ছয় মাসের বেতন ও অফিস ভাড়া চায় স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো
স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর কর্মীদের জন্য এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এ ছয় মাসের বেতন এবং অফিস ভাড়া বাবদ সরকারের কাছে সাড়ে চারশ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে চেয়েছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইকুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব)।
এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব তারা বুধবার (৮ মার্চ) অর্থমন্ত্রীর কাছে ই-মেইল করে পাঠিয়েছে।
দেশের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ভিসিপিয়াব।
অর্থমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে তারা বলছেন, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে দেশের স্টার্টআপ ব্যবসাসমূহ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে বিক্রয় ও সেবা গ্রহণ বন্ধ হয়ে গেছে। সে কারণে দেশের প্রায় ৩০০ স্টার্টআপের প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেখানে প্রত্যক্ষভাবে কর্মরত প্রায় দেড় লাখ কর্মীর চাকরি হুমকির সম্মুখীন বলে তারা হিসেব করেছেন।
এছাড়াও স্টার্টআপগুলোর সাথে পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় সাত লাখ সেবা প্রদানকারী তাদের সেবা প্রদান করতে পারছে না বলেও জানিয়েছে ভিসিপিয়াব।
ভিসিপিয়াব-এর হিসেব বলছে, অনেক স্টার্টআপের রফতানি আয় আছে, যা অন্তত পক্ষে ৮০ শতাংশ কমে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আর এসব প্রেক্ষাপটে ভিসিপিয়াব এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোতে কর্মীদের বেতনের একটি অংশ এবং অফিস ভাড়া সরকারি অনুদান হিসাবে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বলে জানান ভিসিপিয়াব-এর মহাসচিব শওকত হোসেন।
ভিসিপিয়াব- এর অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে দুর্যোগকালীন সময়ে চালু থাকা অনলাইন ক্লাসরুম, ডিজিটাল শিক্ষণের বিষয়বস্তু, স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন কন্টেন্ট, বিনোদনমূলক কন্টেন্ট ইত্যাদির কাজগুলোর একটি অংশ দেশীয় স্টার্টআপদেরকে দেওয়া।
তাছাড়া সরকারি কাজে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া, তাদেরকে দুই শতাংশ সুদে জামানতবিহীন ঋণ প্রদান এবং সরকারের স্টার্টআপ বাংলাদেশ এর আইডিয়া প্রকল্পের তহবিল থেকে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড কোম্পানিগুলোর তহবিলে অর্থ (ফান্ড অফ ফান্ড হিসাবে) প্রদান।
ভিসিপিয়াব সভাপতি শামীম আহসান বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দেওয়ার পর গত ১২ বছরে উদ্যোক্তারা তাদের রক্ত, ঘাম এবং ত্যাগের ফলে দেশে অনেকগুলো উদ্ভাবনী স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু আজ এই কোভিড-১৯ মহামারির প্রকম্পনে আমাদের তিলে তিলে গড়ে তোলা স্টার্টআপ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকোসিস্টেমটি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে যা সরকারের প্রণোদনা ও আশু পদক্ষেপ ছাড়া মুখ থুবড়ে পড়বে।
শওকত হোসেন বলেন, তাদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ভিসিপিয়াব এর সদস্য ও পোর্টফোলিও কোম্পানিগুলোর আয় ও নগদ প্রবাহ অব্যাহত থাকবে এবং ব্যবসার উপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ওপ্রাইভেট ইক্যুইটি ফার্মগুলো দেশ ও বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে স্টার্টআপদের অর্থায়ন বা পুনঃঅর্থায়নের মাধ্যমে সচল করে তুলতে পারবে বলেও আশা করেন তিনি।