রংপুর থেকে ৭০ হাজার ৫৩০ টন ধান কিনবে সরকার



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর
রংপুরে ধান কাটা শুরু

রংপুরে ধান কাটা শুরু

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমবারের মতো সারা দেশে সরকারিভাবে আমন ধান সংগ্রহ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। বুধবার (২০ নভেম্বর) থেকে দেশের খাদ্য গুদামগুলোতে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

এদিকে আমন ধান সংগ্রহে সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি রংপুর অঞ্চলের কৃষক। এই অঞ্চলে উৎপাদনের মোট মাত্র ৭০ হাজার ৫’শ ৩০ টন ধান সরকারিভাবে বিক্রির সুযোগ থাকছে। ২৬ টাকা দরে একেকজন কৃষক কমপক্ষে ৪’শ কেজি ধান বিক্রি করতে পারবেন। তবে ধান সংগ্রহের তালিকা নিয়ে অনেকেরই আপত্তি রয়েছে।

এবার রংপুর অঞ্চলে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় আমনের ফলন ভালো হয়েছে। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। রংপুর অঞ্চলে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৪ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আমন রোপণ হয়েছে ৬ লাখ ৮ হাজার ৮৫২ হেক্টর জমি। যা শতকরা হিসেবে ৯৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।

কৃষক ধান নিয়ে যাচ্ছে মহিষের গাড়িতে

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও লালমনিরহাটে এবার আমন মৌসুমে স্থানীয়সহ হাইব্রিড ও উফশী ধান রোপণ করেছে কৃষকরা। এখানকার মোট আমনের আবাদি জমি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৮ হাজার ৬৪৭ মেট্রিক টন।

এরমধ্যে রংপুর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ১১ হাজার ৪৫৪ মেট্রিক টন। গাইবান্ধাতে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮৭ মেট্রিক টন ও কুড়িগ্রাম জেলায় ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪২ মেট্রিক টন। এছাড়া লালমনিরহাটে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৮ মেট্রিক টন এবং নীলফামারী জেলায় ৩ লাখ ৬১ হাজার ৯১৬ মেট্রিক টন।

কাঁধে করে ধান নিয়ে যাচ্ছে কৃষক

রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্র মতে, রংপুর অঞ্চল থেকে সরকারিভাবে ৭০ হাজার ৫’শ ৩০ টন ধান ক্রয় করা হবে। এরমধ্যে নীলফামারী জেলায় ১২ হাজার ৮০৭ টন, লালমনিরহাটে ৯ হাজার ৫৯ টন, গাইবান্ধা জেলায় ১৩ হাজার ৪০৪ টন, কুড়িগ্রামে ১৩ হাজার ৭১ টন এবং রংপুর জেলায় ২১ হাজার ৫৭৯ টন। এ অঞ্চলের পাঁচ জেলার ৪৩টি খাদ্যগুদাম থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে।

এদিকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হওয়ায় রোপা আমন ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত কৃষকরা। তবে পুরোনো ধানের দাম না বাড়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। বিশেষ করে ধান সংগ্রহের তালিকা স্বচ্ছতার সঙ্গে করা না হলে সরকারের এ উদ্যোগ কৃষকের কোন কাজে আসবে না মনে করছেন তারা।

রোপা আমন ধান

কুড়িগ্রামের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছত্রপুর মিলপাড়া গ্রামের কৃষক দেলবর আলী, কয়ছার ও নুর ইসলাম জানান, আগাম ধান কেনা কৃষকরা লাভবান হবে। তবে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের ব্যবস্থা করা না হলে সরকারের এই উদ্যোগে আমাদের কোন উপকার হবে না। গত বোরো মৌসুমের মতো আমন মৌসুমেও ধানের দাম কম পেলে আমরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বো। একই সাথে প্রকৃত কৃষক যাতে ধান বিক্রি করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

এদিকে রংপুরের সমাজতান্ত্রিক ক্ষেত মজুর ও কৃষক ফ্রন্টের আহ্বায়ক মোমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা বিগত দিনে যেভাবে তালিকা দিয়েছে, তাই করা হয়েছে। কৃষকের কার্ড নিয়ে যে লটারি হয়, তাও লোক দেখানো। এসব বন্ধ করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা না গেলে কৃষকরা উপকৃত হবে না।

