পুলিশ: করোনার প্রতিরোধে যারা লড়ছেন সর্বক্ষণ



ড. মাহফুজ পারভেজ , ড. মো. কামাল উদ্দিন
সার্বক্ষণিক কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সার্বক্ষণিক কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যস্ত, বাণিজ্যিক শহরের চট্টগ্রামের এমন ছবি একেবারেই অচেনা, অজানা। মনে হবে সুনশান-নিস্তব্ধতা ভর করছে পুরো মহানগরের সর্বত্র। যে নাসিরাবাদ-ষোলশহর স্বাভাবিক সময়ে যানজট ও ভিড়ের জন্য কুখ্যাত, সেখানে খা খা শূন্যতা।

জিইসি মোড় চট্টগ্রামের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পথের সংযোগ। সেখানেও দমবন্ধ ভিড় ও জট নেই। সবাই চলছে সতর্কতার সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে। কেমন করে পরিস্থিতির উন্নতি হলো, জানতে চাই সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট সাইফুল ইসলামের কাছে।

বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, 'করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে পরিস্থিতি এমন ছিলনা। সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধের পরোয়া করেনি সাধারণ মানুষ। দিনে দিনে পরিস্থিতি বদলেছে। মানুষ সচেতন হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত শহরের প্রধান সড়ক থেকে পাড়া-মহল্লা, বস্তি পর্যন্ত টহল দিচ্ছেন৷ মাইকিং করছেন।  অহেতুক ভিড়, ঘোরাঘুরি, আড্ডা বন্ধ করতে পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য কঠোর ভূমিকা পালন করছেন।'       

সারা দিন তো বটেই, বিকেল, সন্ধ্যা, রাতে চট্টগ্রামের মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মাইকিং করে টহল দিতে দেখা যায়। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব ও সঙ্গরোধ পালন করে ঘরে থাকার জন্য প্রণোদিত করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

সন্দেহ নেই,  বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলার লড়াইয়ে সামনের সারিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন যারা, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী তাদের অন্যতম। ব্রিটিশ আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত, বিশেষত মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ পুলিশে উজ্জল ভূমিকা রয়েছে। চলমান করোনার আক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসক, সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি বীরের মতো মাঠে-ময়দানে সর্বক্ষণ লড়ছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।

করোনার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে রোববার (৩ মে) পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ৫ জন পুলিশ বাহিনীর সদস্য মারা গেছেন, মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫৪ জন, কোয়ারেন্টাইনে আছেন এক হাজার ৫০ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ৩১৫ জন।

করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের গণমুখী ও জনকল্যাণমূলক ইমেজ আরো স্পষ্টভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে। একটি সরকারি সংস্থা হিসেবে আবারো ত্যাগ, পরিশ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠায় পুলিশ বিভাগের উজ্জ্বল অবস্থান দেখা গেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমরা অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে জানি, তাঁরা মানুষ হিসেবে যেরকম ভালো,  সততা ও নিষ্ঠার সাথে মানুষকে সেবা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাদের কাজ দেখে পুলিশ সম্পর্কে ধারণা উজ্জ্বল হয়।

বিশেষত, সাধারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার পাশাপাশি দুর্যোগকালীন মুহূর্তে বাংলাদেশ পুলিশ প্রায় সব সময় সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। জনগণকে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে পিছপা হয়নি কখনোই। পুলিশ চাইলে অনেক কিছু করতে পারে, সে সামর্থ্য পুলিশের আছে, যা দেশে-বিদেশে প্রমাণিত।

বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যগণ জাতিসংঘের শান্তি মিশনে কাজ করে দেশের জন্য প্রভূত সুনাম কুড়িয়েছেন। শান্তি মিশনে পৃথিবীর উন্নত দেশের অনেক পুলিশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ থাকলেও বাংলাদেশের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ নেই। বিশ্ব শান্তির জন্য তারা স্থাপন করেছেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

ফলে সবার মধ্যেই আশার সঞ্চার হয়েছে যে, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে শান্তিরক্ষায় যেমন সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ ভূমিকা রাখতে পারছেন,  করোনা কালীন দুর্যোগেও তারা সে দক্ষতা ও সক্ষমতা দেখাচ্ছেন। বস্তুত, কাজের মাধ্যমেই পুলিশ বাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করতে সফল হয়েছেন।

