কয়লা প্রকল্প বন্ধের দাবিতে গণসমাবেশ-পদযাত্রা



নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ এশীয় জলবায়ু সংকট নিরসনে গণকর্মসূচি আয়োজিত পদযাত্রা

দক্ষিণ এশীয় জলবায়ু সংকট নিরসনে গণকর্মসূচি আয়োজিত পদযাত্রা

  • Font increase
  • Font Decrease

কয়লা প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ ও অর্থনীতি ধ্বংস করবে উল্লেখ করে কয়লা ব্যবহার বন্ধ এবং সৌরশক্তি ব্যবহারের দাবিতে গণসমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সামাজিক ও পরিবেশবাদী গণসংগঠন সমূহের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্যজোট ‘দক্ষিণ এশীয় জলবায়ু সংকট নিরসনে গণকর্মসূচি (সাপাক)’।

বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও সাপাক-এর আঞ্চলিক সমন্বয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে এবং বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব ও বাপা’র নির্বাহী সদস্য মিহির বিশ্বাসের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান (উপদেষ্টা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স), অধ্যাপক ডা. এম আবু সাঈদ (সভাপতি ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট), রুহিন হোসেন প্রিন্স (তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য), মাহবুব আলম (ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি), মো. জাহিদ হোসেন (বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক), লুনা নূর (নারী নেত্রী), খান আসাদুজ্জামান মাসুম (সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন), শরীফ জামিল (সমন্বয়ক ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ), হাসান ইউসুফ খান (সমন্বয়ক নদী পক্ষ), ইবনুল সাঈদ রানা (প্রধান নির্বাহী, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন), হাফিজুর রহমান ময়না (সভাপতি,নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম), মোহাম্মদ এজাজ (পরিচালক, রিভারাইন পিপলস), সামস সুমন (সভাপতি নোঙ্গর), সরদার হীরক রাজা (লালন গবেষক), আব্দুস সাত্তার (সমন্বয়কারী গ্রিনভয়েস ঢাকা মহানগর) এবং মো. সেলিম (সম্পাদক পবা)।


গণসমাবেশে জোটের অন্যান্য প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোহাম্মদ আলী (তুরাগ নদী রক্ষা আন্দোলন), মাহবুব হোসেন (নদী কর্মী), মাসুম বিল্লাহ (ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট), শাকিল রহমান (ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন), আমির হোসেন, জহুরুল ইসলাম (পরিবেশ রক্ষা এখনি) শেখ আসাদ প্রমূখ।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশের চার কোটি মানুষ সমুদ্রের নোনা পানির ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে। আর এই শতাব্দী শেষে ক্ষতির শিকার মানুষের সংখ্যা সাত কোটিতে পৌঁছাবে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেল আইপিসিসি থেকে বিশ্বের সমুদ্র নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে আশঙ্কার চেয়ে দ্রুত হারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয় এবং তাতে এই উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বিপদে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। দেশের উপকূলের বেশির ভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধ রয়েছে। ওই বাঁধগুলোর গড় উচ্চতা ১২ থেকে ১৫ ফুট । কিন্ত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার প্রভাব মোকাবিলায় এসব বাঁধ যথেষ্ঠ উঁচু নয়।

তিনি বলেন, এতদিন ধারণা ছিল এই শতাব্দীর মধ্যে, অর্থাৎ ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বাড়বে। নতুন তথ্য বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যেই একই পরিমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে। এত দিন ধারণা ছিল, বিশ্বের ২৫ কোটি মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে বিপদে পড়বে, এখন মনে হচ্ছে এর সংখ্যা ৬৪ কোটিতে দাঁড়াবে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বৈশ্বিক গ্যাস নিঃসরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত নগণ্য (০.৩%); তা স্বত্তেও বাংলাদেশকেই এর অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষতির স্বীকার হতে হবে। বিজ্ঞানে বলা হচ্ছে - গত তিন বছরের যে অতিরিক্ত গরমের তাপ আমরা খোদ ঢাকা মহানগরীতে ও সারা বিশ্বে ভোগ করছি, তা বিগত ১২ বছর আগে নির্গত গ্যাসের কারণে হচ্ছে। তারপর পার হয়েছি একযুগ। আর আজ থেকে আরো ১২ বছর পর নির্গত গ্যাসের পরিমাণ এতই ক্ষতিকর হবে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব আর নিয়ন্ত্রণযোগ্য থাকবে না, বিশ্বের সার্বিক মারাত্ম ক জলবায়ু দুর্যোগ হবে অপরিবর্তনীয়; মানুষ সহ সকল জীব-গাছপালা হবে মৃত্যুমুখী। ২১০০ সালে নয়, আমাদের মহাদুর্যোগ স্থায়ী হয়ে বসবে ২০৫০ সাল থেকেই। বাংলাদেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ভূমি পানির তলায় নিমজ্জিত হবে, দক্ষিণাঞ্চল থেকে উৎখাত হবে ৫-৭ কোটি মানুষ। ধ্বংস হবে আমাদের পরিবেশ, প্রকৃতি, ফসল ও সকল সম্পদ।


