মুগ্ধতা ছড়াল ‘পঞ্চসঙ্গী’
ঢাকার রাজপথে পাঁচ পথশিশু বই বিক্রি করে। কড়াইল বস্তিতে থাকে তারা। শিক্ষার আলো নেই, দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত জীবন। এদেরই একজন প্রতাপ। সে পড়তে জানে।
একদিন প্রতাপসহ অন্যরা রাস্তায় বই বিক্রি করছিল। শওকত ওসমানের পঞ্চসঙ্গী। দাম মাত্র ২০ টাকা। এক ভদ্রমহিলা ৫টি বই কিনে তাদেরকে পড়ার জন্য উপহার দেন। বই উপহার পেয়ে খুব খুশি পথশিশুরা। কাজের ফাঁকে প্রতাপ একদিন বইটি পড়তে শুরু করে।
এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে ‘পঞ্চসঙ্গী’ সিনেমাটির কাহিনী। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিকায় নির্মিত হয়েছে শিশুতোষ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘পঞ্চসঙ্গী।’
রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই উত্তাল দিনগুলোতে পাঁচ শিশুর জীবন কাহিনী ও তাদের ভূমিকা নিয়ে তৈরি হওয়া চলচ্চিত্রটি উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
প্রিমিয়ার শোতে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লিয়াকত আলী লাকী, কথাশিল্পী আন্দালিব রাশদি, চলচ্চিত্রটির নির্মাতা জাঁ-নেসার ওসমানসহ অন্যান্যরা। প্রিমিয়ার শোর আগে অতিথিরা চলচ্চিত্রটি নিয়ে তাদের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন।
চলচ্চিত্রটি নিয়ে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, যুগে যুগে দেশকে ভালোবাসতে হলে, স্বনির্ভর রাখতে গেলে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ হৃদয়ে ধারণ করেই ভবিষ্যত গড়তে হবে। সেক্ষেত্রে পঞ্চসঙ্গী চলচ্চিত্রটি পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবে। এসময় তিনি অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা আবৃতি করে শোনান দর্শকদের।
লিয়াকত আলী লাকী বলেন, পঞ্চসঙ্গী চলচ্চিত্রটি নতুন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নাড়া দেয়। এই চলচ্চিত্রটি বারবার শিশুকিশোরদের দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন জাঁ-নেসার ওসমান। চলচ্চিত্রটি নিয়ে তিনি বলেন, কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান রচিত কিশোর উপন্যাস অবলম্বনে বর্তমানের কিশোর প্রতাপের সাথে জাক্সটাপোজ করা হয়েছে। পঞ্চসঙ্গী চলচ্চিত্রের সাহায্যে অতীতের সাথে বর্তমানের একটি মেলবন্ধনের চেষ্টা করা হয়েছে। কাহিনীর মাঝে ফেলানী নামের মেয়েটি তৎকালীন নিচু শ্রেণির দরিদ্র কিশোরীর প্রতিনিধি হিসেবে চলচ্চিত্রে উপস্থাপিত হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, প্রিমিয়ার শো-এর পর চলচ্চিত্রটি ধাপে ধাপে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, জেলা শহরে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে।