সমুদ্র বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন: আরেফিন সিদ্দিক

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ন্যাশনাল বিচ ক্লিনআপ অনুষ্ঠানে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

ন্যাশনাল বিচ ক্লিনআপ অনুষ্ঠানে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

সমুদ্র বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় সমুদ্র বিজয় আমাদের অনেক বড় জয়। সমুদ্র বিজয়কে অর্থবহ করতে হবে, এটাকে অর্থবহ করতে সমুদ্র বিষয়ক গবেষকদের ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সমুদ্র সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ‘সেভ আওয়ার সি’ এবং মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের যৌথ আয়োজনে কক্সবাজারের লাবনী সৈকতে ‘ন্যাশনাল বিচ ক্লিনআপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, ফ্লোরিডার মিয়ামি সৈকতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা যাচ্ছেন, সিনেমার শুটিং চলছে। অথচ সেই সমুদ্র সৈকত আমাদের কক্সবাজারের তুলনায় কিছুই না।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য বলেন, শুধু আমাদের সমুদ্র ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনাগত সমস্যার কারণে এটা হচ্ছে না। এবার একটি সুযোগ এসেছে। জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে আমাদের নতুন করে চিন্তা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে পর্যটন করপোরেশন গঠন করেছিলেন। কক্সবাজার সৈকতের কাছাকাছি স্থাপনা চলে এসেছে, এটা অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করেছে। স্থাপনা থাকতে পারে, সেটার একটা লিমিট থাকা উচিত। মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার নিয়ে কক্সবাজারকে সুন্দর ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে এসে সমুদ্রকে দেশের কল্যাণে, জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।

আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, একটি পৃথিবীতে আমরা দেশগুলো ভাগ করলেও প্রকৃতি কিন্তু বিভাজন মানে না। ভৌগোলিক সীমারেখা মানে না। পাকিস্তান ও ভারতে বায়ু দূষণ ও সমুদ্র দূষণ বেড়ে গেলে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর বায়ু দূষণের ফলে আমাদের দেশে এর প্রভাব পড়ছে। ফলে তাদের যেমন সচেতন থাকতে হবে তেমনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব জলবায়ু সংক্রান্ত সম্মেলন হয়, সেখানে তিনি এসব নিয়ে কথা বলেন। সম্মিলিতভাবে ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়ে সমুদ্র বিজয় করে এনেছেন। একইভাবে তিনি সমুদ্রের দায়িত্বও গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা মেরিন বিভাগ খোলা হয়েছে।

আয়োজক সংগঠন মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক-কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে একটা সচেতনতামূলক পরিস্থিতি তৈরি করা, কর্তৃপক্ষের যেসব গাফিলতি আছে তা মানুষের সামনে তুলে ধরা। আমি সাংবাদিক বন্ধুদের বলব— প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্য তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট পাস করেছেন। এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে সব ধরনের স্থাপনার উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে কক্সবাজারের যদি উন্নয়ন করা না যায় তাহলে উন্নয়ন পূর্ণ হবে না। এখানে যেসব সমুদ্র এবং পাহাড়ি সম্পদ রয়েছে, এটা আমাদের পরিকল্পনার অভাবে যদি কাজে লাগাতে না পারি তাহলে এটি আমাদের বড় ব্যর্থতা।

কক্সবাজার জেলা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর রশিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারকে শ্রেষ্ঠ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর সঙ্গে ২৪০ জন জনবল নিয়োগের অনুমতিও তিনি দিয়েছেন। বর্তমানে আমাদের প্রত্যক্ষ জনগণের সংখ্যা খুবই কম, অ্যাটাচমেন্ট জনবল দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। খুব শিগগিরই আমাদের প্রত্যক্ষ জনবল নিয়োগ হবে এবং প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছেন তার বাস্তবায়ন হবে।

সেভ আওয়ার সি-এর পৃষ্ঠপোষক আতিকুর রহমান বলেন, পর্যটকদের ফেলে রাখা বর্জ্য সমুদ্রে চলে যায় ফলে সমুদ্রের প্রাণীগুলোর সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে সমুদ্রের সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সেন্টমার্টিন কোরাল দ্বীপ নয়, সেখানে কোরালের উপস্থিতি রয়েছে মাত্র। সেন্টমার্টিনকে ছেঁড়াদ্বীপ বলা যাবে না, বিশ্বের সবগুলো দ্বীপই ছেঁড়াদ্বীপ। শুধুমাত্র ব্যবসার জন্য এটাকে এভাবে ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে।