'সামাজিক সুরক্ষায় ৮ হাজার কোটি টাকা অনুদান প্রয়োজন'
দুর্যোগ মোকাবেলায় নিম্ন আয়ের মানুষের সামাজিক সুরক্ষায় ৮ হাজার কোটি টাকা অনুদান একান্ত জরুরী প্রয়োজন বলে মনে করছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।
বুধবার (৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২০ ভাগ লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে অবস্থান করলেও করোনা'র কারণে অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত অনেক লোক দারিদ্র্য পীড়িত হয়ে পড়বেন। এই প্রেক্ষিতে দেশের ৪০ ভাগ লোক তথা ১ কোটি ৩০ লক্ষ পরিবারের জন্য দুর্যোগকালীন বিশেষ সহযোগিতার প্রয়োজন হবে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আসন্ন রমজানকে বিবেচনায় নিয়ে আগামী দুই মাসের জন্য তাদের জন্য পরিবার প্রতি মাসিক ৩০০০ টাকা অনুদান প্রদানের জন্য আট হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দরকার হবে। আমাদের বর্তমান বাস্তবতায় এই বরাদ্দ প্রদানের সক্ষমতা সরকারের আছে, যার পরিমাণ আমাদের জিডিপির ০.২৮ ভাগ। একইসাথে আমাদের টাকা লেনদেনের মাধ্যম যথা বিকাশ, নগদ, রকেট প্রভৃতি ব্যবহার করে এই অর্থ নিম্ন-আয়ের মানুষের নিকট যথাযথভাবে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে পারি।
এই টাকার সুষ্ঠু বণ্টন এবং সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবার জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো নির্ধারণ করতে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে করণীয়সমূহ ঠিক করা যেতে পারে। জাতিসংঘ এবং উন্নয়ন অর্থনীতি ও পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি নগদ অর্থের প্রবাহ স্থানীয় অর্থনীতি চলমান রাখতে সহায়তা করে এবং নিম্ন আয়ের লোকদের জরুরি বিভিন্ন চাহিদা মেটাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিকল্প হিসেবে, আট হাজার কোটি টাকার অংশ বিশেষ নগদ বরাদ্দ এবং বাকী অংশের সমমূল্যের খাদ্য ও অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারসমূহের নিকট পাক্ষিক/মাসিক ভিত্তিতে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বিবৃতিতে জানান, করোনা মোকাবেলায় নিম্ন আয়ের লোকদের সহযোগিতা প্রদানের জন্য সরকারি অনুদান তহবিলে রমজানের যাকাত প্রদানের জন্য সাধারণ জনগণকে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারলে সরকারের পক্ষে আসন্ন এই সংকট মোকাবেলা করা সহজ হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগে ধর্মীয় নেতা, ইমামসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ত করে এই উদ্যোগকে ফলপ্রসূ করা যেতে পারে।
দেশের এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সরকারী সহযোগিতা ও ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি রোধে প্রয়োজনীয় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নেয়া দরকার, যেন অভাবগ্রস্ত পরিবারসমূহ সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং সরকারি অনুদানের ন্যায্য এবং সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যায়।