‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ভাস্কর্যের বেহাল দশা



সাদিয়া কানিজ লিজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের বেহাল দশা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের বেহাল দশা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্য হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফুলার রোডের স্বাধীনতা সংগ্রাম, যা বাঙালি জাতির মহিমান্বিত সংগ্রামের ইতিহাস বহন করে। ভাস্কর্যটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় নেতৃত্বের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আর তার মাথার উপর দিয়ে লাল সবুজ পতাকা উড়ছে সগৌরবে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের নজরদারি আর সংস্কারের অভাবে সেই ভাস্কর্যের এখন বেহাল দশা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আজ এগুলো নষ্ট হতে বসেছে।

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। বাঙালি জাতির বিভিন্ন সংগ্রামের চিত্র এ ধরনের ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে। নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস উন্মোচন করতেই ভাস্কর্যগুলো নির্মাণ করেছিলেন ভাস্কর শামীম শিকদার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মূল ভাস্কর্যের পাদদেশে রাখা ছোট ছোট ভাস্কর্যগুলোর চুনকাম উঠে গিয়ে জরাজীর্ণ অবস্থা। কয়েকটি ভেঙেও গেছে। কয়েকটিতে নামফলক নেই। আর যেগুলোর নামফলক আছে সেগুলোও নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। এছাড়া বড় ভাস্কর্যটিতে অনেক আগাছাও জন্মেছে। আর সেখানের লাইটিং ব্যবস্থাও প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে।

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং ছুটির দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ ভাস্কর্য চত্বরটি খোলা থাকার কথা। কিন্তু অধিকাংশ সময় এই চত্বর বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এছাড়া চত্বরের ভেতরে একটি তথ্য কেন্দ্র থাকলেও তা অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘সবগুলো ভাস্কর্যই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্য বহন করে। অবশ্যই এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ দরকার। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবো।’

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলার কারণেই এগুলোর আজ বেহাল দশা।রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আমাদের এই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।’

শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মাহি বলেন, ‘আসলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আর নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতির দিকে তাদের খেয়াল কম। আমাদের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর প্রতি অবহেলা খুবই হতাশাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই এগুলোর তদারকি করতে পারে। ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর প্রতি তাদের অনাগ্রহের কারণেই এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

ডাকসুর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী বলেন, ‘তথ্য সংগ্রহ করে আমরা সবগুলো ভাস্কর্যের একটা তালিকা তৈরি করছি। শেষ হলেই আমরা ভিসি স্যারের কাছে একটি প্রস্তাবনা জমা দিবো। এগুলো সংস্কারের পাশাপাশি নামফলক যুক্ত করার সুপারিশ করা হবে।’

তথ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্যকেন্দ্র অবশ্যই খোলা থাকতে হবে। সেখান থেকেই তো মানুষ তথ্য সংগ্রহ করবে। এটা বন্ধ থাকা উচিত নয়।’

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

ভাস্কর্যটি মহান ভাষা অন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬-র স্বাধীকার আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১-এর ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান, ২৫ মার্চের কালরাত্রি, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এসব আন্দোলনে নিহত ১৮ জন শহীদের মুখচ্ছবি দিয়ে পুরো ভাস্কর্য নির্মিত। সবার নিচে ভাষা শহীদের ভাস্কর্য এবং সবার উপরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। এতে আরও যুক্ত আছে বাংলাদেশের পতাকা।

জরাজীর্ণ ফলক

বড় ভাস্কর্যটি স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরে, আর এটিকে কেন্দ্র করে আরও ছোট ছোট মোট ১১৬টি ভাস্কর্য রয়েছে। এসব ভাস্কর্যের কোনটি এককভাবে স্থান পেয়েছে আবার কোনটি যুক্তভাবে। এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, লালন, সুকান্ত ভট্টাচার্য, মহাত্মা গান্ধী, তাজউদ্দিন আহমেদসহ দেশি-বিদেশি অনেক গুণীজনের ভাস্কর্য। আছে হাতির ভাস্কর্য। এছাড়াও রয়েছে ভাস্কর শামীম সিকদারেরও দুটি প্রতিকৃতি। মূল ভাস্কর্যের উচ্চতা ৭০ ফুট, আর অন্যান্য ভাস্কর্যগুলোর গড় উচ্চতা ৩-৪ ফুট।

অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্য

শামীম শিকদার ১৯৮৮ সালে প্রথমে ফুলার রোডে প্রোভিসির ভবনের সামনে খালি জায়গায় ‘অমর একুশে’ নামে একটি বিশাল ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু করেন। ১৯৯৮ সালে ওই স্থানে উদয়ন স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হলে ভাস্কর্যটি স্থানান্তর করে জগন্নাথ হলের পেছনে, বুয়েট সংলগ্ন ফুলার রোডের এই স্থানে রাখা হয়। পরে তিনি ওই ভাস্কর্যটির গঠন পরিবর্তন করে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আলোকে নতুনভাবে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করেন।

   

কিশোরী গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাকা, বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় নাজিরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারপিটসহ গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে এক কিশোরী গৃহকর্মীকে। নাজিরা নামের ওই গৃহকর্মী এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত আনোয়ার হোসেনের বাসায়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঈদের দু’দিন পর কাজের বিনিময়ে এক প্লেট ভাত চাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অসহ্য যন্ত্রণায় এক গ্লাস পানি চাইলে বুকে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়। মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে রেখে এই পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে আনোয়ার ও তার স্ত্রী।

ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে নাজিরার দাদা তাকে সেখান থেকে গাইবান্ধায় নিয়ে আসেন। এরপর প্রথমে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান।

জানা যায়, নাজিরা গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার পূর্ব বালয়াপাড়ার বাসিন্দা দৃষ্টি প্রতিবন্ধি ইশা খাঁ এবং অসুস্থ্য জোছনা বেগম দম্পতির কন্যা। অভাবের সংসারে কিছুটা ভার কমাতে গত রমজান মাসে প্লাবন নামের স্থানীয় যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে গৃহকর্মী হিসেবে ঢাকায় পাঠান বাবা-মা।

বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. শাহীন শাহ জানান, গত ১৭ এপ্রিল বুধবার নাজিরাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। তার ঘাড়, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় ওই স্থানগুলোতে ইনফেকশন হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি। তবে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভুক্তভোগী নাজিরা জানায়, কাজে যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে তাকে বেধড়ক মারধর করত গৃহকর্তা আনোয়ারের স্ত্রী। ঈদের দুইদিন কাজ শেষে খাবার চাওয়ায় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে উঠেন আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী। একপর্যায়ে স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারধর ও গরম খুন্তি দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেন তারা। খবর পেয়ে গত ১৩ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমার দাদা ঢাকা থেকে আমাকে গাইবান্ধার বাড়িতে নিয়ে আসেন।

পরিবারের দাবি, দিনভর কাজের পর ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে চেয়েছিলেন এক প্লেট ভাত, আর তাতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় গৃহকর্মী নাজিরার শরীরের বিভিন্ন অংশ।

নাজিরার মা জোছনা বেগম জানান, ঢাকা থেকে নিয়ে আসার পরদিন খুব অসুস্থ্য বোধ করলে নাজিরাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ এপ্রিল ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।

বর্তমানে মেয়ের অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তিনি জানান, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে রমজান মাসে প্লাবন নামের এক যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। প্লাবন বিমানবন্দরের উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেনের বাসায় তাকে গৃহকর্মী হিসেবে রাখে। কাজে যোগদানের পর থেকেই আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নির্যাতন করতো নাজিরাকে। সর্বশেষ ঈদের পর স্বর্ণ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয়ার অভিযোগ করেন নাজিয়ার মা।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে ওই কিশোরীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যুবক প্লাবনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিমানবন্দরে অফিস পিয়ন হিসেবে চাকরি করি। আনোয়ার স্যারের অনুরোধে তার বাসার কাজের জন্য আমার আত্মীয় নাজিরাকে গৃহকর্মীর কাজে ঢাকায় নিয়ে যাই। নাজিরা যখন কাজে যোগ দেয় এর পর থেকে আমাকে আনোয়ার স্যার আর তার সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। কোনো খোঁজখবর জানতে চাইলে তিনি গুরুত্ব দিতেন না।

প্লাবন বলেন, আমি নাজিরাকে দেখে মর্মাহত। গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সময় আমি তার সঙ্গে ছিলাম। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসার জন্য চেষ্টা করছি। আনোয়ার স্যারকে ভালো মানুষ মনে করেছিলাম কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

