আশুলিয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমজমাট সবজির হাট

  • মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখে দিতে সাভার উপজেলা প্রশাসন দোকান, খাবার হোটেল বন্ধ ঘোষণা করেছে। সময় বেধে দিয়েছে কাঁচাবাজার ও মাছের বাজারের। যা সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বাধিক সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দেশে যখন এত কিছু বন্ধ করা হল ঠিক তখন বিকেলে বড়োসড়ো বাজার বসিয়ে নিশ্চিন্তে কেনা বেচা করছেন আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা। বিন্দুমাত্র সচেতনতার লেশমাত্র নেই এখানে। উপজেলা প্রশাসনের এতো কঠোরতা এতো সচেতনতামূলক কার্যক্রম তা এই বাজার দেখলে অনর্থকই মনে হবে।

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়তে শুরু করেছে। এপর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৪ জন। যা গত দুই দিনে লাফিয়ে বেড়েছে। এর আগে তেমন প্রভাব দেখা না গেলেও এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে সকল সরকারি ও বে-সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দোকানপাটসহ হাটবাজার। কিন্তু প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাজার বসছে যথানিয়মে।

বিজ্ঞাপন
 নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমজমাট সবজির হাট
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বসছে এসব বাজার

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পূর্বনির্ধারিত দিন অনুযায়ী বসেছে বিশাল বাজার। যা দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহের মঙ্গলবারে এই বাজার বসে আসছে। আর এই বাজারে কোনধরনের সচেতনতার আভাস পাওয়া যায় নি। এই ভাইরাসের ভয়াবহতাকে তুচ্ছ করে তারা করছে ভোগ্য পণ্য বেচাকেনা।

বাজার করতে আসা পোশাক শ্রমিক আওলাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এখানে সপ্তাহে একদিন বাজার বসে। আমার ঘরে কোন রকম বাজার নেই। আর আজতো বাজােরে দিন। সব ধরনের বাজার পাওয়া যাবে, তাই একবারে অনেক বাজার করার জন্য এসেছি। বাজার করে বাসায় রেখে একমাস ধরে খাবো আর বের হবো না। দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ তাই, আগামী ১ মাস ঘর থেকে না বের হলেও যেন চলে, সে ব্যবস্থা করার জন্যই মূলত বাজারে এসেছি।

বিজ্ঞাপন

অপর ক্রেতা মমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, এদিকে সকালে বাজার বসে তা ১০ টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে বাজার করতে পারি নাই। তাছাড়া আজ বাজারের দিন আজ তো বাজার করতেই হবে। বাজারে কম দামে জিনিস পাওয়া যায়। একই বাজারে অনেক ধরনের সতেজ সবজি পাওয়া যায় তাই বাজারে এসেছি। এখানে অনেক কৃষকরাই তাদের জমির উৎপাদিত সবজি বিক্রয় করতে আসে।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে বাজার
হরদম চলছে বেচাকেনা

ষাটোর্ধ সবজি বিক্রেতা কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, আগে জমি থেকে সবজি পাইকাররা কিনে নিয়ে গেছে। গত ১২ থেকে ১৫ দিন ধরে কেউ কিনতে আসে না। সব পাইকাররা নাকি কি যেন ভাইরাসের ভয়ে বাড়ি চলে গেছে। জমিতে সবজি গুলো পেকে যাচ্ছে, দুই একদিক থাকলে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই নিজেই তুলে বাজারে আনলাম। বিক্রি তো আগের মতই হচ্ছে, ক্রেতাও কমেনি মনে হচ্ছে আরো বেড়েছে।

পেঁয়াজ বিক্রেতা হারুন বলেন, আজ বেচাকেনা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি। ভাইরাসের ভয়ে বেশি বেশি করে দ্রব্যসামগ্রী কিনছে মানুষ। আগে ৫ কেচির ওপরে পেঁয়াজ কেনেনি কেউ। আজ ২০ কেজি পর্যন্ত কিনছেন অনেকেই। ভাবছি আজ এই পেঁয়াজগুলো বিক্রি করতে পারলে আর দোকান বসাবো না।

এব্যাপারে আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজোয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাত বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।