো কচুরিপানার ডাটা সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো রোদে শুকানোর পর দড়িতে পরিণত হয়। সেই দড়ি লোহার তৈরি ফ্রেমের সঙ্গে গেঁথে তৈরি করা হয় বিভিন্ন সামগ্রী। পরে লোহার ফ্রেম থেকে বের করে সৌন্দর্য বাড়াতে বার্নিশ করা হয়।
আলোর প্রদীপ যুব সংগঠনে কাজ করা নারী ইলমা বেগম, দুলালী বেগম, স্কুল ছাত্রী মমিতা আক্তার, আঁখি আক্তার বলেন, আমরা অবসর সময় বাড়িতে বসে না থেকে এখানে কাজ করে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা উপার্জন করে থাকি। অনেকে আরও বেশি কাজ করে টাকা আয় করেন। যা দিয়ে কারো লেখাপড়ার ব্যয় আবার কেউ ব্যক্তিগত শখ পূরণের পাশাপাশি সংসারের প্রয়োজনে ব্যয় করেন। একেকটি সামগ্রী তৈরিতে প্রকার ভেদে ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেয়ে থাকেন তারা।
কচুরিপানা থেকে উৎপাদিত প্রতিটি ফুলের টব ২০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, ফুলদানি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মাদুর ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা, গ্লাসপট ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, ট্রে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, ফলঝুড়ি ২০০ থেকে ১ হাজার টাকা, ডিম রাখার পাত্র ৬০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, পাপোশ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, আয়নার ফ্রেম ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ডাইনিং টেবিলের ম্যাট ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলোর প্রদীপ যুব সংগঠনের পরিচালক মেহেরুল ইসলাম বলেন, সংগঠনটি অনেক পুরাতন হলেও কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কাজ শুরু করা হয় এক বছর আগে থেকে। ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় শপিংমলে এই পণ্য গুলো সরবারাহ করা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশের বাইরেও পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট কিছু দুর্বৃত্ত আমাদের সংগঠনে হামলা করে কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা চার লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ৩০০ পিস নানা ধরনের সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। এই সামগ্রীগুলো ঢাকায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার এই সংগঠনের মাধ্যমে কচুরিপানা দিয়ে কাজ করে ৩০ জন নারীকে স্বাবলম্বী করতে পেরেছি।
যুব উন্নয়ন অধিদফতর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ( প্রশাসন) সেলিম উদ্দিন বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় বগুড়ার সোনাতলায় আলোর প্রদীপ যুব সংগঠনের মাধ্যমে ৩০ জন বেকার যুব নারীকে হস্তশিল্প বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের পর তাদের নিজেদের প্রচেষ্টায় কচুরিপানা ও হোগলা পাতা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন তৈজসপত্র তৈরি করছেন। তারা সমাজের তথা দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তাদের প্রয়োজনে আমরা সরকারিভাবে ঋণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশ এবং ডেনমার্ক সরকারের মধ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) একটি সংশোধিত অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির আওতায় ডেনমার্ক সরকার বাংলাদেশ সরকারকে অনুদান হিসাবে প্রায় ৫৯ কোটি টাকার সমতুল্য ৩৫.০০ মিলিয়ন ডেনিশ ক্রোন (ডিকেকে) প্রদান করবে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ইআরডি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং ডেনমার্ক সরকারের পক্ষে ডেনমার্কের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ডেনমার্ক দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরিবর্তিত পটভূমিতে উন্নয়ন কার্যক্রমসহ মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং সুশাসন কায়েমের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের চলমান সংস্কার কর্মসূচিতে সহায়তার জন্য ডেনমার্ক সরকার এ অনুদান প্রদান করবে।
বাংলাদেশ ও ডেনমাকের্র মধ্যে দীর্ঘ ৫২ বছরের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। এ দীর্ঘ সময়ে ডেনমার্ক বাংলাদেশকে কৃষি, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, যোগাযোগ মাধ্যম, জলবায়ু পরিবর্তন, সুশাসন ও মানবাধিকার খাতে সহায়তা প্রদান করে আসছে। এছাড়াও ডেনমার্ক সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যিক সম্পর্কও বিদ্যমান রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
আনুমানিক ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা মূল্যমানের ২৫২ বোতল ফেনসিডিলসহ রাজধানীর দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা হতে ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)। একই সঙ্গে মাদক বহনে ব্যবহৃত ট্রাকটিকে জব্দ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০) এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনি. সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তাপস কর্মকার জানান, গতকাল (১২ ডিসেম্বর) র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কিছু মাদক ব্যবসায়ী দেশের পশ্চিমাঞ্চল হতে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যের চালান নিয়ে ট্রাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। এই সংবাদের পর র্যাব-১০ এর আভিযানিক দলটি তাৎক্ষণিক ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ধলেশ্বরী টোল প্লাজা এলাকায় অবস্থান করে। একই সঙ্গে একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে এবং সন্দেহজনক গাড়ী তল্লাশি করতে থাকে।
তল্লাশির একপর্যায়ে একই তারিখ রাত আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ট্রাকটি র্যাবের চেকপোস্টের সামনে পৌঁছানো মাত্র কর্তব্যরত র্যাব সদস্যরা ট্রাকটিকে সিগন্যাল দিলে ট্রাকের চালক ট্রাকটি থামায়। পরে র্যাব সদস্যরা ট্রাকে থাকা চালকসহ অন্যদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে, তাদের ট্রাকে ফেনসিডিল আছে।
পরে কর্তব্যরত র্যাব সদস্যরা বিধি মোতাবেক তল্লাশি করে ট্রাকের কেবিনের ভিতরে সিটের পিছন হতে ১টি চটের বস্তার ভিতরে আনুমানিক ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা মূল্যমানের ২৫২ বোতল ফেনসিডিলসহ ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধ পথে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় বড় বোনের চোখের সামনে ছোট বোন নাছিমা আক্তার (২৫) মৃত্যু হয়েছে। একই সময় বড় বোন পুষ্প গুরুতর আহত হয়।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কমলা শীষ রায় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর-আগে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার রামগতি উপজেলার জমিদার হাট বাজার এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনায় শিকার হন দুই-বোন।
তারা উপজেলার চর ঠিকা গ্রামের মৃত নজরু ইসলামের মেয়ে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সকালে দুই-বোন বাবার বাড়ি থেকে চাউল কিনার জন্য স্থানীয় জমিদার হাট বাজারে অটোরিকশাযোগে যাচ্ছিলেন। জমিদার হাট বাজারে পৌঁছার আগেই বিপরীত দিক থেকে ছেড়ে আসা একটি চলন্ত ট্রাক তাদের অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। গুরুতর আহত হয় দুই-বোন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছোটবোন নাছিমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কমলা শীষ রায় জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুই নারীকে আনা হয়। আমরা একজনকে মৃত পেয়েছি। অন্যজনকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।