কিশোরগঞ্জে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জ জেলায় ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। জেলার হোসেনপুর উপজেলায় শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) জনস্বাস্থ্য ও ইনফরম্যাটিকস বিভাগের শিক্ষক ও গবেষকরা এক গবেষণা পরিচালনা করেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিএসএমএমইউতে অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করার সময় গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তখন গবেষকরা বৃহৎ পরিসরে ক্যান্সার রেজিস্ট্রেশনের ওপর জোর দেন। তাদের মতে, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সহায়তা করবে।
হোসেনপুরে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি লাখে ৫৩ জন নতুন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ল্যারিঞ্জিয়াল ক্যান্সার এবং মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি। এখানে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশই ক্যান্সারজনিত।
এই উদ্যোগের অধীনে, গবেষকরা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে হোসেনপুরে ক্যান্সার রেজিস্ট্রেশন পরিচালনা করেন। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারির মধ্যে ১৩ হাজার ৪১১টি পরিবারের ওপর ফলো-আপ রেজিস্ট্রেশন পরিচালনা করা হয়।
গবেষণা অনুযায়ী, হোসেনপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে ৩৮ ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৯৩ শতাংশ ক্যান্সার রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে, শিশুদের মধ্যেও কিছু ক্যান্সার রোগী পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, ৭ শতাংশের বেশি ক্যান্সার রোগী কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা নেন না।
পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ল্যারিঞ্জিয়াল (১৩ শতাংশ), পাকস্থলী (১০.৪ শতাংশ), ফুসফুস (৮.৭ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৭ শতাংশ) এবং খাদ্যনালীর (৬.১ শতাংশ) ক্যান্সার। মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় স্তন (৩৬.৪ শতাংশ), জরায়ুমুখ (১১.১ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (১০.১ শতাংশ), থাইরয়েড (৭.১ শতাংশ) এবং ডিম্বাশয়ের (৫.১ শতাংশ) ক্যান্সার।
বিএসএমএমইউর সহযোগী অধ্যাপক খালেকুজ্জামান তার মূল প্রবন্ধে বলেন, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের ২ লাখ ১ হাজার ৬৬৮ জনকে নিয়ে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এতে মোট ২১৪ জন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হন। এটি প্রতি লাখে ১০৬ জন ক্যান্সার রোগীর হার নির্দেশ করে।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করার সময়, খালেকুজ্জামান আরও উল্লেখ করেন যে ১৭ শতাংশ ক্যান্সার রোগীর উচ্চ রক্তচাপ, ১১ শতাংশের ডায়াবেটিস, ৬ শতাংশের হৃদরোগ এবং ৩ শতাংশের কিডনি রোগ আছে। ২ শতাংশ রোগীর স্ট্রোকের এবং ৭৬ শতাংশ পুরুষ ক্যান্সার রোগীর ধূমপানের ইতিহাস রয়েছে।