বাড়ছে যমুনা নদীর পানি, শুরু হয়েছে ভাঙন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে নদীর ভাঙন। বিগত ভাঙনের পর যেটুকু সম্বল বেঁচে ছিল, সেটিও ভাঙনের আশঙ্কায় চরম হতাশায় দিন পার করছেন নদীপাড়ের মানুষ।
গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি, কষ্টাপাড়া ও ভালকুটিয়া এলাকায় যমুনা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে।
শনিবার (২ মে) সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশে করোনাভাইরাসের মধ্যে নদী ভাঙন যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা দেখা দিয়েছে নদী পাড়ের মানুষের। পানি বাড়তে থাকায় নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। নদীর দেড়শ মিটারের মধ্যে থাকা বহু ঘর-বাড়ি, স্কুল, মসজিদ, মন্দির, পোল্ট্রি খামার হুমকির মুখে পড়েছে।
যদিও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, ভাঙন থেকে রক্ষা করতে নদী ড্রেজিং করে বাঁধ নির্মাণ ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
প্রতি বছর যমুনা নদী ভাঙনের ফলে তার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ক্রমেই পূর্বদিকে ধাপিত হচ্ছে। আবার বালু খেকোরা অবৈধভাবে নদীতে জেগে ওঠা চর অপরিকল্পিতভাবে কেটে ট্রাকযোগে বিক্রি করছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার খানুরবাড়ি, ভালকুটিয়া ও কষ্টাপাড়ায় এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, গেল বছর ভাঙনরোধে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের খানুরবাড়ি এলাকায় ২০০ মিটার এলাকায় নামমাত্র নিম্নমানের জিও ব্যাগ ফেলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা ভাঙনরোধে কোনো কাজেই আসেনি। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা পানিতে চলে গেছে। তবে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান তারা।
খানুরবাড়ি গ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা নদীতে খুব পরিমাণে পানি না বাড়লেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে।’
কষ্টাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম মনি বলেন, ‘গত বছর চোখের সামনে বাড়ির জায়গা জমিসহ একটি ঘর যমুনা নদীতে ভেঙে গেছে। বাকিটুকুতে পরিবার নিয়ে ঝুঁকিতে নদীপাড়ে বসবাস করছি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে আর তাতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।’
টাঙ্গাইল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ের টাঙ্গাইল অংশ ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য প্রকল্প তৈরি করে সেটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।’