লক্ষ্য করে দেখা গেছে, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদের দেশে চরম মাত্রায় অমানবিকতার দৃশ্যপট ফুটে উঠেছে। যেমন অসুস্থ মাকে রাস্তায় ফেলে দেয়া,  সামাজিকভাবে কোরোনা রুগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের লাঠিসোটা দিয়ে আক্রমণ করা। শুধু করোনায় সামাজিক সচেতনা বজায় রাখার ক্ষেত্রেই নয়, বহুবিধ মানবিক প্রয়োজনে বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী সদস্যরা এগিয়ে এসেছেন। রাস্তায় সামাজিক দূরত্ব, নিজের উদ্যোগে ত্রাণ দেয়া, চিকিৎসা সেবা পেতে সহযোগিতা করা, এসকল ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। ফলে পুলিশ সদস্যের অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে। তবুও মনোবল হারায়নি তারা। এখনো নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শেষ পর্যন্ত কাজ করে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে নিজেদেরকে উৎসর্গ করার উচ্চ আদর্শ সমুন্নত রাখছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।

করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা নিবিড় হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পুলিশের যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে অটুট রাখতে হবে। পুলিশকে হীন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে কলুষিত করার অপচেষ্টাও বন্ধ করতে হবে।  

পুলিশের কার্যক্রমকে সবধরনের রাজনৈতিক টাউট ও দালাল মুক্ত করতে হবে। পুলিশের সাথে সরাসরি জনগণের সম্পর্ক আরো নিবিড় করতে হবে। জনগণের সাথে পুলিশের আচরণের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক ধারা তৈরি করতে হবে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তারা আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হন। রাজনৈতিক টাউট, অর্থনৈতিক এলিট ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ক্ষমতার দাপটে পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে অসহায় হয়ে পড়ে। এ সমস্যার আশু সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের বর্তমান ইমেজ ধরে রাখার জন্য সমাজের সকল ধরনের ভালো কার্যক্রমে সব সময় তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি  করতে হবে। 

বাংলাদেশের পুলিশ সাধারণত গতানুগতিক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে, বর্তমান যুগে নিরাপত্তা সংজ্ঞাটি পরিবর্তন হওয়ায়  অগতানুগতিক নিরাপত্তা, যেমন দারিদ্র বিমোচন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণ, দুঃস্থদের জন্য কাজ করা, পথ শিশুদের জন্য কাজ করা, বস্তিবাসীদেরকে শিক্ষার মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখা ইত্যাদি অগতানুগতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পুলিশকে বেশি পরিমাণ কাজ করতে হবে। এ কাজগুলোর মাধ্যমে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব কমে আসবে। পুলিশ সমাজের বঞ্চিত মানুষের আস্থার ও বিশ্বাসের প্রতীকে উত্তীর্ণ হবে।

একই সঙ্গে, পুলিশের কাজের জবাবদিহিতা যেরকম নিশ্চিত করতে হবে, তেমনিভাবে পুলিশের উপর অতিরিক্ত চাপও কমাতে হবে।  তাদের ওপর একসাথে নানা কাজের চাপ থাকলে তারা পুলিশিং কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনা। তাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। পুলিশের সাথেও মানবিক আচরণ করতে হবে তাহলে পুলিশও নাগরিকদের প্রতি মানবিক আচরণ করবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নমুখী অভিযাত্রাকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ত্বরান্বিত করতে পারবে।   

অবিভক্ত ব্রিটিশ-বাংলার ঐতিহ্য নিয়ে যে পুলিশ বাহিনী গড়ে উঠেছে, তার সুনাম ছিল সমগ্র বিশ্বে। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বেঙ্গল পুলিশ। পরবর্তীতে দেশভাগ, রাজনৈতিক পালাবদল, সুশাসনের অবক্ষয়ের ফলে পুলিশ বাহিনীকেও নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে। তদুপরি, বার বার যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে এ বাহিনী জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রাখতে সচেষ্ট হয়েছে।

একবার কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের চরম অবক্ষয়ের মুখে সৌমেন মিত্রের নেতৃত্ব সেখানকার পুলিশ হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার করে। সেন্ট জেভিয়ার্স, প্রেসিডেন্সি, দিল্লির জহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে অধ্যয়নকারী সৌমেন মিত্র এমফিল গবেষণা ছাড়াও হেরিটেজ, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, ক্রিকেট, দাবা, গোয়েন্দা ক্ষেত্রে জড়িত ছিলেন, যার ইতিবাচক প্রভাব পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন ও গতিশীল করার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ পুলিশের নেতৃত্বের বিভিন্ন পর্যায়েও উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এমন অনেকে সুযোগ্য অফিসার আছেন, যাদের পেশাগত, বুদ্ধিবৃত্তিক ও বহুমাত্রিক দক্ষতা সুবিদিত। বিশেষ করে, পুলিশের বর্তমান প্রধান বেনজীর আহমেদ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে র‌্যাবের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এবং দেশে-বিদেশে পেশাগত কৃতিত্ব ও সাফল্যের অধিকারী। ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী বর্তমান চৌকস নেতৃত্বে জনবান্ধব ইমেজে শুধু করোনাকালীন সময়েই নয়, দেশ ও জাতির সকল প্রয়োজনে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করবে বলে সকলেই আশাবাদী।


ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম ও প্রফেসর, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রফেসর,  আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

   

দেশটা আওয়ামী মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশটা এখন আওয়ামী মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে।

৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে জোর জবরদস্তিমূলকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।

দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর ও কারান্তরীণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

বিবৃতিতে আরও বলেন, অব্যাহত গতিতে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করে বিরোধী নেতাকর্মীদের পর্যদুস্ত ও নাজেহাল করা হচ্ছে। আর এ ধরনের অপকর্ম সাধনের একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে- দেশের বিরোধী দলগুলো যেন দখলদার সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের সমালোচনা করতে সক্ষম না হয়।

বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের মাধ্যমে গোটা দেশকেই কারাগারে পরিণত করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

বিবৃতিতে বলা হয়, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সহ সভাপতি শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদল সভাপতি ও যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মমিনুল ইসলামের (দলিল লেখক) জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে প্রেরণ জুলুমবাজ আওয়ামী সরকারের চলমান নিরবচ্ছিন্ন অপকর্মেরই অংশ।

;

মামার বিয়েতে এসে লাশ হয়ে ফিরলো ভাগ্নে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মামার বিয়েতে এসে পানিতে ডুবে মারা গেছে চার বছরের ভাগ্নে মো. সামি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেলার বরিশাল গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সামি পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের সালতা গ্রামের বাসিন্দা মহসিন সরদারের ছেলে।

স্থানীয় বাসীন্দা সুমন বেপারী জানান, সামি তার পরিবারের সদস্যদের সাথে বুধবার সকালে মামা সবুজ বেপারীর বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলো। বৃহস্পতিবার বিকেলে সবার অজান্তে সামি মামা বাড়ির পুকুরে পড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর পুকুর থেকে শিশু সামিকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

;

স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সামনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদনকৃত মোট ১৯৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৪৫টি চলচ্চিত্রের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এ দিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখে চলচ্চিত্রগুলোকে স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা গোপনীয়ভাবে আলাদা আলাদা নম্বর প্রদান করেছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে। সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকার আরও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন, সরকার সেটিও নিশ্চিত করতে চায়।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাছাই কমিটির সদস্যগণ আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মানদন্ডের উপর ভিত্তি করে আবেদনকৃত চলচ্চিত্রের প্রস্তাবনার উপর আলাদা আলাদা ভাবে নম্বর প্রদান করছেন। পরবর্তীতে সকল সদস্যদের নম্বরগুলো গড় করে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আবেদনগুলো অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, যুগ্ম সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ ও আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরম্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী চলচ্চিত্রের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনমুখী, রুচিশীল ও শিল্পমানসমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত)–এর ভিত্তিতে সরকারি অনুদান প্রদান করা হয়।

;

দাঁড়িয়ে থাকা বাসে পিকআপের ধাক্কা আহত ১০ পোশাক কর্মী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের ছুটি শেষে পিকআপে কর্মস্থলে ঢাকায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনআহত হয়েছেন ১০ জন পোশাক কর্মী। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘাটাইলের সিংগুরিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন স্থানে এই ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মকবুল হোসেনের ছেলে মো. শহীদ (৩৪), তার স্ত্রী মোছা. ফেরদৌসী (২৮), শহীদুল ইসলামের ছেলে পলাশ (২৫) এবং একই জেলার সাঘাটা উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে মামুন (২৪)। অন্যান্য আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তারাও একই জেলার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ফজর নামাজের আগে সিংগুরিয়া মসজিদের সামনে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহন নামে একটি বাস দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। ভোর ৫টার দিকে ঢাকাগামী ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে বাসটিকে ধাক্কা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের ৫ জনসহ কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়। পিকআপে থাকা অন্যরা হালকা আঘাত পায়। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ভূঞাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. স্বপন আলী এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহন নামে একটি বাস ঢাকা যাচ্ছিল। বাসটি যাত্রীদের ফজর নামাজের জন্য সিংগুরিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ যাত্রীবোঝাই একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা সবাই আহত হন।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে এবং আহত অবস্থায় ৪ জনকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইলের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি। এরআগে আমরা পৌঁছানোর আগে স্থানীয়রা অপর আহত ৫ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।

ঘাটাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল রানা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যাত্রীদের ফজর নামাজের জন্য হানিফ পরিবহন নামে বাসটি মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ একটি পিকআপ পেছন থেকে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী আহত হয়। এদের মধ্যে কেউ ভূঞাপুর, কালিহাতী ও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

;