আব্দুল মতিন আরও বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কয়লা বা জীবাশ্ম জ্বালানি নয়, সৌর ও অন্যান্য বিকল্প জ্বালানি থেকে করতে হবে। পশ্চিমা বিশ্ব জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করেছে বলে আমাদেরও তাই করতে হবে, এই ধারণাটি সঠিক নয়। এখন আর যেনতেন প্রকারে উন্নয়ন করার সুযোগ নেই; শুধুমাত্র জাতিসঙ্ঘ নির্দেশিত টেকসই প্রক্রিয়ায়ই তা করতে হবে। আমরা কারো কয়লা ডাম্পিং করতে পারি না। কারণ কয়লা একটি নোংরা জ্বালানি, আর ‘ভালো কয়লা’ একটি নির্জলা মিথ্যা কথা।

অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান বলেন, আমরা পরিবেশের জন্য কাজ করে সরকারকে দেখিয়ে দিতে চাই আমরা ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র সাংগঠনের পর্যায় থেকেও পরিবেশ রক্ষা করতে পারি। আমরা প্রতি বছর গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারি। সবাইকে সম্মিলিতভাবে সরকারকে চাপ দিয়ে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।

অধ্যাপক এম আবু সাঈদ বলেন, দেশের ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন প্রকল্প থেকে সরে আসতে হবে। যেখানে সারা বিশ্ব কয়লা ভিত্তিক প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছে সেখানে আমাদের সরকার কার স্বার্থে এ মরণ ফাঁদে পা দিচ্ছে তা জাতি জানতে চায়।

শরীফ জামিল বলেন, সরকার রামপাল তাপবিদ্যুৎ পকল্প চালুর মধ্য দিয়ে সুন্দরবনকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। আমরা চাই সরকার এ পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে ফিরে আসবে দেশ, জাতি ও পরিবেশের স্বার্থে।

মিহির বিশ্বাস বলেন, সারা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাংলাদেশ আজ ধ্বংসের দোরগোড়াই উপনীত। এখনি সচেতন না হলে দেশের উপকূলীয় এলাকার ধংস অনিবার্য, তাই সবাই সচেতন হয়ে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের সরকার আজ পরিবেশের ব্যাপারে চরম উদাসীন। তাই আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি যাদের বিদেশে সেকেন্ড হোম নাই তাদেরকেই পরিবেশ রক্ষায় একত্রে কাজ করতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সরকারকে বাধ্য করতে হবে পরিবেশের পক্ষে কাজ করতে।

হাসান ইউসুফ খান বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত মারাত্মক সংকটের সম্মুখীন। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত কার্বন এ সংকটকে আরো ঘনীভূত করছে। এতে বিলীন হয়ে যাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, তাই এখনি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে হবে।

সাপাক আয়োজিত গণসমাবেশে উত্থাপিত দাবিসমূহ—
১) কয়লা প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ ও অর্থনীতি ধ্বংস করবে; কয়লা ব্যবহার বন্ধ কর, সৌর শক্তি স্থাপন কর, এসডিজি বাস্তবায়ন কর।
২) সারা বিশ্বে গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ কর, ভোগবাদী জীবন পরিহার কর।
৩) উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে ন্যায় পরায়ণতা নিশ্চিত কর।
৪) বিকেন্দ্রিভূত, গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ সুশাসন নিশ্চিত কর
৫) বাতাস, পানি-জলাশয়-নদী ও ভূমি তথা পরিবেশ পুনরুদ্ধার কর।
৬) বৃহৎ দূষণকারীদের থেকে সম্পদহানি ও ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ আদায় কর।

‘সাপাক’ জোটের অন্তর্ভুক্ত সংগঠনগুলো হলো—বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা); তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, উত্তম দেব নিরাপদ সড়ক প্রচার অভিযান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ-স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, ওয়ার্ক ফর গ্রিন বাংলাদেশ, প্রভাতী সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, তরুপল্লব, সিডিপি, পুরাতন ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম, আদি ঢাকাবাসী ফোরাম, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, পুরাণ ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, রিভারাইন পিপলস, পিপলস সার্ক ওয়াটার ফোরাম, বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন, বড়াল রক্ষা আন্দোলন, নোঙ্গর, উদয়ন বাংলাদেশ, তুরাগ নদী রক্ষা আন্দোলন, নদী পক্ষ ও গ্রিনভয়েসসহ প্রায় ৪০টি সামাজিক ও পরিবেশবাদী গণসংগঠন।

