জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পরিচয়পত্র পেশ

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করেছেন।

শুক্রবার (৬ নভেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তোনিও গুতেরেজের কাছে এই পরিচয়পত্র পেশ করেন তিনি। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর স্থায়ী মিশনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

বিজ্ঞাপন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। রাবাব ফাতিমা হচ্ছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের দশম স্থায়ী প্রতিনিধি। বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের পূর্বে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

পরিচয়পত্র পেশকালে স্থায়ী প্রতিনিধি জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। এ সময় গুতেরেজ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বিজ্ঞাপন

মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ এবং মহাসচিবের পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টা সমূহের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

স্পেনের মাদ্রিদে সদ্য সমাপ্ত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২৫ সামিটে অংশগ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি উল্লেখ করেন মহাসচিব গুতেরেজ। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান এবং বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও অব্যাহত সুনামের কথা আলোচনাকালে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন মহাসচিব।

রোহিঙ্গা বিষয়ে মহাসচিব ও স্থায়ী প্রতিনিধির মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এই সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন মর্মে পূর্ণ নিশ্চয়তা প্রদান করেন গুতেরেজ।

স্থায়ী প্রতিনিধি ঢাকায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান এবং বলেন জন্ম শতবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় বৈশ্বিকভাবে উদযাপন করা হবে। ইউনেস্কো কর্তৃক জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ নিউইয়র্ক জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সঙ্গেও জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। স্থায়ী প্রতিনিধি এক্ষেত্রে মহাসচিবের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভা জাতিসংঘে বাংলাদেশের নিউইয়র্ক মিশন এবং কলকাতা ও বেইজিং এ বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন।

মানবাধিকার বিষয়াবলিতে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। লন্ডন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট মানবাধিকার বিভাগের প্রধান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের।