বগুড়ায় ধানের বাম্পার ফলন, শ্রমিক সংকটে কৃষক
মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। ৮০ ভাগ ধানই কাটার উপযোগী হয়েছে আরো এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক। বাজারে নতুন দাম ভালো থাকলেও জমির ধান কাটা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা।
বুধবার (১৩ মে) বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকের সাথে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ৮৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। গত এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়। বগুড়া অঞ্চলে ধান কাটা নির্ভর করে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের শ্রমিকের উপর। কিন্তু এবার করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ও যানবাহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা আসতে পারেনি। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। চড়া দামে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা শুরু করা হলে অনেকে শ্রমিকও পাচ্ছেন না।
গাবতলী উপজেলার জামিরবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সুব্রত ঘোষ। ৮ বিঘা জমিতে বিআর-২৮ জাতের বোরো ধান চাষ করেছেন। কাটা মাড়াই শেষে তিনি বিঘা প্রতি ২৮ মণ করে ফলন পেয়েছেন। জমির ধান পেকে গেলেও শ্রমিক অভাবে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না।
তিনি বলেন, রংপুর অঞ্চলের শ্রমিক আসতে পারলে দুই হাজার টাকা বিঘা প্রতি ধান কেটে দ্রুত ঘরে তোলা যেত। কিন্তু এবার শ্রমিক সংকটের কারণে জমির পাকা ধান নিয়ে শঙ্কিত তিনি। নন্দীগ্রাম এলাকার কৃষকরা জানান, স্থানীয় শ্রমিকরা বিঘা প্রতি ধান কাটা মজুরী নিচ্ছেন চার হাজার টাকা। তারপরেও সময়মত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে বিআর-২৮ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, মিনিকেট ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা এবং স্থানীয় কাটারী ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা মণ দরে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ জেলার ১২ উপজেলায় ৭ লক্ষ্য ৭৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু উৎপাদন আরো অনেক বেশি হবে।