ধান কাটছে কৃষক

এ বিষয়ে রংপুরের সহকারী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে তালিকা করা হয়েছে। প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকেই ধান সংগ্রহ করা হবে। রংপুর অঞ্চলের ১৬ লাখ ২৪ হাজার আমন চাষীর মধ্যে ৮ লাখ ৫১ হাজার কৃষক তালিকায় রয়েছেন। চলতি আমন মৌসুমে এ অঞ্চলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ লাখ ৮ হাজার ৬৪৭ মেট্রিক টন ধরা হয়েছে। তবে ধান কেনা হবে ৭০ হাজার ৫’শ ৩০ টন।

এবার রংপুর অঞ্চলে আমন রোপণ করা জমি থেকে ১৮ লাখ ৮ হাজার ৬৪৭ মেট্রিন টন চাল উৎপাদন হবে। ইতিমধ্যে ২ লাখ ১২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এখনো ৩ লাখ ৯৬ হাজার ১২২ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়নি বলেও তিনি জানান।

   

চট্টগ্রামে হিট স্ট্রোকে শিশুর মৃত্যু!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় মোছাম্মৎ সাফা নামের ছয় মাস বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের ধারণা, অতি গরমে শিশুটি হিট স্ট্রোকে মারা গেছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা ২নং ওয়ার্ড আনজিরমারটেক সৈয়দ আলমের নতুন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি নাম মো. নিজাম উদ্দীনের মেয়ে।

নিহতের বাবা নিজাম উদ্দীন বলেন, ভোরে মায়ের বুকের দুধ পান করার কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে পড়ে। সে সময় ঘরে বিদ্যুৎ ছিলো না। সকাল সাতটায় মেয়েকে কোলে নেয়ার পর তার শরীর ঠাণ্ডা অনুভব হলে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাবরিনা আকতার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ডাক্তার সাবরিনা আকতার বলেন, হিট স্ট্রোকে মারা গেছে কিনা সেটা পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত করলে তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বলা যাবে আসলে কি হয়েছিল শিশুটির। তবে ধারণা করা হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে সে মারা যায়।

প্রচণ্ড গরমে শরীর উত্তপ্ত হয়ে অতি দুর্বলতা, বমির উদ্রেক, মাথাব্যথা, শরীর ঝিমঝিম করা, খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণকে হিট স্ট্রোক বলে। হঠাৎ করে এমন সমস্যা দেখা দেয়। এটি একটি অতি জরুরি অবস্থা। যাকে বলা হয় মেডিকেল ইমার্জেন্সি।

 

;

বরিশালে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে অভিযান, ১৩ গাড়িকে জরিমানা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের যাত্রায় বরিশাল জেলার মহাসড়কে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন নিশ্চিত করতে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে বরিশালের জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের নিরবচ্ছিন্ন ভাংগা-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল জেলার গৌরনদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ যাত্রী ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে করতে মোবাইল কোর্ট অভিযানের অংশ হিসেবে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ অভিযান পরিচালনা করেন।

এ সময় তারা স্পিডোমিটার দিয়ে গাড়ির গতিসীমা পরীক্ষা করেন। দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে মহাসড়কে গতিসীমা মেনে চলতে সতর্ক করা হয়।

এ সময় রুটপারমিট বিহীন গাড়ি, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অপরাধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর বিধান মোতাবেক ১৩টি মামলায় ৩২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। যাত্রী ও সড়ক নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন বরিশালের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

;

ট্রাফিক পুলিশের মাঝে স্যালাইন ও লেবু পানি সরবরাহ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীতে বৈশাখের প্রচণ্ড তাপদাহে রোদে পুড়ে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। দায়িত্বরত এই সকল পুলিশ সদস্যদের পেশাগত কাজে স্বস্তি ও ক্লান্তি দূর করতে স্যালাইন ও লেবু পানি সরবরাহ করছে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে বাইরে বের হওয়াই যখন দায় তখন রাস্তায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে মহানগরবাসীকে প্রতিনিয়ত সেবা ও অত্যন্ত পরিশ্রমের কথা চিন্তা করে পুলিশের আইজিপি ও কমিশনারের সার্বিক নির্দেশনায় তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদের তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যদের জন্য স্যালাইন সরবরাহ ও লেবু পানির ব্যবস্থা করেন।

