আগামী জুনের মধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড রোয়েদাদ-২০১৮ পরীক্ষার জন্য অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা করেছি। আসলে বিষয়টি আমরা অনেক আগেই সমাধান করতে পারতাম। আরও আগে ঘোষণা করতে পারতাম। আমাকে সভাপতি করার পর আমি একটি মিটিং করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এরপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি একমত হয়েছি যে এ বিষয়টি আর ঝুলিয়ে রাখা ঠিক হবে না। যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি ঘোষণা আমরা দেব। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের বিষয়ে আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব। ঘোষণার আগে সব অংশীজনের সঙ্গে আমরা যৌথ সভা করব। আগামী ১২ জুন সকাল ১১টায় তথ্য মন্ত্রণলায়ের সম্মেলন কক্ষে যৌথ সভাটি করব। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা একটি সমাধানে পৌঁছাব। আগামী জুনে অর্থ বছরের মধ্যে রোয়েদাদ বাস্তবয়ান সম্পর্কিত আমাদের ঘোষণা পেশ করব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান।
বাংলাদেশে যোগাযোগ নীতি সংস্কারের বিষয়ে ‘দ্য বাংলাদেশী কমিউনিকেশন স্কলারস ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ)’র সেমিনার দ্য বাংলাদেশী কমিউনিকেশন স্কলারস ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ), গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ বিষয়ে গবেষকদের একটি সংগঠন, “নতুন যুগে যোগাযোগ নীতি: টেকসই এবং মুক্ত মিডিয়ার সন্ধানে” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় আয়োজিত এই সেমিনারে যোগাযোগ নীতি সংস্কারের উপর সংলাপকে উৎসাহিত এবং বাংলাদেশে একটি মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়া পরিবেশের উন্নয়নে অবদান রাখার বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষত, বিশেষজ্ঞ প্যানেলিস্টরা বর্তমান যোগাযোগ এবং মিডিয়া নীতির সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করবেন এবং বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করবেন।
সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত বাংলাদেশী যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ, গবেষক, বাংলাদেশের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন। আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞরা যোগাযোগ নীতি এবং সংস্কারের বিভিন্ন দিকের উপর আলোকপাত করবেন। নিউইয়র্কের বার্ড কলেজের ফ্যাকাল্টি ড. ফাহমিদুল হক প্রথমে সংক্ষেপে বাংলাদেশে যোগাযোগ ও গণমাধ্যম নীতিমালার পরিস্থিতি বর্ণনা করবেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়া নীতি ও সংস্কারের ওপর আলোকপাত করবেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আনিস রহমান, টেলিভিশন মিডিয়া নীতি এবং এর প্রয়োগ বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করবেন যমুনা টিভি’র সিইও ফাহিম আহমেদ। ড. ফাহমিদুল হক চলচ্চিত্র সংক্রান্ত নীতিমালাও বিশ্লেষণ করবেন। এছাড়া সেন্ট মেরি’স কলেজের ফ্যাকাল্টি ড. মোহাম্মদ আলা-উদ্দিন দক্ষিণ এশিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের মিডিয়া নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ প্রদান করবেন। মিডিয়া নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করবেন গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ মীর আশফাকুজ্জামান। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির প্রিন্ট মিডিয়া নীতি এবং শিল্প অনুশীলনের মধ্যে বৈষম্য নিয়ে আলোচনা প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। কর্নেল ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি ড. জামাল উদ্দিন অধিবেশনটি পরিচালনা করবেন এবং ওসওয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের ফ্যাকাল্টি ড. খায়রুল ইসলাম বিসিএসএনএ প্ল্যাটফর্মের পরিচয় দেবেন।
ওয়েবিনারটি প্রচারের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/groups/554622215798073
উল্লেখ্য, দ্য বাংলাদেশী কমিউনিকেশন স্কলারস ইন নর্থ আমেরিকা (বিসিএসএনএ) হলো উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত ১০০ টিরও বেশি বাংলাদেশী যোগাযোগ ও মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্ক। অনেক বিসিএসএনএ সদস্য প্রাক্তন সাংবাদিক যারা বাংলাদেশের মিডিয়া শিল্পে কাজ করেছেন এবং এখন একই বিষয়ের উপর গবেষণা ও অধ্যাপনা করছেন। বিসিএসএনএ সদস্যরা বিভিন্ন বৈশ্বিক যোগাযোগ ও মিডিয়া সংস্থায়ও নেতৃত্ব দিচ্ছেন।, যেমন ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন এসোসিয়েশন (আইসিএ), ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস এন্ড রিস্ক কমিউনিকেশন এসোসিয়েশন (আইসিআরসিএ) এবং সাউথ এশিয়ান কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েশন (এসএসিএ)।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে সাবেক উপজেলা বিএনপির সদস্য ও আমজাদহাট ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন টিপুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের উত্তর তারাকুছা মীরু চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
যৌথবাহিনী সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে সন্ত্রাসী মো. আনোয়ার হোসেন টিপুকে ৬টি ককটেল ও ৬টি তারকাটা যুক্ত লাঠিসহ গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন টিপুর তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর হোসেন মীরু আমজাদহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। মেঝো ভাই মারুফ পারভেজ তুহিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং অন্য ভাই শাহাদাত হোসেন লিটন ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। তারপর থেকে ভাই শাহাদাত হোসেন লিটনের সীমান্তের চোরাচালান ও মাদক কারবারের নেতৃত্ব দেন বড় ভাই টিপু।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আনোয়ার হোসেন টিপুকে চলতি বছরের ২ মে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ফুলগাজী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গ্রেফতার টিপুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুরে কমতে শুরু করে। সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে লালমনিরহাট সান্তাহার রেলরুটের অর্ধকিলোমিটার পথ।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্যার পানিতে ডুবে থাকা রেল লাইন সংস্কার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বিকেল ৩টা হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭ মিটার। যা বিপদ সীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শনিবার দুপুর থেকে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে। রোববার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরবর্তিতে দুপুর নাগাদ কমে বিপদসীমার নিচে নেমে আসে পানি প্রবাহ। বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ডালিয়া পয়েন্টে। ফলে বামতীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। প্রতিমুহুর্তে বাড়ছে এর সংখ্যা। আতংকিত হয়ে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ।
পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট সান্তাহার রেলরুটের লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকায় অর্ধকিলোমিটার রেলপথ ডুবে যায়। এ সময় পানির স্রোতে ভেসে যায় রেল লাইনের পাথর। ফলে দিনভর ঝুঁকি নিয়ে ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একই সাথে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা হয় রেল লাইন। আপাতত রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।
টানা দুই দিনের বন্যায় নদী তীরবর্তি এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট ব্রীজ কালভার্ট ভেঙে গেছে পানির স্রোতে। উঠতি আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ডুবে আছে বন্যার পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্বক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সাথে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরে মাছ। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে সলেডি স্প্যার বাঁধসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো। শনিবার রাতভর সলেডি স্প্যার বাঁধ-২ এর উপর দিয়ে পানি ওভার ফ্লো প্রবাহিত হয়। বাঁধ ভেসে যাওয়ায় শঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়ে ভাটিতে থাকা শত শত পরিবার। স্থানীয়রা রাতে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষা করে।
বন্যার পানিতে বিদ্যালয় ডুবে থাকায় জেলার ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার। গবাদি পশু পাখি নিয়েও নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন খামাড়ি ও সাধারণ কৃষকরা। ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় রাস্তা বা বাঁধের উচু স্থানে পলিথিন সাঁটিয়ে রাখা হয়েছে এসব গৃহপালিত পশু পাখি। অনেক পরিবার বাড়ি থেকে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। বড় বিপাকে পড়েছেন শিশু বৃদ্ধ আর প্রতিবন্ধীরা।
পানি বেড়ে যাওয়ায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হলেও তা এখন পর্যন্ত বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ শুরু হয়নি। তবে খুব দ্রুতই ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।
সলেডি স্প্যার বাঁধ-২ এলাকার বাসিন্দা এমদাদুল হক বলেন, রাতে পানির গর্জনে ঘুমাতে পারিনি। সলেডি স্প্যার বাঁধে ব্রীজ অংশের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এ সময় বাঁধ কাঁপতেছিল। আমরা ভয় পেয়েছিলাম যে, স্প্যার বাঁধ বুঝি ভেসে যায়। স্থানীয়রা রাত জেগে বাঁধে বস্তা ফেলে রক্ষা করেছে। বন্যার সময় নির্ঘুম রাত কাটে তিস্তাপাড়ের মানুষদের।
গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক মজিদুল ইসলাম বলেন, দুই রাত থেকে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে। আমাদের গ্রাম পানিতে ডুবে আছে। নৌকা দিয়ে এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ির যোগাযোগ করতে হচ্ছে। ডুবে থাকা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। আমন ক্ষেত ডুবে গেছে বন্যায়। বেশি সময় এমন থাকলে ধান গাছ পঁচে নষ্ট হতে পারে।
হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম বিছনদই গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে আড়াই/তিন শত পরিবার শুক্রবার থেকে পানিবন্দি। দিন যত যাচ্ছে পানিবন্দির সংখ্যা তত বাড়ছে। রোববার বিকেল নদীতে পানি কমলেও বন্যার পানি খুবই ধীরগতিতে নামছে। ফলে এখনও পানিবন্দি রয়েছি আমরা। বন্যার সময় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়। বন্যা হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তিস্তাপাড়ের মানুষদের। আমরা ত্রাণ নয়, চাই তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, আমার ইউনিয়নে তিন/সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি উপজেলা ও জেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। শুকনো খাবার এখন পর্যন্ত বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ এলে পৌঁছে দেয়া হবে।
মহিষখোচা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ হোসত বলেন, আমাদের ইউনিয়নের ৩ হাজারের অধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁধগুলো রক্ষায় সাধারণ মানুষদের নিয়ে বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হয়। দুপুরে তা কমে গিয়ে বিপদসীমার নিচে নেমে আসে। আশা করছি দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যা কবলিতদের জন্য ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ মেঃটন জিআর চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। আজকে স্বল্প পরিসরে বিতরন শুরু করেছি। সোমবার সকলের কাছে পৌছে যাবে ত্রাণ। বন্যা বাড়লে তা মোকাবেলা করতে জেলা উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
নিষিদ্ধ পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্দেশনা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপাদের উদ্দেশ্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপগুলোতে এবং ১ নভেম্বর থেকে ঢাকার ১০টি কাঁচাবাজারে পলিথিন বন্ধে কার্যক্রম শুরু হবে। ১ নভেম্বর থেকে দেশব্যাপী পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হবে। এ কাজে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। উপদেষ্টা এ সময় পাহাড় কাটার পাশাপাশি নদী দখল ও দূষণ রোধেও তাদের জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিক পলিথিনের অপ্রতিরোধ্য ব্যবহার পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি মাটির উর্বরতা কমিয়ে দিচ্ছে, নদী-নালা ও জলাশয় দূষিত করছে এবং জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এসব কারণে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে সব পর্যায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
তিনি উপস্থিত প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন, পরিবহন এবং ব্যবহার বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, প্রশাসনের সমন্বিত পদক্ষেপই পলিথিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা এ বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং নিজেদের এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কঠোর আইন প্রয়োগের অঙ্গীকার করেন।