নেতাদের দেখা নেই, পরিবহন শ্রমিকদের ভরসা এখন আল্লাহ
বর্তমানে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশে সব ধরনের গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। এতে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে পরিবহন শ্রমিকদের আয়ের পথ। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। দেশের এমন ক্রান্তিলগ্নে ত্রাণের দাবিতে বর্তমানে রাস্তায় নেমে আসতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে শ্রমিক নেতারা নাম এবং পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রকার ত্রাণ তাদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ সাধারণ শ্রমিকদের। এসব শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করেছে নামধারী নেতারা। মাসিক চাঁদা আদায়ও করেছেন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। অথচ বর্তমানে কোনো খোঁজ নেই এসব পরিবহন শ্রমিক নেতাদের।
ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলরত হিমাচল বাসের চালক ওয়াসিম (৩৮) বলেন, ‘আজকে একমাসের বেশি সময় ধইরা বাইত বইসা আছি। মালিক ১ হাজার টাকা দিসিলো গাড়ি বন্ধ হওয়ার ৭ দিন পর। এরপর আর কোনো খবর নাই। আমাগো নেতারা ছবি নিলো কার্ডের ফটোকপি নিলো ত্রাণ দিব বইলা, কিন্তু পাইনাই কেউ। ট্রাকগুলা তো ঠিকই চালায়া কামাইতাছে। আমরা বাস চালাই বইলা আটকায়া গেসি।’
একইভাবে বাঁধন বাসের চালক মনসুর বলেন, ‘আমাগো বেতন নাই। ড্রাইভারি করলে টাকা, না করলে নাই। এতদিন যা কামাইছি সব শেষ। ধার দেনা কইরা চলন লাগে। গার্মেন্টস খুলছে, গাড়ি কবে খুলব কে জানে। ত্রাণ চাইলে নেতারা কয় আইতাছে। সারাবছর টাকা নিসে এই সেই বইলা, এখন বিপদের সময় নাই। কবে ত্রাণ আইব খোদায় জানে।’
নাম গোপন রাখার শর্তে এক পরিবহন শ্রমিক নেতা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরাই তো ত্রাণের দাবিতে আন্দোলন করছি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে। ত্রাণের লিস্ট প্রশাসনকে দিলেও তারা আমাদের কোনো ত্রাণ দেয়নি। তাই আমাদের এই আন্দোলন।’
কিন্তু বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেসব আমরা বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমা থেকে বাঁচাতে খরচ করি। অনেক সময় দুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিক আহত হলে তাদের পেছনে খরচ করি। সেই টাকা ত্রাণ হিসেবে দেওয়ার সুযোগ নেই।’
তবে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম বেপারী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘পরিবহন শ্রমিকদের থেকে ত্রাণের জন্য কোনো আবেদন আমরা পাইনি। পেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’