প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে রংপুরে ঝাড়ু মিছিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর
প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে রংপুরে ঝাড়ু মিছিল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে রংপুরে ঝাড়ু মিছিল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠন যুবসংহতির মিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে রংপুর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীতে পৃথক পৃথক ঝাড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা।

সন্ধ্যায় রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব লেন থেকে জেলা ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা যৌথভাবে ঝাড়ু মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জাহাজ কোম্পানি মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেওয়া যুবসংহতির নেতাদের বিরুদ্ধে আজ রাতের মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে রংপুরে ঝাড়ু মিছিল
প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদে রংপুরে ঝাড়ু মিছিল

অন্যদিকে, একই সময়ে মহানগর যুবলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগটি অপপ্রচার বলে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর জাতীয় যুবসংহতি। রাতে নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে যুবসংহতির আহ্বায়ক শাহিন হোসেন জাকির এ দাবি করেন।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় যুবসংহতির একটি মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিদ্রুপ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানার (ওসি) আব্দুর রশীদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একটি জিডি করেছে। আমরা তার অভিযোগটি খতিয়ে দেখছি।

   

কুষ্টিয়ায় শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ছাতা-পানি ও স্যালাইন বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ছাতা-পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ছাতা-পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহে কুষ্টিয়ার মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। মৌসুমের বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সর্বত্রে ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। রোদের তীব্রতা বেশি হওয়ায় খুব অল্পতেই মানুষ হয়রানি হচ্ছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কুষ্টিয়ায় শ্রমজীবী ও রিকশা-ভ্যান চালকদের মাঝে মাথার ছাতা ও হাতে বিনামূল্যে পানির বোতল এবং খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া শহরের থানা ট্রাফিক মোড়ে দুই শতাধিক শ্রমজীবী ও রিকশা-ভ্যান চালকদের মাঝে এসব তুলে দেন 'স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থা' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

'স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থা' সংগঠনের সভাপতি সাদিক হাসান রহিদের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের উপদেষ্টা, সাংবাদিক এসএম জামালের পরিচালনায় এ কার্যক্রমে অংশ নেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো: সোহেল রানা, খেয়া রেস্তোরাঁর জেনারেল ম্যানেজার সাইদুল বারী টুটুলসহ সংগঠনের সদস্য রুম্পা, চমক, সাব্বির, তানজিল, রাহুল ওবাইদুলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এমন মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ সোহেল রানা বলেন, প্রচণ্ড গরমে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত তখন কুষ্টিয়ার এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্ন প্রয়াস যুব সংস্থা শহরের মধ্যে রিকশা-ভ্যান চালকদের মাথার ছাতা, অসহায় ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য পানির বোতল ও খাবার স্যালাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এতে করে গরমে খেটে খাওয়া মানুষকে পানি ও স্যালাইন বিতরণ করার ফলে অনেক সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এভাবেই আরও অনেক সংগঠন এবং বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

সংগঠনটির সভাপতি সাদিক হাসান রহিদ বলেন, এবারে তীব্র তাপদাহে শহরের পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। চিকিৎসকরা এই গরমে বেশি বেশি পানি পান করতে উপদেশ দিচ্ছেন। পথে চলাচলের সময় পানির সংকট চোখে পড়ে। তাই সংগঠন থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের খাবার পানির বোতল, খাবার স্যালাইনসহ চালকদের মাঝে মাথার ছাতা বিতরণ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যহত রাখবো বলেও জানান তিনি।

সংঠনটির স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, তীব্র তাপদাহের কারণে নিজেদের অর্থায়নে আজকে এই আয়োজন করা হয়েছে। গরমে এ মৌসুমে তাপদাহ যতদিন প্রবাহমান থাকবে ততদিন তারা আরও নতুন নতুন উদ্যোগ হাতে নেবেন।

;

রাঙামাটিতে বৃহস্পতিবার সড়ক-নৌপথ অবরোধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,রাঙামাটি
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটিতে আগামী ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) অর্ধ দিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা ইউনিট।

বান্দরবানে কেএনএফ-বিরোধী যৌথ অভিযানের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা, নির্বিচার গণগ্রেফতার, আটক, হয়রানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়ের ওপর অন্যায় বাধা-নিষেধের প্রতিবাদে এ অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি । ওই দিন ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে রাঙামাটি জেলাব্যাপী এই অবরোধ চলবে বলে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রেসবার্তায় জানানো হয়েছে।

উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইউপিডিএফ রাঙামাটি জেলা ইউনিট ও তার সহযোগী গণসংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় উক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ইউপিডিএফ সংগঠক সচল চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বান্দরবানে চলমান কেএনএফ-বিরোধী অভিযানের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা, নারী-শিশুসহ গণগ্রেফতার ও হয়রানির তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও সভ্য দেশে এ ধরনের জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘন চলতে পারে না।