;

গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি

গাইবান্ধা কারাগারের অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীকে বদলি

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধা জেলা কারাগারে নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ও কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামসহ দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ওই ঘটনায় তাদেরকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে বদলি করা হয়।

বদলি হওয়া অপর কারারক্ষীর নাম সাবানা খাতুন। তাদের মধ্যে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর কারাগার এবং নারী কারারক্ষী সাবানা খাতুনকে ঠাঁকুরগাও কারাগারে বদলি করা হয়েছে।

এর আগে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভিতরে কারাগারের প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামের সাথে মেঘনা খাতুন নামের এক নারী কয়েদির অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় মোর্শেদা খাতুন সীমা (৩৪), হাজতী নম্বর-৫০৮) নামের এক নারী হাজতিকে বিবস্ত্র করে, হাত-পা বেধে নির্যাতন করে অভিযুক্ত দুই কারারক্ষীসহ অন্যরা। শুধু তাই নয়, ওই নারী হাজতি সীমাকে কারাগারের নারী-পুরুষ উভয়ই মিলে বিবস্ত্র করে স্পর্শকাতর স্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত, এমনকি কামড় দিয়ে ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে শরীরের গোশত।

এখানেই শেষ নয়, ঘটনা গোপন রাখতে দেখানো হয় জীবনণাশসহ সম্ভ্রমহানীর হুমকিও। অন্যথায় হত্যা করে হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়ার আল্টিমেটামও দেয় সুবেদারসহ অভিযুক্তরা।

পরে এ ঘটনায় গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভিতরে নারী হাজতীর সাথে এমন লোমহর্ষক ঘটনার বণর্না তুলে ধরে অসুস্থ ওই নারী হাজতির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা, জীবন ও সম্ভ্রম রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গত ১৬ এপ্রিল গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী হাজতির মা করিমন নেছা।

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা প্রায় ৫ বছর যাবৎ গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আবদ্ধ রয়েছেন। কারাগারে অবস্থানকালে কিছুদিন পূর্বে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে কর্মরত সুবেদার আশরাফুল ইসলাম এবং মহিলা কয়েদি (রাইটার) মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলে নারী হাজতি সীমা।

এতেই সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন তার (সীমার) উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তারা প্রতিনিয়ত ঘটনার বিষয়ে কাউকে বললে কারাগারের ভিতরেই সীমাকে খুন-জখমে হত্যা করে আত্মহত্যা করে মৃত্য হয়েছে কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্য হয়েছে মর্মে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করতে থাকে। হাজতি সীমা খাতুন বারবার তাদেরকে (সুবেদার আশরাফুল-মেঘলা) ঘটনার বিষয়ে কাউকে কিছু বলবেনা মর্মে জানানোর পরেও সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন আতঙ্কিত হয়ে কারাগারের ভিতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া এসবের একপর্যায়ে সুবেদার আশরাফুল সীমাকে জিম্মি করতে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে কু-প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্তসহ হাত এবং পড়নের কাপড় ধরে টানা-হেচড়াসহ একাধিকবার শ্লীলতাহানী ঘটায়। পরে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দিয়েও আশরাফুলের মনোবাসনা পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়ে সুবেদার আশরাফুলসহ তার সহযোগীরা হাজতী সীমার স্বামী খোকন মিয়াকে গাইবান্ধা কারাগারে ডেকে নেয়। অভিযুক্তরা সীমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ও আপত্তিকর তথ্য দিয়ে সীমার সংসার নষ্ট করে ভেঙ্গে দেয়।

এতসবের পরে যখন হাজতি সীমা এসব ঘটনা জেল সুপার সাহেবকে বিচার দিবে মর্মে জানায়, তখন সুবেদার আশরাফুল প্রকাশ্যভাবে জেলার সাহেব তার লোক, সে (সুবেদার) নিজের টাকা খরচ করে জেলারকে এই কারাগারে বদলি করে এনেছেন বলে জানিয়ে জেলার তার (সুবেদারের) কোন বিচার করতে পারবেনা বলে ভয়-ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে। এসবের এক পর্যায়ে চলতি বছরের গত ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা, আলেফা এবং কারারক্ষী তহমিনা ও সাবানা পরিকল্পিতভাবে জেলা কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভিতরের বারান্দায় লাঠি দিয়ে অতর্কিত সীমার মাথায়, কোমড়ে বুকে, পিঠে, দুইপায়ের হাটুসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারী ভাবে মারধর করে। মহিলা কয়েদি মেঘলা ভুক্তভোগী সীমার ডানহাতের দাপনায় কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নেয়।

