ঢাকায় সাত দিনব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে 'উন্নয়ন মেলা-২০১৯'। মেলাটির আয়োজন করবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। আগামী ১৪ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলাটি শুরু হবে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিকেএসএফ'র সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উন্নয়ন মেলাটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। উদ্বোধনী অধিবেশনে দরিদ্র বিমোচন, টেকসই উন্নয়ন ও মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করবে সংগঠনটি।
তিনি আরো বলেন, পিকেএসএফ'র বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও মেলায় পাঁচ দিন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনার গুলোতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সাংসদ, সচিব, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী, সমাজকর্মী, গবেষক, শিক্ষাবিদসহ অনেকেই অংশগ্রহণ করবেন।
খলীকুজ্জামান বলেন, মেলায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিকেএসএফ'র সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষণা ও তথ্য প্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল থাকবে। বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ হাজারো পণ্য থাকবে এই উন্নয়ন মেলায়।
মেলাটি ১৪ থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
বগুড়ায় মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধন (৬) হত্যার সাথে জড়িত সুকুমার দাসকে (২৫) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নিহত বন্ধনের বাবা রবি দাস বাদী হয়ে সকুমার দাসকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তয়ন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গ্রেফতার সুকুমারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কেও সুকুমার মুখ খুলছে না। বারবার বলছে আমার ভুল হয়ে গেছে। সুকুমারকে অনেকে মানসিক রোগী বলে দাবী করলেও তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এদিকে রবিদাসের দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে তার স্ত্রী কাকলী দাসের মামা সুকুমার। মামা-ভাগ্নির পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সুকুমার এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে পারিবারিক বিরোধের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের পরপরই সুকুমারকে পুলিশ আটক করে এবং তার দেখানো মতে বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধান কাটা কাঁচি জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া সদরের শশিবদন গ্রামে মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধনকে তার মায়ের মামা সুকুমার ঘরে ডেকে নিয়ে কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
তিনি বলেন, দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান চালায়। তবে আমরা কোনো ভুক্তভোগীকে পাইনি। আগুন লাগার পরপরই আইসিইউতে থাকা সবাইকে সরিয়ে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা।
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধরণা করছি আইসিইউর ভেতরে এসি ছিলো। সেটা থেকে হয় তো আগুন লেগেছে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিলো সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় অক্সিজেন লাইনটি বন্ধ করা হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে ১১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৫০০ টাকা ও মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল।
বৃহষ্পতিবার রাতে পুলিশের পৃথক পৃথক টীম কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।
আটককৃতরা হচ্ছেন- গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের ছাদের আলীর ছেলে স্বপন (৩৮) ও আয়ুব আলীর ছেলে লিটন (৪০), পলাশী পাড়ার মৃত সুজা উদ্দীনের ছেলে টেফেন ওরফে খালিদ মাহমুদ (৩০), আলমডাঙ্গার নগর বোয়ালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মামুনর রশীদ (৩০) ও ছাতিয়ান গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে স্বজল (২৭)। এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু সাপেক্ষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার রোধে গাংনী থানা পুলিশ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামে মাদকের মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
জাতীয়
টানা চার দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই যেন তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই উপরে উঠছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, তীব্র তাপদাহে প্রাণীকূল ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও যেন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন ১২ এপ্রিল থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৯ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই গরমে হিট স্ট্রোকের ঝু্ঁকি থাকে, তাই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।
এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, কড়া রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার নির্জন পরিবেশ খুঁজে বাতাসের জন্য প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। তবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ তীব্র গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।
আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে বাইক বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দীন নামের এক যুবক জানান, বাইক নিয়ে হাটে এসে পড়েছি বিপাকে। একে তো খোলা মাঠে হাট, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে। রোদ আর গরমে মনে হচ্ছে শরীর একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে ছাতাও নিয়ে আসা হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদরের ডাব বিক্রেতা শমসের মন্ডল জানান, এই তীব্র গরমে তার ডাবের চাহিদা ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ ডাব তিনি বাজারে নিয়ে আসেন, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ একটু স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন।
এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, গরমের সাথে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ার রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এই চিকিৎসক পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।