প্রান্তজনের সঙ্গে থাকুক বার্তা২৪.কম



রফিকুল ইসলাম মন্টু, স্পেশালিস্ট রাইটার, বার্তা২৪.কম
বার্তা২৪.কম

বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কত খবর আসে-যায়। কিছু খবর আলোর দেখা পায়। উঠে আসে প্রকাশের আলোয়। কড়া নাড়ে পাঠকের মনের দরোজায়। আবার কত খবর নিরবেই মারা যায়। সংবাদের মৃত্যু কাহিনীগুলো অজানাই থেকে যায়। এই মৃত্যুর কোন পোস্টমর্টেম নেই, কান্না কিংবা বেদনা নেই। কখনো কখনো সংবাদের মৃত্যু-অপমৃত্যুর প্রত্যক্ষদর্শী হই।

অন্তরালে পড়ে যাওয়া খবরকে টেনে তোলার চেষ্টা করি। আমরা হয়তো সেভাবে ভেবেই দেখিনি; সংবাদও মারা যেতে পারে। নিহত সংবাদের দল তবুও আমার পিছু ছাড়ে না। খবরের জন্মস্থান ঘুরে ঝুলিতে তুলে লই ওদের; যে সংবাদের দল মারা গেছে; বা মৃতপ্রায়। বার্তা২৪-এর দুই বছরের এই প্রান্তে এসে বার্তা বা খবর নিয়ে কিছু কথা বলার এই প্রয়াস।

অতিদ্রুত প্রসরমান সংবাদ মাধ্যম পরিবর্তনের ধারায় এগোচ্ছে। অল্প সময়ের ব্যবধানেই বদলাচ্ছে তার কাঠামো, বিষয়, বৈচিত্র্য। তুমুল প্রতিযোগিতা। পাঠক নিজেই যেখানে রিপোর্টার; সে প্রতিনিয়ত জানে এবং জানায়; সেখানে সংবাদ মাধ্যমকে তো আরও বেশি অগ্রসর হতেই হবে। সবার আগে মাইলফলক ছুঁতে মরিয়া হতে হবে। ছুটতে হবে দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে। কোন ভাবেই পিছিয়ে থাকা যাবে না। অল্প সময়ের ব্যবধানে দেশের সংবাদপত্র, অনলাইন আর রেডিওগুলো অলিখিতভাবেই যেন রূপান্তরিত হয়ে গেছে টেলিভিশনে। মানে সকল বিষয় একসঙ্গে নিয়ে তাকে পাঠক-দর্শক-শ্রোতার কাছে হাজির হতে হচ্ছে। এখন মিডিয়া মানে একই সঙ্গে দর্শককে দেখাচ্ছে, শ্রোতাকে শোনাচ্ছে, আর পাঠককে পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এসবকিছু নিয়ে নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে ‘মাল্টিমিডিয়া’। অনেক সংবাদ মাধ্যম সেই ধারায় হাঁটছে। তবে এই শব্দটা যেসব সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে; তাদের মধ্যে খুব সম্ভবত বার্তা২৪-এর নাম প্রথম সারিতে। বয়স বেশি হয়নি তার। মাত্র দু’বছর পার করলো। বার্তা২৪-এর নামটির সঙ্গে মাল্টিমিডিয়া শব্দটি যুক্ত হওয়ায় এই অল্প সময়েই ভিন্ন ধারা এই অনলাইন নিউজপোর্টাল পেয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। পৌঁছেছে বহু পাঠক-দর্শক-শ্রোতার কাছে।

সন্দেহ নেই, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। সব খবর সবার আগে তুলে আনার চেষ্টা করছে সকলেই। তারপরও প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়! এই যে এত প্রসার, এত অগ্রসর, এর ভেতরেও কী আমরা সব খবর পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারছি? প্রান্তজনের খবর কতটা আসছে সংবাদ মাধ্যমে? সেখানে যে অনেক সংবাদ নিহত হয়; সে খবর কে রাখে? বাংলাদেশের উপকূল আমার কাজের ক্ষেত্র। সেখানে অনেক খবরের মৃত্যু আমি নিজেই দেখি। ঘূর্ণিঝড় এলে সংবাদ মাধ্যমের চোখ দ্রুত চলে যায় উপকূলের প্রান্তিকে। আবার ঘূর্ণিঝড়ে সব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সংবাদ মাধ্যমের খবরে আগ্রহ থাকে। তখন তারা একটি ভালো খবরের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। কিন্তু স্বাভাবিক সময়েও উপকূল অঞ্চলের প্রান্তিক জনপদের মানুষের জীবন যে কতটা অস্বাভাবিক; সে খোঁজ কে রাখে? সংবাদ মাধ্যম থেকে বলতে শুনেছি, সেখানকার খবরে আগ্রহ নেই পাঠকের। পাