‘বাক-স্বাধীনতা না থাকলে জীবন পশুর সমতুল্য’
বাক-স্বাধীনতা না থাকলে মানুষের জীবন পশুর সমতুল্য হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কারো ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে বিভিন্ন রকম মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। কারো মানহানি করলে দেওয়ানি মামলা করা যেতে পারে। আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া যেতে পারে। কিন্তু তার জন্য এই গণতন্ত্রের যুগে ফৌজদারি শাস্তি (হত্যার মতো) দেয়া দুঃখজনক। কারণ মানহানির জন্য ফৌজদারি শাস্তি পাওয়া সামন্তযুগীয় ধারণা। অন্য কোনো স্বাধীনতা থাকলেও যদি বাক-স্বাধীনতা না থাকে তবে মানুষের জীবন পশুর সমতুল্য হয়ে যায়।’
শনিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে ‘হুমকির মুখে বাক-স্বাধীনতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শাহদীন মালিক বলেন, ‘কারো মানহানির জন্য ফৌজদারি শাস্তি দেয়া এই গণতন্ত্রের যুগে বেমানান। গণতন্ত্রের কথা বলে স্বাধীনতার কথা বলে আমরা ১৮০০ সালের পেছনে চলে যাচ্ছি। ১৬০০ সালের দিকে রাজা-বাদশাহদের আমলে কারো ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হতো।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশে পরাধীন হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে যন্ত্রণার আর কিছু হতে পারে না। আমরা দেখেছি অন্যান্য বড় বড় দেশে যখন সম্পাদক সম্মেলন হয় তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করে রাষ্ট্রপতিকে নাস্তানাবুদ করে। আর আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রীর বাক্যবাণে সাংবাদিকরা নাস্তানাবুদ হয়। সে জন্য এখন বাক স্বাধীনতা কোথায় আছে সেটা আলোচনার খুব বেশি প্রয়োজন হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আবরারের (বুয়েট ছাত্র) ঘটনা দেখেছি। এমন বহু আবরার আছে, যারা মারা যায়নি বলে তাদের খবর আমরা জানি না। এমন অসংখ্য ছাত্র আছে যারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। দেশে কোনো স্বৈরশাসক থাকলে আমরা তার ব্যাপারে কথা বলতে ভয় পাবো, এটা তবুও মানা যায়। কিন্তু ভারতের ব্যাপারে কথা বলার জন্য আমাদেরকে কেন নির্যাতিত হতে হবে? ’
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবাইয়াত ফেরদৌস, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।