কুলগাঁও-বাকলিয়ায় এবছরেই বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে চান মেয়র শাহাদাত

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে চলতি বছরের মধ্যেই কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল ও বাকলিয়ায় মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। নগরীর গণপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের গণপরিবহন খাতের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড না থাকায় বাস-ট্রাকগুলো অনিরাপদভাবে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। অনেক সময় এজন্য মামলার কারণে হয়রানি হয় গণপরিবহন সংশ্লিষ্টদের। এজন্য দ্রুত বাস টার্মিনাল ও বাস স্ট্যান্ড নির্মাণ প্রয়োজন।

তারা বলেন, চট্টগ্রাম নগরকে যাত্রীসাধারণ, ব্যবসায়ী পর্যটকদের জন্য টার্মিনাল এর সুবিধা প্রদান বৃদ্ধি করতে পারলেই এই নগর বাণিজ্যিক নগর হিসাবে স্বীকৃতির পাশাপাশি সকল ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হবে। বন্দর ব্যবহারকারীদের তথা আমদানি-রপ্তানিকারকদের আগমন-নির্গমণ সুগম হবে। ব্যবসায় গতি আসবে, প্রত্যহ যাত্রী পরিবহন বৃদ্ধি পাবে। নগর প্রাণবন্ত হবে, ব্যবসায়িক লেনদেন বৃদ্ধি পাবে, কর্মচঞ্চলতা বৃদ্ধি পাবে। টার্মিনাল ব্যবহারকারী গনপরিবহন চলাচল বৃদ্ধি হলে কর্পোরেশন এর আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

বিজ্ঞাপন

গণপরিবহণ মালিক নেতারা বলেন, নগরে চলাচলরত যানবাহনের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় স্থানে স্থানে পার্কিং এরিয়া ঘোষিত কিংবা সুনির্দিষ্ট করণের অভাবে যত্রতত্র নো-পার্কিং এর অপরাধে উচ্চহারে ফাইন/পেনাল্টি আরোপ ও হয়রানি বন্ধ করা ন্যায় বিচারের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন। অনতিবিলম্বে নগরের সকল প্রান্তে/ সড়কে পার্কিং এরিয়া এবং নো-পার্কিং এরিয়া নির্দিষ্ট করণ, পার্কিং/নো-পার্কিং এর বিভাজন সৃষ্টি না করে এবং এ বিভাজনকে সকল পরিবহন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে মামলা প্রদান, জরিমানা কোন ভাবেই ন্যায় সঙ্গত নহে। বৈষম্য সৃষ্টি বা দাপট প্রদর্শন অন্যায়ের সামিল। জরিমানা, ফাইন পেনাল্টির বৈষম্য সৃষ্টি করে ঢাকা মেট্রো ও চট্টগ্রাম মেট্টোকে আলাদা করা হয়েছে, চট্টগ্রামে চলাচলরত যানবাহনের উপর আরোপিত জরিমানা ঢাকায় চলাচলরত যানবাহনের দ্বিগুন, কেন কি কারনে এই বৈষম্য চট্টগ্রাম মেট্টো আরোপ করে মালিকদের বিড়ম্বিত করছে তা আমাদের জানা নেই। এই বৈষম্য অচিরেই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

জবাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর যানজট নিরসনে চলতি বছরের মধ্যেই কুলগাঁওতে বাস টার্মিনাল ও বাকলিয়ায় মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করব ইনশাল্লাহ। আমি কথা চাই না, কাজ চাই। আমি চাই যানজট নিরসণ হোক, জনগণ স্বস্তিতে চলাচল করুক। এজন্য কুলগাঁও বাস টার্মিনাল করা প্রয়োজন। এছাড়া বাকলিয়াতে মিনি বাস টার্মিনালও নির্মাণ করা যেতে পারে। এটা যখন আমি উদ্বোধন করতে পারবো, তখনই বলব এটি আপনাদের জন্য উপহার।

তিনি স্টেকহোল্ডারদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন পাঁচ-ছয় জন প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে সমন্বয় করে কিভাবে গণপরিবহন খাতের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতা করেন সাথে বাসচালকদেরও মতামত নেওয়ার নির্দেশনা দেন।

এছাড়া, বাকলিয়ায় ছোট পরিসরে একটি মিনি বাস স্ট্যান্ড করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

মেয়র বলেন, বাকলিয়ায় জায়গার স্বল্পতা থাকলেও সেখানে একটি মিনি বাস টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সেখানে বাস চলাচলের উপযোগী করে তুলবো। এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীদের নিয়ে সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেন তিনি। মেয়র আশ্বাস দেন চট্টগ্রামের গণপরিবহন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও পরিকল্পিত করার জন্য তিনি সবধরনের উদ্যোগ নেবেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

তিনি গণপরিবহণে যাতে দখল বাজিণ্যের মত কিছু না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। এবং ঈগল পরিবহণ নিয়ে সৃষ্ট সমস্য সমাধানের আশ্বাস দেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের জানানো অন্যান্য দাবি হলো- চট্টগ্রাম হতে উত্তরগামী তথা ঢাকা অভিমূখী যাত্রীসাধারনের আগমন-নির্গমন ব্যবস্থার পরিকল্পনার আওতায় উত্তরগামী বাস ও অন্যান্য যানবাহনের জন্য আধুনিক, মানসম্মত পরিবেশ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ; চট্টগ্রাম-হাটহাজারী, নাজিরহাট, রামগড়, খাগড়াছড়ি, রাউজান ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলের জন্য আধুনিক মান সম্মত টার্মিনাল নির্মান এর কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ; চট্টগ্রাম-কক্সবাজার অভিমুখী যাত্রীসেবা আরও গনমুখী করার লক্ষ্যে শাহ আমানত ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে পরিকল্পিত টার্মিনাল নির্মান, চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালকে আধুনিকরণ করা; চট্টগ্রাম-কাপ্তাই অভিমূখী বাস চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বর্তমান টার্মিনাল সংস্কার ও বর্ধিতকরণ; মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচলরত যাত্রীবাহী বাস মিনি বাস হিউম্যানহলার সমূহের জন্য এলাকা ভিত্তিক টার্মিনাল/ বে-টার্মিনাল নির্মাণ পার্কিং নির্দিষ্ট করণ।

এসময় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিত সহসভাপতি একরামুল করিম, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’র আহাব্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, মৃনাল চৌধুরী, মো মুছা, অলি আহমেদ, আহসানুল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান , মোঃ জাফর, মোঃ মনসুর রহমান, নুরুল ইসলাম,মোঃ হাবিবুর রহমান,মো জাফর ভি.পি, মো খোরশেদ, মো শাহজাহান, মো রবিউল মোলা,মো হাাান মোঃ মাহবুব, মোঃ জাহাঙ্গীর, কামাল উদ্দিন, টিটু চৌধুরী, আলী চৌধুরী, নাজিমউদ্দিন, মোহাম্মদ আজম, মো রায়হান, মো হারুন,আনোয়ার, মো হোসেন, মো জাহেদ, মো নজরুল,মো মনিরসহ মহানগর উত্তর দক্ষিণের ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।