চকবাজার কাঁচাবাজারের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাজারটিকে ঘিরে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা ৬৮ ব্যবসায়ীকে ‘চকবাজার সিটি কর্পোরেশন কাঁচা বাজার’ এ পুনর্বাসনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র।
একসময় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা এ ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে চসিকের মার্কেটে ব্যবসা করার সুযোগ পাওয়ায় যানজট হ্রাস পাবে চকবাজারের গুরুত্বপূর্ণ এ বাজার সংলগ্ন সড়কগুলোতে। পথচারীরা সুযোগ পাবেন ফুটপাতে হাঁটার। ক্রমান্বয়ে মার্কেটটির বাকি কাজ সম্পন্ন করে আরও ব্যবসায়ীকে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে মেয়রের।
পরিদর্শনকালে মেয়র বলেন, চকবাজার আমার নিজের এলাকা। শৈশব, কৈশোর ও যৌবন এখানে কেটেছে। এই এলাকার ঐতিহ্যবাহী কাঁচাবাজার দীর্ঘদিনের পুরনো। আগে রাস্তা ছোট হলেও যানজট তেমন হতো না। তবে রাস্তা বড় হওয়ার পরও যানজট বেড়ে গেছে অবৈধভাবে রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করায়, যা জনদুর্ভোগের অন্যতম কারণ। জনগণের ভোটকে উপেক্ষা করে যারা কমিশনার বা মেয়র হয়েছেন, তারা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের প্রাধান্য দিয়েছেন। এর ফলে চকবাজার কাঁচাবাজারের বিক্রেতারা জোরপূর্বক চাঁদার শিকার হয়েছেন এবং এলাকায় বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। এই বিশৃঙ্খলা এলাকায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করা ৬৮ জন হকারকে সরিয়ে তাদের এ মার্কেটে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছি। এতে অনেক দিন পরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসী এখন স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন। বাজার ও রাস্তাঘাট পরিষ্কার হয়েছে এবং এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরেছে। জনগণের সহায়তায় এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা এই পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
মেয়র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান সম্পর্কে বলেন, এলাকায় ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রতিদিন ময়লা পরিষ্কার করা হচ্ছে। বর্ষার আগে নালা পরিষ্কার, ম্যানহোল ঢাকনার সুরক্ষা এবং প্লাস্টিক বা পলিথিন নালায় ফেলা বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম মনিটর করতে দুইজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য এলাকাকে একটি স্বাস্থ্যসম্মত, পরিচ্ছন্ন এবং সবুজ শহরে পরিণত করা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সবুজায়নের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে একটি সুন্দর শহর উপহার দেওয়া হবে।
মেয়র মশা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), এমদাদুল হক বাদশা, ইমরান, নাসিম চৌধুরী সেলিম, জাবেদ, সোহেল, সাদ্দামুল হক, রিদওয়ান, বক্করসহ চকবাজার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
এরপর মেয়র বিএনপি’র ৩১ দফার লিফলেট জনগণের মধ্যে বিতরণ করেন। এসময় দলীয় পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, যেখানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবেশবান্ধব শহর গঠনের পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকারের অধিকার নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশকে সুশৃঙ্খল রাখা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপহার হবে।