শুধু তাই নয়, সুবেদার আশরাফুল, সিআইডি আনিছ ও হাবিলদার মোস্তফাগণ কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভিতরে প্রবেশ করে সীমাকে টেনে-হেচড়ে বের করে মহিলা ইউনিটের বারান্দা হতে সেলের ভিতরে নিয়ে হাজতি সীমার দুইহাতে হ্যান্ডকাপ ও দুই পা রশি দিয়ে বেধে বিবস্ত্র করে লাঠি দিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থান (দুই উরু), পায়ের পাতায় পেটাতে থাকে। এ সময় নির্যাতনকারীরা এসবের কোনও ঘটনা কারাগারের বাহিরে প্রকাশ হলে সীমাকে মারপিটে হত্যা করে হৃদরোগ মৃত্যু হয়েছে বলে চালাবে মর্মে আবারো হুমকি দেয়।

এছাড়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্যাতিতা হাজতির মা ও অভিযোগকারী করিমন নেছা একাধিকবার হাজতি মেয়ের সাথে দেখা করতে গাইবান্ধা কারাগারে আসলেও মেয়ের সাথে সাক্ষাত করতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে হাজতী সীমা খাতুনের গাইবান্ধা আদালতে হাজিরার তারিখে আদালতে মেয়ের সাক্ষাত পান মা করিমন নেছা। এদিন সীমা মায়ের কাছে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে জখমের চিহ্ন দেখায়।

পরে অভিযোগ দায়েরের প্রেক্ষিতে গত ১৬ এপ্রিল জেলা কারাগারে ঘটনা তদন্তে যান গাইবান্ধা জেলা প্রশাসাকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো: মশিউর রহমান।

জানতে চাইলে এদিন তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে গতকাল বিষয়টি তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেব। এর পরেই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযুক্তদের মধ্যে দুই কারারক্ষীকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলামকে দিনাজপুর এবং নারী কারারক্ষী সাবানা খাতুনকে ঠাকুরগাঁও কারাগারে বদলি করেছে কারা প্রশাসন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা হবে।

;

ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে

ইউএস-বাংলা ইতিহাস স্থাপন করে আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বেসরকারি বিমানসংস্থা হিসেবে প্রথমবারের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করে ইতিহাস স্থাপন করেছে। আজ ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার বাংলাদেশ এভিয়েশন তথা বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ইতিহাসের এক অনন্য নজির স্খাপন করেছে। বর্তমানে দুবাই, শারজাহ এর পর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের তৃতীয় গন্তব্য আবুধাবীতে ফ্লাইট শুরু করেছে ইউএস-বাংলা।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদার কারনে দেশের অন্যতম এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা আবুধাবীতে ঢাকা থেকে সোম, বুধ, বৃহস্পতি ও শনিবার এবং চট্টগ্রাম থেকে মঙ্গল, শুক্র ও রবিবার বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। আবুধাবীর স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে অবতরণ করবে।


আবুধাবী থেকে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০মিনিটে ছেড়ে মঙ্গল, বুধ, শুক্র ও রবিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সোম, বৃহস্পতি ও শনিবার চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে অবতরন করবে।

আজ ইউএস-বাংলার উদ্বোধনী ফ্লাইট হিসেবে চট্টগ্রাম থেকে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটে ১৭৪ জন যাত্রী নিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ যাত্রা করে। চট্টগ্রাম থেকে যাত্রার পূর্বে ঢাকা থেকে বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ আবুধাবীতে স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে পৌঁছাবে। এবং আবুধাবী থেকে স্থানীয় সময় আজ রাত ১০টা ১০মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করবে এবং ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।


বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত দু’দেশের বন্ধনকে আরো বেশী সুদৃঢ় করবে। আবুধাবী ফ্লাইট যাত্রার পূর্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ যাত্রীদের বিদায় জানান।

