অবৈধ ইটভাটায় বরিশালে বায়ু দূষণ, স্বাস্থ্যঝুঁকি চরমে



জহির রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ইটভাটার ধোঁয়ায় বায়ু দূষণ ঘটছে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ইটভাটার ধোঁয়ায় বায়ু দূষণ ঘটছে/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালে যত্রতত্র বেড়ে চলছে ইটভাটার সংখ্যা। সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম এলাকার নদীর চর ও তীরে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ইটভাটাগুলো অবৈধভাবে গড়ে তুলছে মৌসুমি ইট ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, বাসা-বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে বিধি-নিষেধ না মেনেই অবৈধভাবে ইটভাটাগুলো গড়ে উঠছে।

ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া বায়ুদূষণ ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে অবাধে গাছ কেটে পোড়ানো হচ্ছে। এতে এ অঞ্চলের পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৪৭৬টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেয়েছে ৩৪৭টি ইটভাটা। বাকি ১২৯টি ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়নি। আর আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ৩৯০টি এবং সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি-(৮০-১২০ ফিট) ইটভাটা রয়েছে ৮৬টি।

কাঁচা ইট তৈরি করছেন শ্রমিকরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল জেলায় ১৭৮টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ১০৮টি, ছাড়পত্র পায়নি ৭০টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ১৪৪টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ৩৪টি।

পটুয়াখালী জেলায় ৭৩ টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ৫২টি,ছাড়পত্র পায়নি ২১টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ৫৬টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ১৭টি।

বরগুনা জেলায় ৫৬টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ৫২টি,ছাড়পত্র পায়নি ৪ টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ৫৪টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ২টি।

ভোলা জেলায় ৮৮টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ৬৭টি, ছাড়পত্র পায়নি ২১ টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ৮৩টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ২টি। তবে শুধু ভোলায় ৩টি হাইব্রিড হফম্যান কিলন অটো ব্রিকস রয়েছে।

বরিশালে গড়ে উঠছে অবৈধ ইটভাটা / ছবি: বার্তা২৪.কম

ঝালকাঠী জেলায় ৩৯টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ৩৪টি, ছাড়পত্র পায়নি ৫ টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ১৯টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ২০টি।

পিরোজপুর জেলায় ৪২টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ৩৪টি, ছাড়পত্র পায়নি ৮টি। এর মধ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ৩১টি, সম্পূর্ণ অবৈধ ড্রাম চিমনি ইটভাটা রয়েছে ১১টি।

এ ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় আরও দেড় থেকে দুইশত অবৈধ ইটভাটা রয়েছে বলে দাবি করছেন একাধিক ইটভাটা ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে ইট তৈরির মৌসুমে (ডিসেম্বর-এপ্রিল) বরিশাল বিভাগে অবৈধ ইটভাটায় ৬২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ইটভাটার মালিক ও ম্যানেজারসহ ৫২ জনকে আসামি করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। একই সাথে অবৈধ ৪০টি ড্রাম চিমনি ভেঙ্গে দেয়া সহ ৮০টি ইটভাটার আগুন নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২ কোটি কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়।

ধ্বংস করা হচ্ছে কাঁচা ইট/ ছবি: বার্তা২৪.কম

চলতি বছর ৬টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর। অভিযানে ৬টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইটভাটার মালিক ও ভাটার ম্যানেজারসহ ৫৩ জনকে আসামি এবং ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ভাটার প্রায় ২৭ লাখ কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়।

মেসার্স মক্কা ব্রিকস’র স্বত্বাধিকারী মো. ইউসুফ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অবৈধ ইটভাটার ফলে বৈধ ইটভাটার মালিকরা লোকসানের দিকে যাচ্ছে। অবৈধ ইটভাটার মালিকরা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ ইটভাটা তৈরি করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আখতার ফারুক শাহিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, ইটভাটার মালিকরা পুরোপুরি নিয়ম বিধি-বিধান আর পরিবেশের আইন না মেনেই নিজের ইচ্ছে মত জায়গায় এসব ইটভাটাগুলো তৈরি করছে। বেশি লাভবান হওয়ার জন্য কম টাকায় কাঠ, গাছ ও টায়ার দিয়ে নতুন ইট পুড়ছে। ফলে ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণ করছে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের যোগসাজশে ইটভাটার মালিকরা ব্যবসা করেই যাচ্ছে। সরকারযন্ত্র কঠোর না হলে এসব ভাটাগুলোর সংখ্যা দিনে দিনে আরও বাড়বে এবং পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিবে।

