ব্রহ্মপুত্রের তীরে মনকাড়া বাহারি ফুলের সমারোহ
'ফুল আমার প্রচণ্ড রকমের ভাল লাগার অনুসঙ্গ। একসঙ্গে এত এত ফুল গাছ আর ফুলের সমারোহ দেখতে পেয়ে মনটা এখন উৎফুল্ল। এখানে আসলে যে কারোই এমনটাই হবে নিশ্চিত৷ একদিকে ব্রহ্মপুত্র নদ, এর তীরেই বাহারি ফুলের সুবাস। উৎফুল্ল না থাকার কি আর উপায় আছে?'
বলছিলেন আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্রী তাহমিনা শারমিন স্মৃতি। ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের কাচারিঘাটে চলা মাসব্যাপী পুষ্পমেলায় এসে মন হারিয়েছেন স্মৃতির মতো আরও অনেকেই।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে ফুলপ্রেমি ও দর্শনার্থীদের ঢল দেখা যায়। মেলায় গোলাপ, চন্দ্রমুখী, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, জিনিয়া, সূর্যমুখীসহ শতাধিক রকমের দেশি-বিদেশি ফুল গাছের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা।
মেলায় অবস্থান করে দেখা যায়, মেলায় আগতদের অনেকেই ব্যস্ত ফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে। কেউ কেউ দরদাম করে হাতে তুলে নিচ্ছিলেন পছন্দের ফুলের চারা ও বাগান করার উপকরণ। আবার অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে এসেছেন নানান জাতের ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।
সুরাইয়া ইয়াসমিন নামে এক নারী বলেন, 'এ মেলায় অনেক ফুল গাছ উঠেছে। দামও নাগালের মধ্যেই আছে৷ মেলায় আসলে একটু দ্বিধায় পড়ে যাই যে, কোনটা রেখে কোনটা কিনব। তারপরও ঘুরে ঘুরে পছন্দ মতো ফুল কিনে নিচ্ছি বাসার ছাদের জন্য। যেহেতু মাসব্যাপী মেলা তাই কদিন পর আবারও এসে আরও কিছু ফুল গাছ কিনে নিয়ে যাব।'
মেলার প্রথম থেকেই জনসমাগম ও বেচা বিক্রি ভালো হওয়ায় খুশি নার্সারি মালিকরা। মহানগর নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম রতন বলেন, ‘যেহেতু শুরু থেকেই ভাল বিক্রি চলছে, সেহেতু আমরা এবার এক কোটি টাকার মতো ফুল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা রাখছি।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে গত ১৯ জানুয়ারি ব্রহ্মপুত্রের কাচারিঘাটে শুরু হয় এ মেলা। মেলার উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু।
আয়োজকরা জানান, সিটি করপোরেশন ৭ম বারের মতো এ আয়োজন করছে। প্রতি বছর মেলাটি টাউনহল মাঠে হলেও এবার সেই স্থান পরিবর্তন করে কাচারিঘাটে করা হয়েছে।
এবার মেলায় মোট স্টল বসেছে ১৮টি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ।
মসিক মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, 'এ মেলার মাধ্যমে নগরবাসীর মধ্যে সৌন্দর্যবোধের চর্চা এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য স্থাপন করা সম্ভব। পাশাপাশি নগরীর বাসা-বাড়ির বারান্দায় ও ছাদে সখের বাগান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করতেই ধারাবাহিকভাবে এ পুষ্প মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।'