১০৩ বছরে ঐতিহ্যের কারমাইকেল কলেজ



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর
কারমাইকেল কলেজ/ ছবি: সংগৃহীত

কারমাইকেল কলেজ/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১০৩ বছরে পা রাখলো তিনকালের সাক্ষী কারমাইকেল কলেজ। উত্তরের অক্সফোর্ডখ্যাত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানের শোষণ আর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় দেখেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি যেন ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষা-দীক্ষা, আন্দোলন-সংগ্রাম, এবং ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক।

১৯১৬ সালের ১০ নভেম্বর কারমাইকেল কলেজ যাত্রা শুরু করে। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার গভর্নর লর্ড থমাস ডেভিড ব্যারন কারমাইকেল এই ঐতিহাসিক কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার নামানুসারেই কলেজের নামকরণ করা হয় কারমাইকেল কলেজ।

১৯১৭ সালের জুলাই মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এই কলেজে আইএ ও বিএ ক্লাস খোলার অনুমতি দেয়। সেই সময় থেকে প্রায় দুই বছরের জন্য কলেজটির পঠন ও পাঠনের কাজ চলে রংপুরের বর্তমান জেলা পরিষদ ভবনে। এরপর ১৯১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কারমাইকেল কলেজের মূল ভবনের উদ্বোধন করা হয়।

কারমাইকেল কলেজের একটি পুরনো স্থিরচিত্র/ ছবি: সংগৃহীত

অবিভক্ত বাংলার যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিপুল খ্যাতি অর্জন করেছিল এর মধ্যে কারমাইকেল কলেজ রয়েছে প্রথম সারিতে। ইংরেজ আমলের অবিভক্ত বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার প্রসার ও প্রচারের জন্য অসামান্য খ্যাতির অধিকারী এই কারমাইকেল কলেজ। তৎকালীন রংপুর, দিনাজপুর অঞ্চলসহ অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুড়ি, আসাম ও সংলগ্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। তৎকালীন সময়ে রংপুরে উচ্চবিদ্যালয় পর্যায়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও কলেজ পর্যায়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না।

প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্যে ঘেরা নয়নাভিরাম এই ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয় প্রায় আটশ বিঘা জমি নিয়ে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রিসহ ২২টি বিষয়ে সম্মান ও স্নাতকোত্তরে অধ্যয়ন করছেন প্রায় সাড়ে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী।

জমিদারি স্থাপত্যের যেন এক অনন্য নিদর্শন। চারদিকে সবুজের সমারোহের মধ্যে যেন গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপত্য কীর্তি কারমাইকেল কলেজের শ্বেতশুভ্র মূল ভবন। কলেজে ঢুকতেই হাতের বাঁয়ে পড়বে শিক্ষকদের আবাসিক ভবন। একটু এগিয়ে গেলে শিক্ষকদের ডরমেটরি, যা ‘হোয়াইট হাউস’ নামে পরিচিত। পাশেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কিউএ মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয় (কলেজ প্রাইমারি স্কুল)।

এর বিপরীতে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আরেক বিস্ময় বৃক্ষ ‘কাইজেলিয়া’। এই কাইজেলিয়া বৃক্ষটি বিলুপ্ত-প্রজাতির বৃক্ষ। এর বয়সও শতবর্ষ পেরিয়েছে। এটি মূলত আফ্রিকার মহাদেশ থেকে আনা কোন এক বৃক্ষপ্রেমীর স্মৃতির সাক্ষী। বিলুপ্ত সেই কাইজেলিয়াকে যুগের পর যুগ ধরে রাখতে তৈরি হয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কারমাইকেল কাইজেলিয়া শিক্ষা-সংস্কৃতি সংসদ (কাকাশিস)। কাইজেলিয়া বৃক্ষ থেকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে গেলে চৌরাস্তা বা জিরোপয়েন্ট।

এছাড়া রয়েছে একটি সুদৃশ্য বিশাল মসজিদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, দ্বিতল ছাত্রী বিশ্রামাগার, বিভিন্ন বিভাগীয় ভবন, ক্যান্টিন, শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল, সাব পোস্ট অফিস, অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম (নির্মাণাধীন), একটি টালি ভবন (বিএনসিসি ও স্কাউট), ছাত্র বিশ্রামাগার, পুলিশ ফাঁড়ি, প্রশাসনিক ভবন, বিশাল দুটি খেলার মাঠ। মূল ভবনের পূর্বে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক ভাস্কর্য ‘প্রজন্ম’ যা নতুন মাত্রা যোগ করেছে মূল ভবনের নান্দনিকতায়।