পরবর্তীতে ডিএমপি কমিশনারের তাৎক্ষণিক নিদের্শনায় ডিএমপির সকল ট্রাফিক বিভাগে স্যালাইন সরবরাহ করা হয়।

এডিসি জাহাঙ্গীর আরও বলেন, শুক্রবার দুপুরের পর ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের রাজধানীর শেরেবাংলানগর, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের প্রতিটি পয়েন্টে লেবু পানি শরবতের ব্যবস্থা এবং স্যালাইন সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারগণের তদারকি ও নেতৃত্বে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।

;

কিশোরী গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাকা, বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় নাজিরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারপিটসহ গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে এক কিশোরী গৃহকর্মীকে। নাজিরা নামের ওই গৃহকর্মী এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত আনোয়ার হোসেনের বাসায়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঈদের দু’দিন পর কাজের বিনিময়ে এক প্লেট ভাত চাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অসহ্য যন্ত্রণায় এক গ্লাস পানি চাইলে বুকে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়। মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে রেখে এই পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে আনোয়ার ও তার স্ত্রী।

ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে নাজিরার দাদা তাকে সেখান থেকে গাইবান্ধায় নিয়ে আসেন। এরপর প্রথমে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান।

জানা যায়, নাজিরা গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার পূর্ব বালয়াপাড়ার বাসিন্দা দৃষ্টি প্রতিবন্ধি ইশা খাঁ এবং অসুস্থ্য জোছনা বেগম দম্পতির কন্যা। অভাবের সংসারে কিছুটা ভার কমাতে গত রমজান মাসে প্লাবন নামের স্থানীয় যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে গৃহকর্মী হিসেবে ঢাকায় পাঠান বাবা-মা।

বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা. শাহীন শাহ জানান, গত ১৭ এপ্রিল বুধবার নাজিরাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়। তার ঘাড়, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় ওই স্থানগুলোতে ইনফেকশন হয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি। তবে তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে ভুক্তভোগী নাজিরা জানায়, কাজে যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে তাকে বেধড়ক মারধর করত গৃহকর্তা আনোয়ারের স্ত্রী। ঈদের দুইদিন কাজ শেষে খাবার চাওয়ায় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে উঠেন আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী। একপর্যায়ে স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারধর ও গরম খুন্তি দিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেন তারা। খবর পেয়ে গত ১৩ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমার দাদা ঢাকা থেকে আমাকে গাইবান্ধার বাড়িতে নিয়ে আসেন।

পরিবারের দাবি, দিনভর কাজের পর ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে চেয়েছিলেন এক প্লেট ভাত, আর তাতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় গৃহকর্মী নাজিরার শরীরের বিভিন্ন অংশ।

নাজিরার মা জোছনা বেগম জানান, ঢাকা থেকে নিয়ে আসার পরদিন খুব অসুস্থ্য বোধ করলে নাজিরাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ এপ্রিল ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বলা হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।

বর্তমানে মেয়ের অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তিনি জানান, পারিবারিক আর্থিক সমস্যার কারণে রমজান মাসে প্লাবন নামের এক যুবকের মাধ্যমে নাজিরাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। প্লাবন বিমানবন্দরের উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেনের বাসায় তাকে গৃহকর্মী হিসেবে রাখে। কাজে যোগদানের পর থেকেই আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নির্যাতন করতো নাজিরাকে। সর্বশেষ ঈদের পর স্বর্ণ চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গরম খুন্তি দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয়ার অভিযোগ করেন নাজিয়ার মা।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে উচ্চমান সহকারী আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে ওই কিশোরীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যুবক প্লাবনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিমানবন্দরে অফিস পিয়ন হিসেবে চাকরি করি। আনোয়ার স্যারের অনুরোধে তার বাসার কাজের জন্য আমার আত্মীয় নাজিরাকে গৃহকর্মীর কাজে ঢাকায় নিয়ে যাই। নাজিরা যখন কাজে যোগ দেয় এর পর থেকে আমাকে আনোয়ার স্যার আর তার সাথে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। কোনো খোঁজখবর জানতে চাইলে তিনি গুরুত্ব দিতেন না।

প্লাবন বলেন, আমি নাজিরাকে দেখে মর্মাহত। গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সময় আমি তার সঙ্গে ছিলাম। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসার জন্য চেষ্টা করছি। আনোয়ার স্যারকে ভালো মানুষ মনে করেছিলাম কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

;