   

ইসলামপুরে দুই শ কৃষক পেল উন্নত মানের ধানের বীজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ইসলামপুরে দুই শ কৃষক পেল উন্নত মানের ধানের বীজ

ইসলামপুরে দুই শ কৃষক পেল উন্নত মানের ধানের বীজ

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ক্লাস্টারভিত্তিক আউশ আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আয়োজনে উপজেলার পলবান্ধা ইউনিয়নের উত্তর সিরাজাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুইশ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ১০ কেজি করে উন্নত মানের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।

এর আগে একই মাঠে স্থানীয় কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করা হয়। সভায় ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক এনায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামার বাড়ির মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কৃষিবিদ শাহজাহান কবীর, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানাসহ আরও অনেকেই।

;

কালিয়াকৈরে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের কালিয়াকৈর সম্প্রতি শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হক (এমপি)। এসময় শিলে ক্ষতি হওয়া কৃষিজমি ও বসতবাড়ি পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে জেলার কালিয়াকৈর উপজেলাধীন বোয়ালী ইউনিয়নের গাছবাড়ি, চাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে খলিশাজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হন মন্ত্রী।

এসময় তিনি বলেন, শিলাবৃষ্টিতে কালিয়াকৈরে উত্তরাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসল, ফলের বাগান, অনেক পরিবারের বসতবাড়ীর টিনের চাল ভেঙে গেছে। কৃষকরা যাতে তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে সেই জন্য তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সমান ভাবে সহায়তা ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ মার্চ ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবু ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। সেসময় তিনি শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তার আওতায় আনার ঘোষণা দেন।

জানা যায়, গত শনিবার (২৩ মার্চ) রাত নয়টার দিকে ঝড় বৃষ্টির সাথে কয়েক মিনিট মুশলধারে শিলাবৃষ্টি হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয় কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম। নষ্ট হয় ধানের জমি, ফলের বাগান ও বসতবাড়ির টিনের চাল। ফলে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন এসব এলাকার শতশত মানুষ।

বিষয়টি নজরে এলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা পরিদর্শনে যান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবু ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন শিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ কবির, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিম আজাদসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।

;

সরকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি টার্গেট করে প্রতারণা, পরীক্ষা ছাড়াই চাকরি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সরকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি টার্গেট করে প্রতারণা, পরীক্ষা ছাড়াই চাকরি

সরকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি টার্গেট করে প্রতারণা, পরীক্ষা ছাড়াই চাকরি

  • Font increase
  • Font Decrease

রেলপথ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, পররাষ্ট্র অধিদপ্তর, বিআরটিসি, বিএডিসি, সচিবালয়, ব্যাংক, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে চাকরির বিজ্ঞাপন বিভিন্ন পত্রিকায় আসার পরে একটি প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। পরীক্ষা ছাড়াই সহজেই সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাকরির নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করত একটি চক্র। চক্রটি ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও এখন পর্যন্ত কাউকে চাকরি দিতে পারেনি তারা। এভাবে গত কয়েক বছরে তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎকারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ফরিদুল ইসলাম (২৯), মো. নাসির চৌধুরী (৪৫), মো. নাসিম মাহমুদ (৪৩) ও জুয়েল রানা (৪৫)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন ও বেশকিছু ভুয়া নিয়োগপত্র, চেক ও স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।


তিনি বলেন, গ্রেফতাররা বেশ কিছুদিন ধরে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। অনুসন্ধানে এই চক্রের বিভিন্ন ধাপ লক্ষ্য করা যায়।

যেভাবে চাকরিপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা-

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, কোনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেই এই চক্রের মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে যেয়ে বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে যেকোনো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মতো তাদের হাতে লোক রয়েছে বলে আশস্থ করতো। চাকরিপ্রার্থী তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে তাদের কাছ থেকে ব্লু ব্যাংক চেক, ব্ল‍্যাংক স্ট্যাম্প ও সিভি সংগ্রহ করার পাশাপাশি মাঠকর্মী তাদের কাছ থেকে এডভান্স হিসেবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহণ করে।

ডিবি প্রধান বলেন, মাঠকর্মী তার কমিশনের নির্দিষ্ট টাকা রেখে বাকি টাকা ও সিভি ফিল্ড পর্যায়ের সাব এজেন্টের কাছে প্রেরণ করে। এরপর সাব এজেন্ট এই টাকা ও সিভি গ্রহণ করে সকল চাকরি প্রার্থীকে নির্দিষ্ট একটা দিনে ভাইভার কথা বলে ঢাকাস্থ এজেন্টের কাছে পাঠায়। পরবর্তীতে ঢাকাস্থ এজেন্ট আবাসিক হোটেলের রুমে বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আশপাশের কোনো একটি চায়ের দোকানে চাকরি প্রার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা গ্রহণ করে। ভাইভাতে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে প্রার্থীর কাছ থেকে এইদিন চুক্তির ৫০ শতাংশ টাকা গ্রহণ করে।

