বেগম রোকেয়ার কবরে ফুল দেওয়া হবে না আজও



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
বেগম রোকেয়ার মুর‍্যাল

বেগম রোকেয়ার মুর‍্যাল

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ৯ ডিসেম্বর সোমবার বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৩৯ তম জন্ম ও ৮৭ তম মৃত্যু দিবস আজ। দিবসটি নিয়ে নানা আয়োজন থাকলেও রোকেয়ার জন্মস্থানে এই নারীর অনুরাগীদের মন ভালো নেই। এবছরও রোকেয়ার কবরে ফুল দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। নিরাশার আরও একটি বছর পার হচ্ছে আজ।

বেগম রোকেয়া উপ-মহাদেশের নারী সমাজকে কু-সংস্কারের দেয়াল ছেদ করেছিল। গৃহবন্দী নারীদের হাতে তুলে দিয়েছিল আলোর মশাল। সেই মহিয়সী নারীর স্মৃতিবিজড়িত জন্মস্থান আজও অন্ধকারে। অবহেলা আর উদ্যোগহীনতার কারণে এখানে রোকেয়া চর্চা ও পর্যটন কেন্দ্রের দ্বার রুদ্ধ।

নয় বছর আগে রংপুর জেলা প্রশাসকের দেওয়া রোকেয়ার দেহাবশেষ কলকাতা থেকে পায়রাবন্দে আনার প্রতিশ্রুতিও এখনো লাল ফিতায় বন্দীই রয়ে গেছে। এনিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নেই কোন জোরালো উদ্যোগ। এখন জেলা প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য

মরদেহ আনার ঘোষণা ও কালক্ষেপণ

বর্তমান সরকারের আমলে পাকিস্তান থেকে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মরদেহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে আনার পর রংপুর অঞ্চলের মানুষ রোকেয়ার মরদেহটিও পায়রাবন্দে এনে সমাহিত করার জোরালো দাবি তুলেছিল।

২০০৯ সালের ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া মেলায় রংপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক বিএম এনামুল হক দাবিটির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১০ সালে একই স্থানে বিএম এনামুল হক বলেছিলেন, ‘মরদেহ পায়রাবন্দে আনার ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে। আগামী বছর (২০১১) রোকেয়া দিবসের আগে তার মরদেহ পায়রাবন্দে আসবে।’

পায়রাবন্দে পড়ে আছে জরাজীর্ণ রোকেয়ার স্মৃতিবিজড়িত জন্মস্থান

তার এ ঘোষণায় সেইদিন পায়রাবন্দবাসী আনন্দিত হয়েছিল। কিন্তু তার সেই ঘোষণার নয় বছর পূর্ণ হলো আজ। কিন্তু এ ব্যাপারে আর কোন উদ্যোগ নেয়নি জেলা প্রশাসন। আসেনি রোকেয়ার দেহাবশেষ। অথচ বিগত দিনে প্রতিশ্রুত ঘোষণার বাস্তবায়ন দাবিতে বিভিন্ন নারী সংগঠন সভা, সিম্পোজিয়াম, গোলটেবিল বৈঠকসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রোকেয়া অনুরাগীরা দাবিটি সরকারের উর্ধতন মহলেও জানিয়েছেন।

পায়রাবন্দের মানুষের আক্ষেপ

নীতিনির্ধারক মহলে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ করে পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিবিসি’র জরিপে বিশ্বসেরা ২০ নারীর তালিকায় ৬ নম্বর স্থান বেগম রোকেয়ার। অথচ সেই নারীর দেহাবশেষ প্রতিবেশি দেশ থেকে ফিরিয়ে আনতে বছরের পর বছর গুনতে হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। পূর্বের ডিসি ঘোষণা দিয়েছিলেন রোকেয়ার কবর পায়রাবন্দে আসবে। কিন্তু সেই ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত এখন ফাইলবন্দি।’

অন্যদিকে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলিফা ইসরাত মুন্নি বলেন, ‘আমরা যাকে নিয়ে গর্বিত। তার কবর এই মাটিতে হবে। এনিয়ে আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি। প্রতিবছর রোকেয়া দিবসে মন চায় মহিয়সী নারীর কবরে শ্রদ্ধা জানাব। কিন্তু সেই আশায় বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে। ডিসির ঘোষণা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেই।’

রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের ভিতরের পুকুর

বেগম রোকেয়ার দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনা নিয়ে এমন কালপেক্ষণে ক্ষুদ্ধ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম বকুল। আক্ষেপ নিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আবেগ নিয়ে সবাই উপহাস করে। সেইদিন ডিসি সাহেব যে সস্তা হাততালি নেওয়ার জন্য রোকেয়ার দেহাবশেষ আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন তা এখন স্পষ্ট।’

এদিকে রোকেয়ার ভাতিজি রনজিনা সাবের বলেন, ‘এখন সরকার চাইলে কিছু হয় না, এটা মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না। আমাদের এই সামান্য দাবিটা সরকার পূরণ করতে পারছে না। অন্যদের মরদেহ যদি আনা যায়। তবে কেন রোকেয়ার মরদেহ আনতে বিলম্ব হচ্ছে। আর কত বছর অপেক্ষা করতে হবে। আর কত টালবাহনা দেখতে হবে। আমরা রোকেয়ার কবরে ফুল দিতে চাই। শ্রদ্ধা জানাতে চাই।’

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য রংপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক আসিব আহসান এর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত

পায়রাবন্দে পড়ে আছে জরাজীর্ণ রোকেয়ার স্মৃতিবিজড়িত জন্মস্থান

বাংলা তথা উপমহাদেশের বন্দী নারীদের শিকল ছিড়ে স্বমহিমায় আলোকিত জীবন গড়ার প্রদীপ জ্বালানিয়া পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের নিভৃত পল্লী খোর্দ্দমুরাপুর গ্রামে জন্ম তার। বিখ্যাত সাবের পরিবারের জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ঔরসে ও রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮ বছর বয়সে খান বাহাদুর সাখাওয়াত হোসেন সাহেবের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ২৮ বছর বয়সে স্বামী হারান তিনি। ১৯১০ সালের শেষ দিকে কলকাতায় যান তিনি। এরপর তিনি দু’পারেই নারী জাগরণ ও উন্নয়নে কাজ করেছেন।

নারী জাগানিয়া চিন্তা থেকে লিখেছেন অবিরাম-অবিরত। সমাজের কুসংস্কার ভাঙতে করেছেন সময়ের সাহসী উচ্চারণ। তার লেখা অবরোধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন, পদ্মরাগ, অর্ধাঙ্গী, মতিচুর ছাড়াও অসংখ্য কালজয়ী গ্রন্থ সে সময় নারী জাগরণ আন্দোলনকে উজ্জীবিত করে। আজও তা আন্দোলিত করছে বিশ্ব নারী সভ্যতাকে। মহিয়সী এই নারী ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় মারা যান। সেখানকার সোদপুরে তাকে সমাহিত করা হয়।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;