‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরে প্রায় দুই শতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছে দেয়ালিকা উৎসব।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সদর উপজেলা হলরুমে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার।
বিজ্ঞাপন
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সম্রাট খীসা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামশেদ আলম রানা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র মিত্র।
শিক্ষার্থীরা দেয়ালিকার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধসহ আন্দোলন-সংগ্রামের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। জেলা প্রশাসকসহ অতিথিরা দেয়ালিকাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, এই দেয়ালিকা উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা ও সৃজনশীলতার অসাধারণ প্রকাশ ঘটেছে। এটি এখন পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক উপজেলায় এই উৎসব পালন করা হবে।
ময়মনসিংহের ফুলপুরে ড্রাম ট্রাক চাপায় সাইকেল আরোহী আল মুবিন কাউসার (১৩) নামে এক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত আল মুবিন কাউসার উপজেলার গোদারিয়া গ্রামের এহছানুল হকের ছেলে এবং নূরে মদীনা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার নাজেরা শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌরশহরের গোদারিয়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় আল মুবিন কাউসার দুপুরে পৌরশহরের গোদারিয়া এলাকায় সাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে দ্রুতগামির একটি ড্রাম ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এসময় আল মুবিন কাউসার গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাদি বলেন ঘাতক ড্রাম ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। এ বিষয় আইন গত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তিস্তাপাড়ের ৫ জেলার লাখো মানুষ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ -স্লোগানে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কর্মসূচি সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন করেছে আয়োজক কমিটি।
জানা গেছে, ভারতের সিকিমে জন্ম নেয়া তিস্তা নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী। যা নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশেছে এ নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।
উজানে গজলডোবা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত সরকার তিস্তা নদীর পানি একতরফা ব্যবহার করছে। এতে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে বর্ষা শেষ হতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভুমিতে পরিণত হয়ে জীব বৈচিত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আবার বর্ষাকালে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিয়ে নদী ভাঙন ও বন্যার মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ অংশের রংপুর বিভাগ। মূলত, পানির প্রয়োজনে পানি শূন্য আবার যখন প্রয়োজন নেই তখন পানি দিয়েই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে ডুবিয়ে রাখে ভারত। এভাবে তিস্তাকে নিজেদের স্বার্থে এক তরফা শাসন করছে ভারত।
এ কারণে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দীর্ঘ দিন আলোচনা হচ্ছে উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ে। পানির ন্যায্যা হিস্যা দাবি আদায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন সময় নানান কর্মসূচি পালন করেছে। তিস্তা নদী আর এর পানি ন্যায্য হিস্যা নিয়ে বহু আন্দোলন সংগ্রাম হলেও সুফল পায়নি তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তাকে পুঁজি করে সরকারি ও বিরোধী দলগুলো বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রাম করে নিজেরা ক্ষমতায় সফল হলেও সুফল মেলেনি নদীপাড়ের মানুষের। ভাগ্যেরও উন্নয়ন ঘটেনি তিস্তাপাড়ের মানুষের।
অপর দিকে জন্মলগ্ন থেকে খনন না করায় তিস্তা নদীর তলদেশ ভরাট হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢেউয়ে নদীর দু'কুল বন্যায় প্লাবিত হয়। বন্যায় ভেসে যায় ফসল আর তীব্র ভাঙনে বিলিন হয় বসতভিটা আবাদি জমিসহ স্থাপনা। লোকালয়ে প্রবেশ করে প্রতি বন্যা মৌসুমে পরিবর্তন হচ্ছে নদীর গতিপথ। প্রতিবছর তিস্তা নদীর ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ছে। বন্যা শেষে ধু ধু বালু চরে পরিণত হয়ে চাষাবাদের অনুপযোগি হয়ে পড়ছে রংপুর অঞ্চলের ৫টি জেলার হাজার হাজার হেক্টর জমি।
তিস্তাপাড়ের এ দুর্ভোগ দুর্যোগের কারণে অর্থনৈতিকভাবে প্রতিবছর পিছিয়ে পড়ছে উত্তরাঞ্চল। রংপুর বিভাগের উন্নয়নের প্রধান বাঁধা তিস্তা নদী। এ নদীকে শাসন করতে পারলেই তা আর্শিবাদে পরিণত হবে। এ অঞ্চলে প্রতিবছর নদী ভাঙন রোধে বাঁধ, বন্যার্ত আর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা দিতে শত শত কোটি রাষ্ট্রীয় টাকা অপচয় হলেও কার্যত কোন ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি তিস্তা পাড়ের মানুষের।
তিস্তাপাড়ের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, তিস্তার ভাঙনে ১২/১৪ বার বসত ভিটা সরিয়ে নিয়েছি। শুস্ক মৌসুমে বালু জমিতে কঠোর পরিশ্রম করে যা চাষাবাদ করে পাই সেটুকু দিয়ে চলে পুরো বছর। শুস্ক মৌসুমে বাড়ি তৈরি করি। বর্ষার বন্যায় তা ভেসে বা ভেঙে যায় নদীতে। যা আয় করি তা সবই তিস্তায় বিলীন হচ্ছে। তাই চাই স্থায়ী বাঁধ। যাতে ফসল নষ্ট না হয় বা বসতভিটা ভেসে না যায়।
