ত্রাণ আত্মসাৎ: আরও ৭ ইউপি চেয়ারম্যান ও ৩ সদস্য বরখাস্ত
ত্রাণ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও সাত জন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তিন জন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ নিয়ে মোট ৩৫ জন জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হলো। তাদের মধ্যে ১৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ১৯ জন ইউপি সদস্য এবং একজন জেলা পরিষদ সদস্য।
বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্তকৃত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা হলেন- বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের মো. নূরে আলম বেপারী, ভোলা জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মো. মিজানুর রহমান খান, পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের মো. মনির রহমান মৃধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের শাহ আল শফি আনসারী, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নের মো. সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের জারজিদ মোল্লা এবং কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন চৌধুরী।
এদিকে, সাময়িক বরখাস্তকৃত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মো. রফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার গলাচিপা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মহিউদ্দিন সোহেল এবং একই উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. লিপি বেগম।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটের সময় তাদের বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাৎ, জাটকা নিধনে বিরত থাকা জেলেদের জন্য সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাল আত্মসাৎ ও কালোবাজারে বিক্রি, সরকারি ত্রাণের চাল ভুয়া মাস্টাররোলে বিতরণ দেখিয়ে আত্মসাৎ, সরকারি ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত চাল নির্ধারিত পরিমাণে প্রদান না করা ও বিধিবহির্ভূতভাবে অন্যদের মাঝে বিতরণ ইত্যাদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
এদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আল শফি আনসারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় এলাকায় অবস্থান না করে বিনা অনুমতিতে বিদেশ গমন করেছেন এবং নেত্রকোনা জেলার গাঁওকান্দিয়া ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ষাঁড়ের লড়াই আয়োজনের মাধ্যমে গণজমায়েত করে জন জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন।
তাদের কয়েকজন এরইমধ্যে গ্রেফতা হয়ে জেলহাজতে আছেন।
উল্লেখিত চেয়ারম্যান ও সদস্য কর্তৃক সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
একইসময় পৃথক পৃথক কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাদেরকে চূড়ান্তভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো তাজুল ইসলাম ইতোপূর্বে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।