দুবাই, শারজাহ ছাড়া বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য মাস্কাট, দোহা, প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, মালে, পর্যটক বান্ধব অন্যতম গন্তব্য ব্যাংকক ও চীনের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর গুয়াংজু, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা ও চেন্নাইতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। আন্তর্জাতিক রুট ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে বিশেষ করে ঢাকা থেকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, সৈয়দপুর, যশোর ও রাজশাহী ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

এখানে উল্লেখ্য আজ ১৯ এপ্রিল থেকে ঢাকা থেকে চেন্নাই রুটে অতিরিক্ত চারটি ফ্লাইটসহ সপ্তাহে মোট ১১ টি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।

;

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের ঋণ আর নয়, এখন তাদের ক্ষতিপূরণ দেবার পালা

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে চলমান বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনের প্রাক্কালে সারাবিশ্বে নাগরিক সমাজ তাদের ঋণ ব্যবস্থার সমালোচনায় প্রতিবাদ সমাবেশ করছে আজ ১৯ এপ্রিল। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এছাড়াও আজ বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় সারাবিশ্বে একযোগে টুইটারে প্রতিবাদ বার্তা প্রকাশ করবে বৈশ্বিক নাগরিক সমাজ। তাদের মূল দাবি, জনগণের ওপর আরোপিত অনৈতিক ঋণ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কারণ, বিশ্বের দরিদ্রদের প্রতি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দেনা রয়েছে।

এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, কোস্ট ফাউন্ডেশন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও সিপিআরডি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান এবং সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ। সভায় বক্তব্য রাখেন, জয় বাংলা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লাভলি ইয়াসমিন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনত কুমার ভৌমিক, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের ইকবাল ফারুক, বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আরা রুমি, সিপিআরপি’র শেখ নূর আতাইয়া রাব্বি, এবং বাংলাদেশ ভুমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি: ফয়েজ আহমেদ খান।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনত কুমার ভৌমিক তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীর আগমনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ঋণ প্রস্তাব করা হচ্ছে। এসমস্ত সমস্যার জন্য আমরা কোনো অংশে দায়ী নই। তাহলে এর জন্য আমরা কেন ঋণ গ্রহন করব? এর জন্য যারা দায়ী, তাদের উচিত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।

বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আরা রুমি বলেন, উন্নত দেশ জার্মানি যেখানে ঋণের সুদ দেয় গড়ে মাত্র ১.৫%, আমেরিকা দেয় ৩.১%,  সেখানে আফ্রিকার দেশগুলো গড়ে সুদ দেয় ১১.৬%, এশিয়ার দেশগুলো ৬.৫%। যত দরিদ্র দেশ, তাদের সুদের হার তত বেশি। এর কারণ, পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আর ঋণ না দেয়ায় প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে তারা উচ্চ সুদে ঋণ গ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো ঋণ শোধ করে মূলত তাদের রপ্তানী আয় থেকে। গত এক দশকে তাদের সেই সক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছে। ২০১০ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণ ছিল তাদের রপ্তানীর ৭১%, যা ২০২২ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১১২%। অর্থাৎ, ইতিমধ্যে আয়ের তুলনায় অনেক বেশি ঋণ তারা ইতিমধ্যে করে ফেলেছে এবং ঋণ করেই যাচ্ছে।

সভা সঞ্চালনাকালে কোস্ট ফাউন্ডেশনের মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের ঋণের সুদ পরিশোধ করতেই তাদের সম্পদ শেষ করে ফেলছে। বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা ১৩৯টি দেশ তাদের রাজস্ব বাজেটের ৩৫% ব্যয় করে এই ঋণ পরিশোধ খাতে। নিম্ন আয়ের দেশ ও নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের ব্যয় হয় যথাক্রমে ৫৭.৫% এবং ৪৪.৫%। তিনি বলেন, আমরা দরিদ্র জনগণের উপর আরোপিত এই গণঋণ প্রত্যাখ্যান করছি, কারণ দারিদ্রের পেছনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের দায় রয়েছে। ঋণ নয়, তাদের উচিত ঐতিহাসিক দেনা পরিশোধ করা।

আজ সকাল দশটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে, আজ সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় এক যোগে টুইটারের মাধ্যমে যে প্রতিবাদের ঝড় তোলা হবে, তাতে সর্বস্তরের সকল মানুষকে অংশগ্রহনের আহ্বান জানানো হয়।

;