 কারমাইকেল কলেজে/ ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণে শহীদ মিনার, তিনতলা বিজ্ঞান ভবন (সেকেন্ড বিল্ডিং), তিনতলা কলা ও বাণিজ্য ভবন (থার্ড বিল্ডিং), দ্বিতল রসায়ন ভবন, নানা ফুলে সজ্জিত একটি বাগান। রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের এক বিশাল ভারসমৃদ্ধ লাইব্রেরি, যা কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন রংপুর জেলা গ্রন্থাগার থেকে ২৫০টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। কলেজের মূল ভবনের ঠিক মাঝে রয়েছে ‘আনন্দমোহন হল’।

উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ, যা ‘বাংলা মঞ্চ’ নামে পরিচিত। কলেজের সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র এটি। পড়ার ফাঁকে বাংলা বিভাগের পাশে লিচুতলার সংস্কৃতি মঞ্চে নানামুখী সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠে কলেজটির শিক্ষার্থীরা। রয়েছে একাধিক সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিতর্ক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সব মিলিয়ে সারা বছরই প্রাণোচ্ছল রংপুর কারমাইকেল কলেজ।

এই প্রতিষ্ঠানে বহু খ্যাতিমান পণ্ডিত, গবেষক ও জ্ঞানতাপসের ছোঁয়া রয়েছে। এখানে পড়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনের নেত্রী জাহানারা ইমাম, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার আনিসুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতিতে নাম করা আরো অনেকে।

এদিকে তিন বছর আগে স্থগিত হওয়া কলেজ প্রতিষ্ঠার শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানটি উদযাপনে একদিনের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে কলেজ প্রশাসন। ‘শতবর্ষে শতপ্রাণ, ঐতিহ্যের জয়গান’ স্লোগানে আগামী ২৯ নভেম্বর এই উৎসব অনুষ্ঠান হবার কথা।

অন্যদিকে কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (১১ নভেম্বর) কলেজ ক্যাম্পাসে বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। বিকেলে র‌্যালী, কেককাটাসহ সাংস্কৃতিক আয়োজন রয়েছে।

কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান আয়োজনকে ঘিরে ইতোমধ্যে কলেজটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু তৎকালীন অধ্যক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে কাঙ্ক্ষিত অনুষ্ঠানটি হয়নি।এবারও স্থগিত হওয়ার অনুষ্ঠানটি উদযাপনের জন্য কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনে নিবন্ধন করেছে।

   

বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় খাদিজা আক্তার (২৫) নামের এক নারী প্রাণ হারিয়েছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৪ টায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের জোকারচর বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত খাদিজা আক্তার উপজেলার দৈবগাতী গ্রামের ইকবাল হোসেনের স্ত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে জোকারচর বাসস্ট্যান্ডে সড়ক পারাপার হওয়ার জন্য সড়কের দক্ষিণপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। পথিমধ্যে উত্তরবঙ্গগামী বেপরোয়া গতির একটি মোটরসাইকেল ওই নারীকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্বজনরা খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৭টা ১০ মিনিটের দিকে সে মারা যায়।

এ ঘটনায় বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. লিটন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া নিহতের মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

;

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির আমন্ত্রণে এক ছাদের নিচে সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন অংশগ্রহণ করেছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) ঢাবির ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ‘শিক্ষাঙ্গনে সংকট, ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। এ আয়োজনে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ছাত্র সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।

এ আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, বিশ্লেষক ও ঢাবির বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

(বাম থেকে) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

এ আয়োজনে সভাপতির বক্তব্যে ডুজা সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের মতানৈক্য দেখি বা ক্যাম্পাসে তাদের সহাবস্থান সেভাবে লক্ষ্য করি না। তবে আজকে ডুজার আয়োজনে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে আমরা এক ছাদের নিচে আনতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য একটা বিশেষ প্রাপ্তি। আমরা সাংবাদিক সমিতি চাই ক্যাম্পাসে সবসময়ই রাজনৈতিক সহাবস্থান বিরাজ করুক এবং শিক্ষার্থীরা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা করার সুযোগ লাভ করে। সকলকে এই আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আজকে ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে রাখা হয়েছে, যা আধুনিক যুগের ছাত্র রাজনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাকসুর নির্বাচন যেনো অতি সত্বর দেওয়া হয়৷ তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের মিটিং করা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের অবাধ নির্বাচন ও বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে৷ হলগুলো রাজনৈতিক সংগঠন কাছ থেকে মুক্ত করে শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা হোক।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক চর্চায় ডাকসুর ভূমিকা রয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকারও৷ আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র রাজনীতিকে আরও স্মার্ট ও যুগোপযোগী করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরি। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাস ভায়োলেন্স কমিয়ে আনা সম্ভব। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট, লাইব্রেরি সংকট ও অন্যান্য সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাস্টারপ্লান দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল এবং পাকিস্তান আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে তা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন পরিবর্ধিত হয়েছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও পরিবর্তন আনা জরুরি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও প্রশাসনের সবাইকে অনুরোধ জানাই, যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় আরও উন্নয়ন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের আস্থার সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা ছাত্রনেতাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক বক্তব্য শুনেছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। প্রশাসন চায় বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংঠনের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করে। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি। তবে এই দায়িত্ব প্রশাসন বা কোনো ছাত্রসংগঠনের একার নয়। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করবে। তাহলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেস্ট হিউম্যান রিসোর্স প্রোভাইড করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, লাইব্রেরি সংস্কার, আবাসন সংকট সমাধানের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি মাস্টারপ্লানের কাজ শুরু হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র পালটে দিতে পারবো এবং শিক্ষার্থীদের অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবো।