ধ্বংস করা হচ্ছে কাঁচা ইট/ ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক আঞ্জুমান আরা রজনী বার্তা২৪.কম-কে জানান, ইটভাটাগুলো বায়ু দূষণের পাশাপাশি কৃষিজমি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি করছে। মাটির উপরিভাগেই বেশি কৃষির উৎপাদন ক্ষমতা থাকে। কিন্তু ইটভাটাগুলো সেই মাটির উপরিভাগ কেটে নিয়েই ইট তৈরি করছে। ফলে দিনে দিনে কৃষির জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, যা অর্থনৈতিকভাবেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো. আবদুল হালিম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের চোখ আড়াল করে ইট উৎপাদনের মৌসুমে মৌসুমি ইটভাটা ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে গড়ে তুলছে ড্রাম চিমনি ইটভাটা।

কম বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ার জন্য সহজেই নদীর চরের মাটি কেটে ইট তৈরি করছে তারা। ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর ফলে দিন দিন বনভূমি উজাড়ের পাশাপাশি ফসলি উর্বর জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য অশনিসংকেত।

অবৈধ কারখানার চিমনিগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে/ ছবি:বার্তা২৪.কম 

এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর। নিয়মিত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভাটায় থাকা কাঁচা ইট পানিতে ভিজিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা তৈরির নতুন আইন বাস্তবায়নের জন্য ইটভাটার মালিকদের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বার বার নোটিশ দেয়া হচ্ছে, আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা ব্যবহারের জন্য।

   

হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তীব্র এই দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ।পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

চুয়াডাঙ্গায় আজ সকালে মাঠে কাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক কৃষক হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

জাকির হোসেনের বাবা আমির হোসেন ও দর্শনা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জাকিরের বাবা আমির হোসেন বলেন, তীব্র গরমে মাঠের ধান মরার মতো অবস্থা। তাই জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সকাল ৮টার দিকে মাঠে যায় জাকির হোসেন। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই ছেলে স্ট্রোক করেছে। মাঠের অন্য কৃষকরা ছেলেকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথেই সে মারা যায়।

এদিকে, দুপুরে পাবনায় তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে সুকুমার দাস (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।

জানা গেছে, পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সুকুমার দাস। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সুকুমার দাস শহরের শালগাড়িয়ার জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, কয়েক দিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

;

হাজারীবাগে ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর হাজারীবাগে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে রফিকুল (৩৫) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে হাজারীবাগ বায়তাল মহারম মসজিদের পাশে ঘটনাটি ঘটে।

রফিকের সহকর্মী মো. শাহিন জানান, রফিকের বাড়ি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলায়। বর্তমানে মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় থাকতেন তিনি। হাজারীবাগের ওই ভবনে রড মিস্ত্রীর কাজ করতেন।

তিনি আরও জানান, সকালে ওই ১০তলা ভবনের ছাদে সেন্টারিংয়ের টিনের সিট খুলছিলেন রফিক। এ সময় অসাবধানতাবসত ১০তলা থেকে নিচে পরে গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মীরা ওই শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

;

গৌরীপুরে শসার মণ ১শ টাকা, লোকসানে চাষিরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে প্রতি মণ শসা বিক্রি হচ্ছে, ৮০-১০০ টাকা দরে। শসার ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন আবার অনেক কৃষক লোকসানের ভয়ে ক্ষেতের শসা ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেত থেকে শসা তুলছেন কৃষকেরা। কেউ পাইকারি দরে প্রতি কেজি শসা দুই টাকা আড়াই টাকা দামে বিক্রি করছেন। কেউ শসা তুলে ক্ষেতেই ফেলে দিচ্ছেন অথবা কেউ ক্ষেত থেকে শসা তুলছেনই না!

