ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের চোখ রাঙানি, ভয়ে সুন্দরবন



রফিকুল ইসলাম মন্টু, স্পেশালিস্ট রাইটার
কপোতাক্ষ তীরের নাজুক বেড়িবাঁধ, গাবুরা, শ্যামনগর/ ছবি: র ই মন্টু

কপোতাক্ষ তীরের নাজুক বেড়িবাঁধ, গাবুরা, শ্যামনগর/ ছবি: র ই মন্টু

  • Font increase
  • Font Decrease

ফণী আর বুলবুলের ক্ষত উস্কে দিয়ে একই পথে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এখনো উপকূলের আকাশ পরিষ্কার দেখালেও ফুঁসছে সমুদ্র। মাছধরার নৌকাগুলো তীরে ফিরেছে। ঝড়ের গতিপথ এবং ভয়াবহতার খবর মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তবে এখনো অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয় ঘূর্ণিঝড়ের বার্তা।

গতি কতটা শক্তিশালী হবে, তা এখনো পর্যন্ত বোঝা না গেলেও চোখ রাঙিয়ে ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে উপকূলের দিকে। বাংলাদেশ অথবা ভারত, আঘাত যেখানেই লাগুক না কেন, এবারও সুন্দরবনেই লাগতে পারে ঝাপটা। এবারও ভয়ে সুন্দরবন। আতঙ্ক রয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষের মনে। নাজুক বেড়িবাঁধ তাদের সেই ভয় আরও বাড়িয়ে তুলছে।

ঘূর্ণিঝড় কোথায়, কতটা শক্তি নিয়ে আঘাত করবে, এখনো তা বলার সময় আসেনি, বলেছ দেশি-বিদেশি আবহাওয়া দফতরের সূত্রগুলো। তবে এখন পর্যন্ত গতি প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে মঙ্গল অথবা বুধবার এটি উপকূলের আছড়ে পড়তে পারে। মাত্র এক দশক আগে প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় আইলার সর্বোচ্চ গতি ছিল ১১২ কিলোমিটার। আম্ফানের গতি ১৭০-১৮০ কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সামনের সময়ে গতি কতটা পরিবর্তন হবে, তা বলা যাচ্ছে না। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রতলের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে অনুকূল, তাই গতি ক্রমে বাড়ছে। সেখানকার তাপমাত্রা এখন ৩০-৩১ সেলসিয়াস। কিন্তু নিকটবর্তী উপকূলে সমুদ্রতলের তাপমাত্রা অনেক কম। ফলে কাছে এসে এর গতি কমে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। স্থলভাগের শুকনো হাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের গতি আরও কমিয়ে দিবে। এমনটাই আশাবাদ আবহাওয়াবিদদের।

ঘূর্ণিঝড় ফণী আর বুলবুল আঘাত করেছিল সুন্দরবনে। এগারো বছর আগে ২০০৯ সালে আইলাও আঘাত করেছিল সুন্দরবনে। এবারের গতিও বলছে, ঝুঁকিতে রয়েছে সুন্দরবন। ঠিক এক বছর আগে ২০১৯ সালের ৩মে’র ঘূর্ণিঝড় ফণী এবং ছ’মাস আগে ৯ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সুন্দরবনের মারাত্মক ক্ষতি করতে না পারলেও ক্ষতির পরিমাণ একেবারে কম ছিল না। তবে আইলায় ক্ষতির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। সুন্দরবনের আশপাশের জনজীবন ওলটপালট করে দিয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় আইলা। সেই ক্ষত ওই এলাকার মানুষ এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। দশ বছরেও সে অঞ্চলের মানুষ ক্ষতি কাটিয়ে তো উঠতে পারেনি; বরং ঝুঁকি আরও বেড়েছে। আইলা-শক্তির ঘূর্ণিঝড় সামাল দেওয়ার শক্তি নেই সুন্দরবনের আশপাশের বহু এলাকার।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সতর্কতায় উপকূল জুড়ে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছে। কিন্তু মাঠের অবস্থা কী? জানতে চেয়েছিলাম সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডলের কাছে। তিনি জানালেন, ঘূর্ণিঝড় আসার খবরেই আমরা নড়েচড়ে বসি। আসার আগে তড়িঘড়ি করে সব কাজ করার করার চেষ্টা করি। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় চলে গেলে আর কিছু মনে থাকে না। উপর মহল আমাদের কাছে জরুরি আদেশ পাঠিয়েই খালাস। বাজেট বরাদ্দ আসবে কিনা খবর থাকে না। অথচ কাজগুলো আমাদের করে যেতে হয়। গত বছর ঘূর্ণিঝড় ফণীর পরে যেসব আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল; যেসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল; তার খুব একটা বাস্তবায়ন দেখছি না। যা হয়েছে বলা যায় জোড়াতালি।

সুন্দরবন লাগোয়া সাকবাড়িয়া নদীর তীরের নাজুক বাঁধ, কয়রা/ ছবি: র ই মন্টু

ঘূর্ণিঝড় আসার খবর এলেই নজর পড়ে উপকূলের প্রস্তুতির দিকে। পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূলের অনেক স্থানেই নড়বড়ে অবস্থা রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে। পশ্চিম উপকূলের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, দেবহাটার অনেক স্থানের নাজুক অবস্থা রয়েছে। শ্যামনগরের ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে গাবুরা, পদ্মপুকুর ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন ঝুঁকিতে রয়েছে। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চুনা নদী তীরবর্তী কলবাড়ি নামক স্থান ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া দাতিনাখালী আতিয়ার মোড়লের বাড়ির সামনে, দুর্গাভাটি নেছার মালির বাড়ি সামনে, হাকিম গাজীর বাড়ির সামনে, নীলকান্ত মেম্বারের বাড়ির পাশে, সব নিয়ে ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চারিদিকে ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১০ কিলোমিটার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানালেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম। তিনি বলেন, চার নম্বর সতর্কতা সংকেত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো আকাশে ঝকঝকে, কোথাও এক টুকরো মেঘ নেই। এখন তো মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলতে পারছি না। তবে উপরের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। মি. আলম জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আভাস এলে এই ইউনিয়নের ৪৫ হাজার মানুষ আতংকে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে আশ্বাস পেলেও তা পূরণ হয় না। ঘূর্ণিঝড় ফণী পর দু’ দু’বার মন্ত্রী এলেন, সচিব এলেন, পরিকল্পনা করলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি। এগারো বছর আগের ঘূর্ণিঝড় আইলা গোটা গাবুরা ভাসিয়েছিল লবণ পানিতে। এখনো বিপন্নতা কাটেনি।

ওদিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের চাপে বছরে বেশ কয়েকবার ভেঙে যায় বাঁধ। ভাসে গ্রামের পর গ্রাম। অনেক মানুষ এলাকা থেকে অন্যত্র চলে গেছে। বাঁধ সংস্কার কিংবা নতুন বাঁধ নির্মাণে কোন উদ্যোগ নেই। ২০০৯ সালের আইলা সে এলাকার বাঁধও নড়বড়ে করে দিয়েছিল। ফণীর পরে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল বাঁধ হবে। কিন্তু হয়নি। ফলে এবারের বর্ষা মৌসুমেও ঝুঁকিতেই রয়ে গেল আশাশুনির ওই এলাকা।

কপোতাক্ষ নদীর পাড়ে খুলনার কয়রা উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থান ঝুঁকিতে রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দা আকতারুল আলম সৌরভ জানালেন, উপজেলার দশালিয়া, উত্তর মদিনাবাদ, গোবরা, ঘাটাখালী, হরিণখোলা, কাঠকাটা, বেতবুনিয়া, ঘড়িলাল, গোলাখালী, আংটিহারা, চরামুখা এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। বেশ কয়েকদিন আগে পূর্ণিমার জোয়ারে বেড়িবাঁধ ধ্বসে লোকালয় ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করে। বর্ষাকালে এই এলাকার মানুষ চরম ঝুঁকিতে থাকে। বাঁধ মেরামতের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশ্বাস পাওয়া গেলেও কোন কাজ হয়নি। এভাবে পড়ে আছে বছরের পর বছর।

