‘নিরপরাধ কাউন্সিলর যেন হয়রানি না হন’



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
নগর ভবনে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেয়র সাঈদ খোকন

নগর ভবনে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেয়র সাঈদ খোকন

  • Font increase
  • Font Decrease

ডিএসসিসি’র ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অপসারণ হওয়া কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ‘ক্যাসিনো সাঈদ’-এর ওয়ার্ডে আইন অনুযায়ী পাশ্ববর্তী কাউন্সিলরকে কাজ চালিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি (অপসারণ) আসার পরপরই আইন অনুযায়ী পাশ্ববর্তী এলাকার কাউন্সিলরকে কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র বলেন, আমাদের শতাধিক কাউন্সিলর রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন এ কাজে (ক্যাসিনো) জড়িয়েছেন। এছাড়া আরও দুই-চারজনের নাম পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। পত্র-পত্রিকায় কারও নাম আসলেই আমরা তাকে অভিযুক্ত করতে পারি না। আমার আহ্বান থাকবে দোষীকে কোনক্রমেই ছাড় নয়, তবে নিরপরাধ কাউন্সিলরকে যেন হয়রানির শিকার না হন।

রোববার (২০ অক্টোবর) নগর ভবনে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সাঈদ খোকন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (এলআইইউপিসি) প্রকল্পের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডিএনসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল মো. শরীফ আহমেদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. জাহিদ হোসেন, প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালি

মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, পত্র-পত্রিকাতে যে সব নাম আসছে সেটা যাচাই-বাছাই করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্যোগ নিতে হবে। কোন একটা পত্র-পত্রিকায় লিখে দিলেই সেটা প্রমাণিত হিসেবে সিটি কর্পোরেশন গ্রহণ করতে পারে না, কিম্বা কোন কাউন্সিলরকে অভিযুক্ত করতে পারি না। যতক্ষণ পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কাউকে দোষী হিসেবে সাব্যস্ত করতে পারি না। তবে নির্দোষ কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়, আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী যদি ব্যবস্থা নেয়, তারা যদি আমাদের সাহায্য চায় ডিএসসিসি সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবে।

তিনি বলেন, নির্বাচিত মেয়র হিসেবে বলব, এসব কাণ্ডে জড়িত নয় এমন কাউন্সিলরের ব্যাপারে যাতে যাচাই-বাছাই না করে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তার শাস্তির জন্য আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। কিন্তু সেই সঙ্গে জনগণের কাজে বা সেবায় নিয়োজিত কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করা যেন না হয় সেজন্য সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।

মেয়র বলেন, কোন কাউন্সিলর যদি বিনাকারণে হয়রানির শিকার হন তাহলে মানুষ সেবাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে। তাই দোষীকে কোনভাবেই ছাড় নয়, নিরপরাধকে কোনক্রমেই হয়রানি নয়।

মশক নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশনের ধীর গতির কথা স্বীকার করে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্প চূড়ান্ত করেছি। এ প্রকল্প চূড়ান্ত করতে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নিয়েছি। এছাড়া স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত হয়েছে। সেই প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একনেক বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে একটা সমন্বিত ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা সামনে রেখে আগামী ৫ বছর কাজ করব। যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রকল্প অনুমোদিত না হয়, আমাদের চলমান কাজ অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, শহরের ডেঙ্গু কমে এসেছে, তবে দেশব্যাপী এর প্রাদুর্ভাব এখনও শূন্যের পর্যায়ে আসেনি। শহরে শীতের মধ্যে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়ে যায়, যদিও এটা প্রাণঘাতী কোন মশা নয়। কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সব ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমাদের চলমান কার্যক্রম কিছুটা ধীর হয়েছে, এ বিষয়ে আমি একমত। তাই মন্থর গতি কাটিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যক্রম জোরদার করা হবে।

আরও পড়ুন: কাউন্সিলর সাঈদকে অপসারণ

   

সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য বন্ধে নীতিমালা হবে: প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য বন্ধে একটি নীতিমালা তৈরি করার চিন্তা করছে সরকার বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে যেসব অনুমোদনহীন অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে, সেগুলো শিগগিরই বন্ধ করা হবে। পরবর্তীতে আবেদনের মাধ্যমে অনুমোদন পেলে তা পরিচালনা করতে পারবে।

গণমাধ্যমে অবাধ তথ্য নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সব মন্ত্রণালয় ও মহলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমকর্মীরা সঠিক নিয়মে কোন তথ্য চাইলে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সরবারাহ করতে। কারণ সঠিক তথ্য নিশ্চিত না হলে মিথ্যা তথ্য প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

;

পাটগ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ট্রেনের ধাক্কায় আব্দুর রাজ্জাক (৪০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ঘুন্টি বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত আব্দুর রাজ্জাক রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে ট্রেনে করে লালমনিরহাটে আসেন বন্ধুর বাড়িতে বিয়ের দাওয়াত খেতে। তিনি দওয়াত খেয়ে পাটগ্রাম উপজেলার ঘুন্টি বাজার এলাকায় রেল লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলার সময় লালমনিরহাটগামী একটি কম্পিউটার ট্রেন তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

লালমনিরহাট রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল-মমিন বার্তা২৪ কমকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

;

তিনদিন বন্ধের পর চালু বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পঞ্চগড়
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি আসনের লোকসভা নির্বাচনের কারণে টানা তিনদিন বন্ধ থাকার পর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় স্বাভাবিক হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকেই উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী ও বিভিন্ন পণ্য বহনকারী গাড়ি উভয় দেশে প্রবেশ করেছে।

দুপুরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ ও পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের কারণে গত বুধবার থেকে শুক্রবার (১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল) পর্যন্ত টানা তিন দিন পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন যাত্রী পারাপার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার ম্যাজিস্ট্রেট শামা পারভীন।

;

গতবারের চেয়ে এবারের ঈদে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১.২৫ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরের চেয়ে এবারের ঈদুল ফিতরে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩১.২৫ শতাংশ।

বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩শ ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩শ ২৮ জন নিহত এবং ৫শ ৬৫ জন আহত হয়েছিলেন। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে দেশের সড়ক মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪শ ৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩শ ৯৮ জন আহত হয়েছেন।

একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া নৌপথে ২টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪শ ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪শ ৩৮ জন এবং ১ হাজার ৪শ ২৪ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো সংগঠনের সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এবারও প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি অনেকদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষ বেশি যাতায়াত করেছেন। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মাসেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর ৭.৫ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিম্নবিত্তের লোকজনদের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩শ ৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪শ ৭ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩শ ৯৮ জন আহত হয়েছেন।

বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩শ ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩শ ২৮ জন নিহত এবং ৫শ ৬৫ জন আহত হয়েছিলেন। বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১.২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭.৪৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১শ ৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১শ ৬৫ জন নিহত, ২শ ৪০ জন আহত হয়েছেন, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৯.৬২ শতাংশ, নিহতের ৪০.৫৪ শতাংশ এবং আহতের ৩০.৩৭ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮৭ জন চালক, ৩১ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪০ জন পথচারী, ৭৫ জন নারী, ৪৭ জন শিশু, ২৭ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ জন শিক্ষক, ১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতালে) সড়ক দুঘটনায় আহত ৬শ ৫৮ জনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৬শ ৮ জন আহত রোগীর তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ৪০.৫০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.২৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-লরি, ৬.৫০ শতাংশ কার, মাইক্রো জিপ, ৫.৯৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা, ৬.১৪ শতাংশ অটোরিকশা, ১২.১১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ও ১৪.৪৬ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৬.৩১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৭.১১ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২.৫৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ০.৫০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে, ০.৫০ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে ও ৩ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩২.৫৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১০.০২ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৫০.৬২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.০১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.২৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক, রেল ও নৌপথে গত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে অবকাঠামো ভালো হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। গতিকে নিরাপদ করার মতো আইনি কাঠামো, দক্ষচালক, মানসম্মত যানবাহনের অভাব রয়েছে।

আইন প্রয়োগে দুর্নীতির কারণে জাতীয় মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ ত্রি-হুইলার, ইজিবাইকের মতো যানবাহন অবাধে চলছে।

এছাড়াও ছোট ছোট যানবাহন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ইজিবাইকের অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনাও।

তিনি মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের আমদানি বন্ধ করে দেশব্যাপী উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আইন প্রয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে গণপরিবহনগুলোতে নগদ অর্থ বন্ধ করে ডিজিটাল লেনদেন চালুর দাবি জানান তিনি।

এতে সংবাদ সম্মেলনেন আরো উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুরন্নেছা খান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আব্দুল হক, সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম-মহাসচিব মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, মো. মহসিন প্রমুখ।

দুর্ঘটনার কারণ:
১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল।
২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো।
৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালক এসব সড়কে দুঘটনায় পতিত হয়েছে।
৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।
৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ:
১. জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা;
২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা;
৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।
৪. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা;
৫. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা;
৬. মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা;
৭. সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা;
৮. উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা;
৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা;
১০. মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।

;