উল্লেখ্য, এ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাবি সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) রাগীব নাঈম, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি (অন্য অংশ) দীপক শীল, সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ১৮দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে ঈদের আগে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম। দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে জাহাজটির মালিকপক্ষের আলোচনা চলমান থাকলেও এখনো নাবিকদের মুক্তি নিয়ে বলার মতো তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এবার হয়তো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করা হচ্ছে না নাবিকদের।

ঈদের আগে নাবিকদের উদ্ধার করার কথা প্রচার হচ্ছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে জাহাজটির মালিক চট্টগ্রামভিত্তিক কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা চলমান আছে। তবে এখনো বলার মতো কিছু হয়নি। নাবিকদের পরিবারের সদস্যদেরও মানসিকভাবে প্রশান্তিতে রাখার একটা বিষয় আছে। সেজন্য হয়তো কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করা কঠিন।

১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকবার জায়গা বদলের পর বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা।

প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তখন মুক্তিপণ আদায়ের পর জাহাজ থেকে নেমে গিয়েছিল দস্যুরা। ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার এখনো মুক্তিপণের বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায়নি। আর মুক্তিপণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে তেমন কিছু জানায়নি। মুক্তিপণ চাওয়ার পর মালিকপক্ষ থেকে দর কষাকষি করা হবে। তখন ৪০দিনে দুই পক্ষের মধ্যে মুক্তিপণের বিষয়ে সমাঝোতা হয়েছিল। এরপর চাহিদা অনুযায়ী অর্থ পাঠানো হয় দস্যুদের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়। পরে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে জাহাজে এসে সেই টাকা ভাগ করে দস্যুরা। এরপরই জাহাজ থেকে নেমে যায় দস্যুরা। অর্থাৎ সমাঝোতার পরও মুক্তি পেতে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল। এবারও সেই প্রক্রিয়ায় মুক্তি মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়।

অবশ্য নাবিকদের উদ্ধারে দেরি হলেও ভালো খবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন। দস্যুদের পক্ষ থেকেও ভালো আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের ওপর কোনো নির্যাতন কিংবা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে না। এরই মধ্যে জাহাজের নাবিকদের জন্য তীর থেকে দুম্বা ও ছাগল আনা শুরু করেছে দস্যুরা। ফলে খাবার নিয়ে নাবিকদের মধ্যে থাকা দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে গেছে। অবশ্য জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ আছে।

অবশ্য জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মুখপাত্র এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হলেও জলদস্যুরা তাতে ভালোভাবে সাড়া দিয়েছে। নাবিকদের সঙ্গেও তারা ভালো আচরণ করছে। নাবিকদের তাঁরা নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দিচ্ছে, জাহাজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে অংশ নিতে দিচ্ছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে দস্যুরা। আশা করছি খুব দ্রুত নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে তাদের সঙ্গে সমাঝোতা হবে। সবমিলিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সংকটের সমাধান করে নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

;

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক। যদি দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা যায় তাহলে শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন ত্বরান্বিত হবে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে দ্বিতীয় ডিআরএমসি জাতীয় রমাদান ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, ইসলামের সংবিধান হলো মহাপবিত্র আল কুরআন। এটি কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথপ্রদর্শক। মুসলিমদের জন্য রয়েছে আরেকটি বিধান সেটি হলো মহানবী (স.) এর হাদীস। এই দুটিকে আঁকড়ে ধরতে পারলে পথভ্রষ্ট হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। বরং কুরআন ও হাদীসের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে পারলে পরকালে পুরস্কার হিসেবে রয়েছে চির শান্তির জান্নাত।

তিনি বলেন, আমরা যদি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইসলামের আলো সঞ্চারিত করতে পারি তাহলে অবশ্যই তারা আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। তারা সকল ধরণের অন্যায়-অনাচার, পাপাচার থেকে বিরত থাকার শিক্ষা পাবে এবং তারা আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে। আমরা গড়ে তুলতে পারবো একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নৈতিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তাছাড়া, শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননে কর্তব্যবোধ, মানবাধিকার সচেতনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা, সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ ইত্যাদির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণ ও সঞ্চারিত করার জন্য ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ইসলামিক কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

;