কয়রা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবন লাগোয়া দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন। এখানকার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। বর্ষায় ঝুঁকি বাড়ে। ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল না হলে জোয়ারের পানিতেই পানি উঠে যায় বাঁধ ছুঁই ছুঁই। গেল বছর মে মাসের প্রথমে ঘূর্ণিঝড় ফণী আর নভেম্বরে বুলবুলের আঘাতে এলাকার মানুষজন চরম আতংকে ছিল। বুলবুলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। মাছের ঘেরে ঢুকে পড়েছিল নোনা পানি। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কবি শামসুর রহমান বলছিলেন, ইউনিয়নের সাড়ে ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ কিলোমিটার অত্যন্ত নাজুক। এরমধ্যে আবার সাত কিলোমিটার মোটর বাইক চলাচলের অনুপযোগী। বেড়িবাঁধ এভাবে নাজুক অবস্থায় রেখে দুর্যোগের ঝুঁকি কীভাবে সম্ভব? প্রশ্ন রাখেন তিনি। মি: রহমান বলেন, সরকারি সাহায্য যা আসে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। কাকে রেখে কাকে দেই। এ এলাকায় নাজুক বেড়িবাঁধই এ এলাকার প্রধান সমস্যা। শক্ত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উঁচু বেড়িবাঁধ হলেও ঝুঁকি কমেনি খুলনার দাকোপ, কিংবা বাগেরহাটের শরণখোলায়। দাকোপের সুন্দরবন লাগোয়া সুতারখালী ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকা বরাবরই ঝুঁকিতে থাকে। ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলায় বিধ্বস্ত হওয়ার পর উঠে দাঁড়াতে পারেনি কালাবগি গ্রামটি। এলাকাটি অনেক আগেই ঝুলন্ত গ্রামে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত বেড়িবাঁধের বাইরে রয়েছে এলাকাটি। শরণখোলায় ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত করেছিল ২০০৭ সালে। যেখানে আঘাত করেছিল সেই গাবতলা, বগীর অবস্থা এখনো নাজুক। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নতুন বেড়িবাঁধ নির্মিত হলেও তা বার বার ধ্বসে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে যায়।

কেন একই পথে বার বার ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল? প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, এর কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। তবে এক এক দশকে এক এক ধরণের ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। এক সময় দেখেছি, ঘূর্ণিঝড়গুলো মায়ানমারের ওপর দিয়ে যায়। আবার দেখলাম বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে যায়। কয়েক বছর ধরে দেখছি, উড়িষ্যা-বাংলাদেশ অভিমুখে আসছে। তিনি বলেন, আম্ফান কতটা শক্তি নিয়ে উপক‚লে আঘাত করবে; সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। ফণী বা বুলবুলের গতিতে আসলে সুন্দরবন তো কিছুটা ঝুঁকিতে থাকবে। প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে অনেক সমস্যা আছে। সেগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।

করোনা আতংকের মাঝে বাড়তি এক আতঙ্ক নিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা করোনা জয়ের কৌশল; কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা মানুষের একত্রিত হওয়ার। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের একত্রিত হতে হবে। প্রস্তুতি ও ত্রাণ কার্যক্রমেও মানুষের একত্রিত হওয়ার কোন বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে আম্ফান কতটা ভোগান্তিতে ফেলে, সেটাই দেখার বিষয়।

   

খুলনায় ১২টি স্বর্ণের বারসহ গ্রেফতার ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনায় ১২ পিস স্বর্ণের বারসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে কেএমপি’র লবণচরা থানা পুলিশ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা এক বাস তল্লাশি করে এই স্বর্ণের বার উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে লবণচরা থানার একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টুংগীপাড়া এক্সপ্রেসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯০৩৩) একজন ব্যক্তি সন্দেহজনক কোন বস্তু বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। বাসটি জিরোপয়েন্ট মোড়স্থ খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে রূপকথা রেষ্টুরেষ্টের সামনে আসলে বাসটি তল্লাশি করা হয়।

টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহন থামিয়ে কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; সহকারী পুলিশ কমিশনার (খুলনা জোন) গোপীনাথ কানজিলাল; লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ মমতাজুল হক এবং এসআই (নি:) প্রদীপ বৈদ্য সহ সঙ্গীয় ফোর্স, স্থানীয় জনগণ এবং সাংবাদিকের সম্মুখে