উপজেলার অচিন্তপুর গ্রামের শসাচাষি আমিনুল হক শাহীন বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে শসার আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রথমদিকে ৮০-৯০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেও এখন তো ক্ষেতেই যাই না। কারণ, শসা ৮০-১০০ টাকা মণ দরে এখন বিক্রি করতে হচ্ছে। শসা বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে শসা উত্তোলন করে কোনো লাভ নেই। ক্ষেতের মধ্যেই শসা লাউয়ের মতো বড় হচ্ছে। ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে।

মোবারকপুর গ্রামের চাষি আলী বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছি। ফলন দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে শসা তুলে বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হচ্ছে না। এক পরিচিত পাইকারের কাছে ৯০-১০০ মণ দরে বিক্রি করেছি। বাজার দরে হতাশ হয়ে পড়েছি। লাভ তো দূরের কথা, খরচ তোলাই তো দায় হয়ে পড়েছে!

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর থেকে বস্তায় করে শসা সিলেটে পাঠানো হচ্ছে, ছবি- বার্তা২৪.কম

ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, আমরা বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১শ টাকা মণ দরে কিনে সিলেটে বিক্রি করি ২শ টাকা মণে। বর্তমানে এক ট্রাক শসা পাঠাতে মণপ্রতি আড়ৎদারকে দিতে হয় ২০ টাকা। লেবার খরচ হয় ১৫ টাকা। বস্তা কিনতে হয় ২০ টাকায় এবং পাঠাতে ভাড়া লাগে ২২ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করে সিলেটে শসা পাঠালে এখন আর আমাদের লাভ হয় না। লোকসান গুণতে হচ্ছে।

ইছুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ বলেন, এখন শসার ব্যবসা করে আমরা লোকসানের মধ্যে আছি। আমাদের ২/৩ লাখ টাকা করে লস হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে গৌরীপুরের কৃষকেরা বেশি পরিমাণে শসা উৎপাদন করেছেন এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে আমদানিও বেশি। সে কারণে দাম দ্রুত কমে যাচ্ছে। দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হচ্ছে।

 

;

একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ

একদিন আগেই দুবাই পৌঁছাবে দস্যুমুক্ত এমভি আবদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রত্যাশার একদিন আগেই দস্যুমুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার আশা করছেন মালিকপক্ষ। আগামীকাল রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা নাগাদ জাহাজটি বন্দরে নোঙর করবে। এর আগে ২২ এপ্রিল জাহাজটি দুবাইয়ে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ। তবে জাহাজটির বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী দ্রুতই দুবাই অভিমুখে এগিয়ে চলায় আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে তারা।

জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজর মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা নাগাদ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে। সেখানে বার্থিং শেষে আরও ৪-৫ দিনের আনুষ্ঠানিকতা আছে। তারপর ২১ নাবিক জাহাজটি নিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে। দুজন আসবেন উড়োজাহাজে।’

মালিকপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা ছয়টার সময় জাহাজটি হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাতে পারে। তবে সেখানে বন্দরের বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী সেখানে বার্থিং ২৪-৩২ ঘণ্টা বিলম্ব হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর জোয়ারের সময় এই বার্থিং হতে পারে। মালিকপক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম নাবিকদের গ্রহণ করতে দুবাই যাচ্ছেন।

১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাবার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ।এরপর জাহাজটিকে নিজেদের উপকূলে নিয়ে যায় দস্যুরা। সেখানে প্রায় এক মাস ধরে নাবিকদের জিম্মি করে রাখে তারা। এর ৩৩ দিন পর মুক্তিপণের অর্থ পেয়ে ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর গন্তব্য দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।

সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ। দস্যুমুক্ত হওয়ার পর নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআরের যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। এর মধ্যে এডেন উপসাগর পর্যন্ত সাগর নিরাপদ নয়। এডেন উপসাগর পার হওয়ার পর যুদ্ধজাহাজগুলো এমভি আবদুল্লাহকে বিদায় দিয়ে নিজেদের গন্তব্যে ফিরে যায়। অবশ্য জাহাজে নিজস্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এমভি আবদুল্লাহর রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতার, ডেকে ফায়ার হোস, জাহাজে নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত এলাকা সিটাডেল, ইমার্জেন্সি ফায়ার পাম্প এবং সাউন্ড সিগন্যাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া সমুদ্র পথে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নকারী এবং ঝুঁকি হ্রাসে পরামর্শদাতা এমব্রেই গার্ডিয়ান সার্ভিস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ এসআর শিপিং। আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত জাহাজটির চারপাশে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা ক্যাপ্টেনকে জানাবে প্রতিষ্ঠানটি। 

;