সভায় অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, নিরীহ লোকজনকে হয়রানি বন্ধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের ওপর আরোপিত অন্যায় ও বেআইনি বাধা-নিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, পানি-বিদ্যুতের সংযোগ প্রদান ও মেরামতের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি, জরুরী ঔষধ, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক পরিবহনকারী যান অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে।

ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দ উক্ত অবরোধ সফল করার জন্য বাস-ট্রাক-লঞ্চসহ সকল যান ও পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতি ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধও জানানো হয়েছে।

;

বৈশাখের তাপদাহের মাঝে দেখা মিলল পৌষের সকালের ঘন কুয়াশা!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে বৈশাখের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও রাতে তীব্র গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে। এমন তাপদাহের মাঝে বৈশাখের সকালে যেন দেখা মিলল পৌষের সকালের ঘন কুয়াশার। এমন অসময়ে ঘন কুয়াশার মতো আসলে এটি কী কুয়াশা না অন্য কিছু? তা নিয়ে স্থানীয়দের কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চর ঈশ্বরদিয়া খালপাড়ে এমন দৃশ্যের দেখা মিলে।

এদিন ময়মনসিংহ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

ভোর থেকে ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিল পুরো এলাকা। সঙ্গে ছিল মৃদু বাতাসও। ফলে কিছুটা ঠাণ্ডা অনুভূত হয়েছে। কুয়াশা ভেদ করে ঠিক কয়েক মিনিট পরেই সূর্য উঁকি দিয়ে উঠে। আবার কিছুক্ষণের মাঝেই কুয়াশা কেটে যায়। তবে, এর আগে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, আজ ভোরেই ঘুম থেকে জেগেছিলাম। কিন্তু ঘুম থেকে সকালে যে ঘন কুয়াশা দেখেছি, আগে কখনো দেখিনি।

একই এলাকার বাসিন্দা জুয়েল মিয়া বলেন, ভোরে হাঁটতে বের হয়ে ঘন কুয়াশা দেখেছি। ধান গাছের ডগায় কুয়াশা জমতে দেখেছি। তবে, এমন আজব দৃশ্য এর আগে কখনো দেখেনি।

ময়মনসিংহ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, এটা অস্বাভাবিক কিছু না। দিন এবং রাতের প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে জলীয় বাষ্পও কুয়াশার মত দেখা যেতে পারে। তবে, আমি বর্তমানে দেশের বাইরে আছি। দেশে থাকলে হয়তো পর্যবেক্ষণ করে আরও কিছু বলা যেতো।

;

রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ

রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ

  • Font increase
  • Font Decrease

আঁখির হয়তো স্বপ্ন ছিল সমুদ্র দেখার। সরাসরি না পারলেও স্টুডিওতে ছবি তুলে পেছনে বসিয়ে নেন সমুদ্রের দৃশ্য। অন্যদিকে শাহেদুলের হয়তো স্বপ্ন ছিল উড়োজাহাজে চড়ার! তাইতো স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে স্টুডিওতে এমন ব্যাকগ্রাউন্ড রেখে ছবি তুলেছিলেন! প্রায় এক যুগ আগে তোলা এসব ছবি এখন শুধুই স্মৃতি। ২০১৩ সালে হাজারো হতভাগ্য শ্রমিকের সঙ্গে সলিল সমাধি ঘটেছিল এই দুজনেরও। এখন সেই স্বপ্নের আদলে তোলা ছবিগুলোতেই স্বজনরা খুঁজে বেড়ান তাদের স্মৃতি। গল্পগুলো বলতে গিয়ে ভিজে আসে চোখ।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সাভার রানা প্লাজার সামনে ‘রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর: হাজারো প্রাণ ও স্বপ্নর গল্প’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

দোষীদের শাস্তি ও সম্মানজন ক্ষতিপূরণের দাবিতে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ কর্মসূচির প্রথম দিনে আয়োজিত সভায় স্বজনরা স্মরণ করেন নিহত শ্রমিকদের।


এর উদ্বোধন করেন রানা প্লাজা ভবনে দুই দিন আটকা থেকে উদ্ধার হওয়া আহত শ্রমিক জেসমিন।

সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে আলোচনা করেন আহত জেসমিন, নিহত শ্রমিক আঁখি আক্তারের মা নাসিমা আক্তার, নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা আক্তার, নিহত শাহীদার মা এবং  গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ আরও অনেকে।

প্রদর্শনীতে চার আলোকচিত্রীর তোলা ছবি ও পোশাক শ্রমিকদের সন্তানদের সাতজনের আঁকা ছবি, জীবিত থাকা অবস্থায় স্টুডিওতে তোলা ২০ শ্রমিকের ছবি প্রদর্শন করা হয়।

এরমধ্যে একটি ছবি নিহত শাহেদুলের। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে স্টুডিওতে ছবি তুলে, ব্যাকড্রপে উড়োজাহাজের ছবি দেওয়া। হয়তো উড়োজাহাজে চড়ার স্বপ্ন ছিল তার!