যাত্রীদের তল্লাশি করাকালে স্বর্ণ চোরা চালানকারী সাতক্ষীরা’র দেবহাটা থানার শাখরা কমলপুর এলাকার মোঃ আলম গাজীর ছেলে মাসুম বিল্লাহ (২৮) কে জুতার (লোফার) ভিতরে সুকৌশলে সাজিয়ে রাখা ১২ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। যার প্রতিটি স্বর্ণের বারের ওজন ১১৬ দশমিক ৬৫ গ্রাম প্রায় ও সর্বমোট ওজন ১৩৯৯ দশমিক ৭৪ গ্রাম। যার সর্বমোট মূল্য অনুমান ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৩০৩ টাকা।

পুলিশ আরো জানায়, ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে স্বর্ণের বার বাসযোগে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সেখান থেকে স্বর্ণ সাতক্ষীরা বর্ডার অঞ্চল দিয়ে ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। উল্লেখিত স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে আরও কে কে জড়িত আছে এবং কোথা থেকে স্বর্ণগুলো আনা হয়েছে ও কোথায় পৌঁছে দিবে সেই রহস্য উদঘাটনের জন্য গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

;

উপজেলা ভোট

তৃতীয় ধাপেও আপিল নিষ্পত্তি করবেন ডিসিরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের ভোটেও প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশন থেকে আপিল শুনানি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসককে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮মে। আপিল নিস্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।

তৃতীয় ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক।

দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে সেখানে একাধিক সহকারি রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের শেষ সময় ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে।

;

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে: মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধর সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রজন্ম ’৭০ বাংলাদেশের প্রজন্ম সম্মেলন ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৪৮-’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র এগারো দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠে। ’৭০’র সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে দেয়নি।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা অনুধাবন করেন, স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও বঞ্চনার অবসান হবে না। তাই তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, চলতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

মন্ত্রী বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার পর থেমে যায় বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা। শুরু হয় হত্যা, ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে আজ তিনি উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।

প্রজন্ম ৭০ বাংলাদেশ-এর সভাপতি আশরাফুল করিম ভূঁইয়া সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন খান, বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ফসিহ উদ্দিন মাহতাব, সদস্য সচিব এস এম মাহাবুবুর রহমান, আলোক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন বক্তৃতা করেন।

;

বরিশালে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য। ঘটনাটি নগরীর রূপাতলী গ্যাস্টারবাইন পুলিশ বাড়ি সড়ক এলাকার।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য তানিয়া আক্তার। তিনি এ সময় দাবি করেন, তার প্রতিবেশী রিয়াজ ফরাজী ও বিএমপি’র (বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ) ওয়্যারলেস অপারেটর এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তার অনেকদিন ধরে একটি জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।

এ ঘটনায় তিনি বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (এমপি নং ১৪৪)। পরে আদালত অভিযুক্ত রিয়াজ ফরাজী, আমিনুল ইসলাম, শহিদ ফরাজীকে ১৪৪/১৪৫ জারি অনুযায়ী, তাদের প্রতি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আদেশ জারি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তানিয়া আক্তার আরো অভিযোগ করেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে এসআই মাইনুল তার লিখিত মতামত বাদী পক্ষের হয়ে কোর্টে জমা দেন। সে প্রেক্ষিতে আদালত ১৮৮ ধারা জারি করেন। ওই জমিতে কিছুদিন পর দালান নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপরে রিয়াজ ও তার দুলাভাই এএসআই আমিনুল ইসলাম ২৪ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলরের কাছে যান। তারা জমি মেপে যে সিদ্ধান্ত দেন, তা আমরা মানলেও তারা মানেননি।

পরে রিয়াজ ও তার দুলাভাই এএসআই আমিনুল ইসলাম তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের অ্যাডভোকেট ও আমিন দিয়ে সরেজমিন মাপজোখ করেন এবং প্রাথমিক একটি সিদ্ধান্ত দেয় থানা পুলিশ।

সে সিদ্ধান্তও তিনি মেনে নিলেও তার প্রতিপক্ষ মেনে না নিয়ে উল্টো তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করে। তারা তানিয়াকে ধরতে না পেরে অন্তঃসত্তা ছোট বোন মুনিয়াকে বেধড়ক মারধর করে ফের তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

তানিয়া অভিযোগে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মামলাটি দায়ের করা হয়’। এটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা বলে দাবি করেন তানিয়া আক্তার। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে পুলিশ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে আলাপ করতে চাইলে শারীরিকভাবে অসুস্থ দাবি করে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

;