বন্যপ্রাণীর অবৈধ বেচাকেনায় ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস: দূতাবাস
চীনে ছড়িয়ে পড়া রহস্যময় করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য বন্যপ্রাণীর অবৈধ বেচাকেনাকে দায়ী করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। এই রোগের উত্থানের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে পারে অবৈধভাবে প্রবেশ করা প্রাণীর মাধ্যমে।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশে চীনের দূতাবাস কয়েকজন বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। চীন ভাইরাসের বিস্তার রোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের (এনএইচসি) উচ্চ-স্তরের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ঝং নানশন বলেছেন, বর্তমানের এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চীনের উহান শহরেই বিদ্যমান রয়েছে। অন্যান্য কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে এর প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। করোনা ভাইরাস মানুষে মানুষে সংক্রমণ হচ্ছে। বেশ কয়েকজন চিকিৎসাকর্মীর মধ্যে এর সংক্রমণ ঘটেছে।
চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (চীন সিডিসি) এর প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ জেং গুয়াং বলেছেন, উহানে শিশু বা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি, এবং সংক্রমণের ঘটনাগুলো ঘটেছে মূলত বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে।
জেং বলেন, মহামারি ছড়ানোর প্রথম পর্যায়ে রয়েছে। এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা নিরাময় সম্ভব।
চীন ভাইরাসটির বিস্তারকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কমাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও চীনের গবেষকরা করোনা ভাইরাসটির পুরো জিনোম সিকোয়েন্স প্রকাশ করেছে, যা বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট গবেষকদের ডায়াগনস্টিক কিটগুলো বিকাশ করতে এবং ভাইরাল রোগজনিত স্টাডি করতে সহায়তা করবে।
উহানের সংক্রমণের ক্ষেত্রে ভৌগলিক অবস্থান এবং স্থানীয় সামুদ্রিক বাজারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নির্দেশ করে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, এখানকার বাজারে বন্যপ্রাণীর অবৈধ বেচাকেনা হত।
পুরো জিনোম সিকোয়েন্স থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে অনুমান করা যায় যে, বন্যপ্রাণীগুলো এই ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করতে পারে।
চীনা একাডেমি অফ সায়েন্সেসের একাডেমিক এবং চীন সিডিসির প্রধান গাও ফু বলেছেন, তবে কী ধরণের প্রাণী এই সংক্রমণ ঘটিয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভাইরাস কোনো সুপার-স্প্রেডার বা অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাসবাহী কর্তৃক আবির্ভূত হয়নি।
ঝং চলমান চীনা নববর্ষ ভ্রমণের সময় ভাইরাল নিউমোনিয়া রোগের বৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন করে জানান, সুপার-স্প্রেডারদের থেকে রোগের সংক্রমণ রোধ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
ঝংয়ের মতে, এই রোগের প্রকোপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্দেহযুক্ত রোগীদের আলাদা রাখা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
বিশেষজ্ঞরা ছুটির মৌসুমে যাতায়াত করার সময় অসুস্থ বোধ করলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন।
এনএইচসি-র পূর্বের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। ভাইরাসটির বিকাশের ভবিষ্যৎ প্রাদুর্ভাব কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তার ওপর নির্ভর করছে।