আরেকটি ছবি ছিল নিহত আঁখির। হয়তো সমুদ্র ভালোবসতেন তিনি। কিন্তু যাওয়া হয়নি কখনো। তাই স্টুডিও থেকে স্বপ্নের ছবি তৈরি করিয়ে নেন সেই সমুদ্রর পারে। আখি আক্তার (১৮) ও তার বন্ধুরা রানা প্লাজার সপ্তম তলার নিউ ওয়েব স্টাইল লিমিটেড কারখনায় কাজ করতেন। বন্ধুদের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ ১৪২০ , ১৪ এপ্রিল ২০১৩–এই ছবিটি তোলা। তার ঠিক ১০ দিন পর ২৪ এপ্রিল ২০১৩ থেকে রানা প্লাজার ধসের পর থেকে আঁখি নিখোঁজ। জানা যায়, এই ছবির কেবল একজন বেঁচে আছে, আঁখিসহ এই ছবির সকলেই নিহত বা নিখোঁজ।


আয়োজকরা জানান, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে এসব শ্রমিকের প্রাণ ও স্বপ্ন নি:শেষ হয়ে যায়। রানা প্লাজার সামনে প্রদর্শনী করে সে আবারও সেই অতীতের স্মৃতিকে সামনে আনা হয়েছে। এই ঘটনাকে ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখতে এবং তরুণদের লড়াইয়ে প্রেরণা দিতেই এই প্রদর্শনী। রানা প্লাজার শ্রমিকদের মতো যাতে আর কারো যাতে অকালে মরতে না হয়, এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন তারা।

প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে আলোচনায় আহত শ্রমিক জেসমিন বলেন, এমনভাবে দুই দিন আটকা ছিলাম বাঁচার কোনো আশা ছিলো না। একজন অচেনা মানুষ আমাকে আগলে রেখে বাঁচিয়েছিলো। তখন কে পুরুষ কে নারী কে হিন্দু কে মুসলমান ভাবার সুযোগ ছিলো না। বাঁচার চরম ইচ্ছা ও সন্তানকে দেখার ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছু মাথায় আসেনি।

তিনি বলেন, ১১ বছর ধরে সেই দু:সহ স্মৃতির ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি মনে ও শরীরে। অথচ এখনো দোষীদের শাস্তি হয়নি। দোষীদের শাস্তি হলে আমরা প্রাণে একটু শান্তি পেতাম।

সভায় বক্তারা বলেন, ১১ বছরেও ১১৭৫ জন প্রাণ হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্তিত হয়নি। কারখানার ভবন মালিক সোহেল রানা ছাড়া অন্যান্য মালিক, সরকারি কর্মকর্তারা জামিনে জেলের বাইরে আছেন। সোহেল রানাও গত বছর জামনি পায়। পরবর্তীতে তার জামিন উচ্চ আদালত স্থগিত করে।

তাদের মতে, বিচারের এই ধীরগতি সরকার ও রাষ্ট্রের মালিকপক্ষ ও দোষীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের এবং তাদের বাঁচিয়ে দেবার প্রচেষ্টারই সামিল।

তারা বলেন, যে রাষ্ট্রে কোনো গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ নাই, জনগণের মত প্রকাশের সুযোগ নাই, সেখানে রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকরা আরো বিপর্যস্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নাই।

তারা আরও বলেন, দোষীদের সর্বেবাচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নাই।

ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে তারা বলেন, নিহত ও আহত পরিবারকে ১১ বছর আগে যে আইনি ক্ষতিপুরণ বা অনুদান দেওয়া হয়েছে তা কখনোই সম্মানজনক বা মর্যাদাপূর্ণ নয়। শ্রম আইনে ক্ষতিপুরণের আইন যা বদল হয়েছে তা অতি নগন্য। ১ লাখ এবং দেড় লাখ থেকে ২ লাখ ও আড়াই লাখ পর্যন্ত বাড়ানো কোনো শ্রমিককে মানুষ হিসাবে গণ্য না করারই উদাহরণ।

বক্তারা বলেন, একদিকে একজীবনের সমপরিমাণ সম্মানজনক-মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপুরণ প্রদানের ব্যবস্থা না করা। অন্যদিকে ব্রান্ড, এনজিও এমনকি সরকারের দফায় দফায় কিস্তিতে শ্রমিকদের অর্থ সহযোগিতার ও নানা প্রশিক্ষণের নামে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। যাতে শ্রমিকরা বিচারের দাবিতে সংগঠিত না হয়ে, ভিক্ষুকের মতো কেবল সহায়তা খোঁজে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তারা বলেন, ক্ষতিপূরণ কোনো ভিক্ষা নয়, এটি শ্রমিক ও নাগরিকের আইনি অধিকার। এই অধিকার রক্ষায় এক হওয়ার আহবান জানান তারা।

আয়োজকরা জানা, দুই দিন ব্যাপী কর্মসূচিতে আগামীকাল ২৪ এপ্রিল ২০২৪ রানা প্লাজার সামনে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ ও প্রতিবাদী র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে।

;