‘ফখরুলের বক্তব্য দিশেহারা রাজনীতিকের বেসামাল বহিঃপ্রকাশ’
সারাবিশ্ব যখন একযোগে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়েছে, তখন অর্বাচীনের মতো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাখা বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো দায়িত্বশীল রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব যখন দায়িত্ব কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বক্তব্য রাখেন তখন জাতি হতাশ হয়। তার বক্তব্য শুনে মনে হয় আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে একজন দিশেহারা রাজনীতিকের অসংলগ্ন প্রলাপ ও ব্যর্থতার বেসামাল বহিঃপ্রকাশ।
শনিবার (০৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জাতীয় দুর্যোগে যখন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সাধারণ জনগণের পাশে থেকে জনগণকে আশ্বস্ত করে চলছেন, ঠিক তখনই মির্জা ফখরুলরা ভুল তথ্য উত্থাপন করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দুর্যোগের এই মুহূর্তে বিভেদ নয় এটা বিএনপির বোধগম্য নয়।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার নির্দেশে জনগণকে সচেতন, সর্তক ও দায়িত্বশীল করার কাজ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনায় তিনি সব কিছু করণীয় সম্পর্কে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই একটা গাইড লাইন প্রস্তুত করে রেখেছেন এবং এই ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন ও দায়িত্বশীল জনগণকে প্রধান নিয়ামক করে সম্মিলিত প্রয়াস গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলছে।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আপদকালীন সময়ে জাতির অভিভাবক হিসেবে গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। ফখরুল ইসলাম আলমগীররা যদি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ওই কর্মসূচিকে ভিত্তি ধরে কোন প্রস্তাব দিতেন আমরা মনে করি সেটা জাতির জন্য আশাব্যঞ্জক হত। কিন্তু তারা সেটা না করে সরকারে বিরুদ্ধাচারণের নামে বিপরীত প্রস্তাব জাতির সামনে তুলে ধরে উল্টো জাতিকে বিভ্রান্ত ও উদ্বিগ্ন করে তুলছে।
এ সময় তিনি ভারতের উদাহরণ টেনে বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি ভারতে এই দুর্যোগের সময় বিজেপি সরকার গৃহীত কর্মসূচিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধী তার লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন। আজকে করোনা আক্রান্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে মির্জা ফখরুল ও তার দল এ সংকটকে আরও ঘনীভূত করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণের ঐক্যের দুর্গকে নস্যাৎ করতে চায়।
কাদের আরও বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে কমপক্ষে এক হাজার এবং প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে দুটি করে নমুনা সংগ্রহ করার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার করোনার সংক্রমণ অন্য দেশের তুলনায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হওয়ায় হয়তো তারা মনে মনে ব্যথা পেয়েছেন, সেটাই হয়তো তাদের গাত্রদাহের কারণ। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তারা আরও খুশি হতেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তা আমাদের উর্ধ্বগামী অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উল্টো। এই ধরনের বিভ্রান্তকর তথ্য জনগণকে শুধু হতাশই করতে পারে। একজন অর্থনীতিবিদ যেখানে বলেছেন এই সংকটের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। সেখানে অর্থনীতির সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এমন প্রস্তাব সংকটকে ঘনীভূত করবে।