এরপর চক্রের আরেক সদস্য চুক্তির বাকি টাকা গ্রহণ করে প্রার্থীকে নির্দিষ্ট একটা দিনে যোগদানের কথা উল্লেখ করে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একটি ভুয়া আইডি কার্ড প্রদান করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

চাকরিতে যোগদান করতে গেলে জানতে পারে নিয়োগপত্র ভুয়া-

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে চাকরি প্রার্থীরা নিয়োগপত্রে উল্লেখিত তারিখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করতে গেলে প্রার্থীরা জানতে পারে, প্রতারক চক্রের দেওয়া নিয়োগপত্র আর আইডি কার্ডটি ভুয়া। ততোদিনে প্রত্যেক চাকরি প্রত্যাশিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় দশ থেকে বিশ লাখ টাকার মতো। পরে চক্রটি নিজেদের মধ্যে চুক্তির টাকা ভাগাভাগি করে নেয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, চক্রটি দুই/তিন বছর ধরে এভাবে চাকরি প্রত্যাশিদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের ব্যবহৃত হোয়্যান্সঅ্যাপ/মেসেঞ্জারে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা বিভিন্ন চাকরি প্রত্যাশীদের বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, কারা অধিদপ্তর, পররাষ্ট্র অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বিআরটিসি, বিএডিসি, এলজিইডি, সচিবালয়, বিভিন্ন ব্যাংক, প্রাথমিকের পিয়ন, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসার আউটসোর্সিং এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

গ্রেফতারদের যার যে দায়িত্ব ছিল প্রতারণার কাজে-

গ্রেফতার এ চক্রে জুয়েল রানা ফিল্ড পর্যায়ে মাঠ কর্মী হিসেবে, নাসিম মাহমুদ ফিল্ড পর্যায়ের সাব এজেন্ট হিসেবে ও নাসির চৌধুরী ঢাকাস্থ সাব এজেন্ট হিসেবে এবং চক্রের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে মো. ফরিদুল ইসলামের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

একজন ভুক্তভোগীর কাছে ১২ লাখ টাকা হাতিয়েছে চক্রটি এরপর মামলা করেন তিনি-

মামলার বাদীকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এমএলএসএস পদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে একটি নিয়োগপত্র প্রদান করে এ নিয়োগপত্র নিয়ে তিন মাস পরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য গেলে জানতে পারেন যে নিয়োগপত্রটি ভুয়া। পরবর্তী সময়ে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের ব্যবহৃত সকল যোগাযোগ নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মামলার বাদী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে চকবাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

ডিবি-সাইবারের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক জাগো নিউজকে বলেন, চক্রটি গত কয়েক বছরে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা কারে নিলেও কারো চাকরি দিতে পারেনি তারা। পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দপপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে কারো সঙ্গে কোনো লেনদেন করা যাবে না।

তিনি বলেন, গ্রেফতারদের বিরূদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আসামিদের ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ডিবির পরামর্শ-

১. যে কোনো চাকরিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। অনৈতিক উপায়ে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা না করা।

২. অনেক প্রতারক চক্র রয়েছে যারা ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়েও প্রতারণা করে থাকে। তাই বিজ্ঞপ্তিগুলোর সত্যতা যাচাই করার জন্য জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্র ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়েবসাইটের সহায়তা নেওয়া।

৩. সরকারি চাকরিতে কেবলমাত্র সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত নির্দেশনা মোতাবেক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা।

৪. প্রতারিত হলে নিকটস্থ থানা পুলিশকে তাৎক্ষনিক অবহিত করতে হবে।

;

রংপুর মেডিকেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে রোগীরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুর মেডিকেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

রংপুর মেডিকেলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

  • Font increase
  • Font Decrease

পঞ্চম দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজে গত রোববার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা মাসিক ভাতা ১৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। তারা জানান, গত বছর তারা মাসিক বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেতন–ভাতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।

এ দিকে, মধ্যস্তরের চিকিৎসকদের দিয়ে পালাক্রমে সেবা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারণে চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ রংপুরের আহ্বায়ক চিকিৎসক রানা জানান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদের দাবিতে পরিচালককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।

এদিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান ওয়ার্ডে কর্তব্যরত অবস্থায় বলেন, ইন্টার্নিদের অনুপস্থিতিতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে আমাদের বিভাগের মিড-লেভেল (মধ্যস্তর) চিকিৎসক বেশি। সেবার ত্রুটি করা হচ্ছে না।

;