তিস্তাপাড়ের জেলে অবিনাশ চন্দ্র জানান, বাপ দাদারা তিস্তা নদীতে সারা বছর মাছ ধরত। তিস্তা নদীর শুঁটকি সারাদেশে চলে যেত। এখন বর্ষার ২/৩ মাস মাছ ধরতে পারলেও বাকি সময় পরিবারের খাবার যোগানো কষ্ট হয়ে পড়ে। পানি না থাকায় অনেক জেলে তাদের পেশার পরিবর্তন করেছেন। আগের মত নেই তিস্তা নদীতে মাঝি মাল্লাদের ডাক হাক। তিনিও দাবি করেন দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে।
মাঝি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ৪ মাস তিস্তায় নৌকা চললেও বাকি সময় পায়ে হেঁটে যায় মানুষ। খরস্রোত তিস্তা বর্ষা শেষেই যৌবন হারিয়ে ফেলে। ফলে নৌকা বা খেযাঘাটে আর তেমন যাত্রী মেলেনা। আগে সারা বছর নৌকা চলত নদীর বুকে। এখন বর্ষার শেষে নদীর বুকে ধু ধু বালু চর।
মহিষখোচার কৃষক তাহাজুল বলেন, তিস্তা নদী আমাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় অতিরিক্ত পানিতে ডুবতে হয়, শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে ফসল পুড়ে নষ্ট হয়। তিস্তার স্থায়ী সমাধান চাই। খনন করে দুই পাড়ে স্থায়ী বাঁধ ও সেচ ব্যবস্থা চালু করলে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হবে।
তিস্তাপাড়ের আদিতমারী সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক (অবঃ) আবু তাহের বলেন, তিস্তা নদী শাসন করতে পারলে উত্তরাঞ্চলের কৃষি বিপ্লব ঘটবে, শিল্প বিপ্লব ঘটনাও সম্ভব। বন্যা ভাঙন রোধে যে অর্থ প্রতিবছর তিস্তায় ভেসে যায়। তা আর যাবে না স্থায়ী বাঁধ হলে। একই সাথে চাষাবাদের আওতায় আসবে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। সব মিলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে পিছিয়ে পড়া তিস্তাপাড়ের মানুষই হবে প্রথম সাঁড়ির জাতীয় অর্থনৈতিক যোদ্ধা।
কর্মসূচি সফল করত নদী পাড়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ একাধিক স্থানে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। থাকবে তিস্তা পাড়ের মানুষের সুখ দুঃখের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ভাওয়া গানের আসর, দিনভর থাকবে ঘুড়ি উৎসবসহ নানান গ্রামীণ খেলাধুলা। স্থানীয়রা নিজেরা চাল ডাল সহায়তা দিয়ে পরিবেশন হবে খিচুসহ প্রয়োজনীয় খাবার। এভাবে টানা ৪৮ ঘণ্টা তিস্তা নদীর তীরেই অবস্থান করবেন রংপুরের ৫টি জেলার কয়েক লাখ মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে চলছে প্রচারাভিযান। ব্যাপক লোক সমাগমের প্রত্যশা আয়োজক কমিটির।
তিস্তা রক্ষা আন্দোলনের প্রধান বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, আমাদের এ আন্দোলন কোন দল বা মতের নয়। এটি গোটা রংপুর অঞ্চলের মানুষের গণদাবি। যার মাধ্যমে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। আমরা চাই, তিস্তা মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে অবহেলিত এ অঞ্চলে স্যাটেলাইট ভিলেজ, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটন কেন্দ্র, গড়ে উঠুক কৃষি ও শিল্প বিপ্লব। রংপুর অংঞ্চলের মানুষ দাবি আদায়ে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যৌতিক দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলতে থাকবে। প্রথম দফায় যে ৪৮ ঘণ্টা টানা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়েছে তা সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক তথ্যনুসন্ধানের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা এখন জাতিসংঘ স্বীকৃত, সারাবিশ্ব স্বীকৃত বিশ্ব খুনী। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিশ্বের ঘৃনিত ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের আর কোন সনদ দিতে হবেনা। সারা বিশ্ব তাকে সে সনদ দিয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ফেনীর মিজান ময়দানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলা উন্নতি, স্বৈরাচারের দোষরদের বিচার, দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ফেনী জেলা বিএনপির আয়োজনে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন দরকার শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচার নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠিত হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বলছে শেখ হাসিনা সরাসরি গণহত্যার জন্য সরাসরি নির্দেশ দিয়েছে। তার শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছে গণহত্যা চালানোর জন্য। সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ সে দায় এড়াতে পারেনা। আওয়ামী লীগসহ তার সকল অঙ্গ সংগঠন ঢাকাসহ দেশের রাজপথে গণহত্যায় অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করেছে অলিতে গলিতে কীভাবে আওয়ামী লীগ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করেছে। আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন,বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ ছাত্র সংগঠন ও জনগনের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে বিচার করতে হবে। বিচারের প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালাতে পারবে কিনা, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা। আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র ধ্বংস করার ইতিহাস, গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার ইতিহাস। শেখ মুজিব ৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়ে পালিয়ে গেছে শেখ হাসিনাও দেশের গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল।তবে আমরা জানতাম শেখ হাসিনার পতন একদিন হবেই। সেজন্যই বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছে।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্য তিনি বলেন,কঠোরহস্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টের জন্য ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসররা যেমন আছে তেমনি প্রফেসর ইউনুস সরকার আপনার সরকারেও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসররা বসে আছে। উপদেষ্টা পরিষদে হাসিনার যে সকল দোসররা আছে তাদের বাদ দিতে হবে। সরকারের আমলাতন্ত্রে, প্রশাসনে হাসিনার দোসররা বসে আছে তাদেরকে বাদ দিয়ে দোসরমুক্ত করতে হবে।
সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আশা করেছিল দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকবে তবে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা রমজানের আগে ভ্যাট বসিয়ে দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যেভাবে পারেন বাজারের সরবরাহ বাড়ান, তবুও জনগণের সাধ্যের মধ্য দ্রব্যমূল্যের দাম রাখতে হবে। ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে জনগণের নাগালের মধ্যে আনতে হবে। বেশি সংস্কার সংস্কার করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি করে জনগণের নাভিশ্বাস উঠাবেন না। মানুষ সংস্কারের চাইতে সংসারের কথা বেশি বুঝে। আমরা এখন আপনাদের সতর্ক করছি রমজানে যেন দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে না যায়।নয়ত কঠোরহস্তে দমন করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন যারা বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে এবং ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।
সরকারের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা ডেকেছেন আমরা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সভায় গিয়েছি। জাতীয় নির্বাচন করার জন্য যেসকল নির্বাচনমুখী সংস্কার জরুরি সেগুলো আলোচনা করে ঐক্যমতে আসুন এবং সে প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে নির্বাচনের আয়োজন করুন। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে। আমরা হিসান করে দেখেছি কোনভানেই নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য মে-জুন মাসের বেশি সময় লাগবেনা। যে সকল সংস্কার প্রয়োজন তা করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন,যারা অনুপাতিক হারে নির্বাচন চায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের আনুপাতিক জ্ঞান নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের বিষয়, আগে জাতীয় নির্বাচন এরপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে চায় তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের নামে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার মতলব কি সেটা জানাতে হবে। সাংবাদিক এখতিয়ারের মধ্যে দিয়ে জনগণের আখাঙ্কা বাস্তবায়নে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
জনসভায় ফেনী জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।এ সময় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নদী পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
নদী পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাইলেন পরিবেশ উপদেষ্টা
জাতীয়
পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশকে নদী পুনরুদ্ধারের সফল উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, একটি মাত্র নদীর পরিবর্তে নদীর সংযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জরুরি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার পানি ভবনে অনুষ্ঠিত ‘নদী পুনরুদ্ধার: বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক জ্ঞান বিনিময় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দূষিত নদীগুলোও সুপেয় পানির উৎসে পরিণত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ক্ষেত্রে কার্যকর সমাধান দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গার জন্য ট্যানারির ক্রোমিয়াম দূষণ বড় চ্যালেঞ্জ। নীতি ও পরিকল্পনার পরিবর্তে দ্রুত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এডিবির সহায়তায় একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।
তিনি জানান, ১৯৯৯ সালের পানি নীতি ও ডেল্টা পরিকল্পনার চলমান সংশোধন ভবিষ্যতের নদী পুনরুদ্ধারের কাঠামো হিসেবে কাজ করবে। পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) ইতোমধ্যে উপত্যকার নদীগুলোর পুনরুদ্ধারের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে দূষণকারীদের চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং সরকার শিল্প-কারখানার জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সহায়তা দিতে প্রস্তুত। নদী দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও সরকারের কাছে রয়েছে। এছাড়া, নদীর প্লাস্টিক দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রচলিত ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সরানো সম্ভব নয়, এজন্য বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন। তাই পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কর্মপরিষদ গঠনের আহ্বান জানান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বর্ষাকালে নদীর স্বাভাবিক প্লাবন দূষণ কমাতে ভূমিকা রাখে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যথাযথ সম্পদ ও উদ্যোগ নিয়ে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে সুরমার মতো নদীগুলোর পুনরুদ্ধার সম্ভব।
তিনি নদী-নির্ভর জনগোষ্ঠীকে পুনরুদ্ধার কর্মপরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা কামনা করেন। তিনি প্রকল্পভিত্তিক নয়, প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানাধীন ধারাবাহিক নদী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেন। এডিবির সহায়তায় অন্তত একটি নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।
সেমিনারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশে এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি হো ইউন জিয়ং ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।