উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ধুরুং সড়ক, ভোগান্তির সীমা নেই
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভার উত্তর ধুরুং খালের পূর্ব পাড়ের সড়কটি যেন অবহেলার এক করুণ দৃষ্টান্ত। বছরের পর বছর ধরে সংস্কারহীন এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষের কাছে এটি যেন উন্নয়নের বাইরে পড়ে থাকা এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। সড়কটির সংস্কার নেই বললেই চলে।ফলে বর্ষা মৌসুম এলেই শিক্ষার্থী, রোগী ও কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে যায়।
সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ যাতায়াত করলেও সংস্কার অভাবে এটি এখন চলাচলের অযোগ্য। ব্রিক সলিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পায়ে হাঁটাও দুঃসাধ্য, আর রিকশায় চলাচলে যাত্রীরা কষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তার এমন অবস্থায় আমরা খুব কষ্টে আছি। অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিতে গেলে রিকশা বা গাড়ি নড়তে পারে না। বারবার বলেছি, কেউ শুনছে না।
স্থানীয় কৃষক আবদুর রহিম বলেন, আমাদের ফসল বাজারে নিতে বড় সমস্যা হয়। ট্রাক ঢুকতে পারে না। এই সড়ক দ্রুত সংস্কার না হলে ফসল পরিবহন প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে।
জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক অভিভাবক বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো কঠিন হয়ে গেছে। রিকশা উল্টে গেলে চোট লাগে। আমরা এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।
উপজেলার বিবিরহাট থেকে উত্তর ধুরুং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে যাওয়া প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি ফটিকছড়ি সদর থেকে কাঞ্চননগর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের সংযোগ স্থাপন করে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিজেদের উদ্যোগে কয়েকবার সড়কটি সংস্কার করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তা স্থায়ী সমাধান দিতে পারেনি। এবার তারা মানববন্ধনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিবিরহাট বাস স্টেশনে তারা মানববন্ধনের আয়োজন করবেন।
ফটিকছড়ি পৌরসভা বিএনপি নেতা আবদুল মাবুদ মুন্সি বলেন, এ সড়কের দ্রুত সংস্কার শুরু হওয়া উচিত। আমরা আশা করছি, মানববন্ধনের পর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বছরের পর বছর অবহেলায় পড়ে থাকা এ সড়কটি সংস্কার হলে এলাকার মানুষ দৈনন্দিন ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। একইসঙ্গে এটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতি আনবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।