মরিচ যেন কৃষকের গলার কাঁটা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বালুচরে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হলেও চাষিদের মুখে হাসি নেই। করোনাভাইরাসের প্রভাবে মরিচের দাম কম থাকায় কৃষকের উৎপাদিত মরিচ এখন যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকার চরের কৃষক শফিকুল ইসলাম, মাইদুল ইসলাম ও ধুমাইটারীর শাহিন মিয়া, রাজা মিয়াসহ আরও অনেকে কাঁচা মরিচ ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে নিয়ে এসেছেন । বাজারে এসে দেখেন মরিচের দাম কম।
জানা যায়, গাইবান্ধার নদ-নদী বেষ্টিত উপজেলা সুন্দরগঞ্জ। এ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের চরগুলোতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি মরিচ চাষই বেশি করা হয়। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। আর্থিক লাভের আশায় বিভিন্ন চরে ১৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করা হয়েছে। ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। আর এ ফসল বিক্রির পূর্ব মুহূর্তে দেশে দেখা দিয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। এর প্রভাবে ক্ষেতের মরিচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কারণ করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে সব কিছু বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেখা দিয়েছে পাইকার ও পরিবহন সংকট। একই সঙ্গে বাজার দরও কম। সবমিলে উৎপাদিত মচির যেন গলার কাঁটা হয়েছে কৃষকের। সম্প্রতি এ ফসল বিক্রিতে লোকসানের আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। এমন সমস্যা শুধু সুন্দরগঞ্জে নয়, গাইবান্ধার সবকটি উপজেলার মরিচ চাষিদের একই অবস্থা।
কৃষক মাইদুল ইসলাম জানান, এবছরে দুই বিঘা জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে। ক্ষেতে বীজ, সার, কীটনাশক, হালচাষ ও শ্রমিকসহ বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ফলনও হয়েছে অনেক ভালো। বিঘাপ্রতি প্রায় ২০ থেকে ২৫ মণ মরিচ তোলা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, করোনার প্রভাবে পাইকার ও পরিবহন সংকট থাকায় স্থানীয় বাজারে ২৬০ টাকা মণ দরে মরিচ বিক্রি করে লোকসানের হিসাব কষতে হচ্ছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার রেজা-ই-মাহমুদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাদের বাজারজাতকরণ একটি বড় সমস্যা। তাই কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে কৃষি অফিস এর পক্ষ থেকে মরিচ কিনে ত্রাণের সাথে সংযুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।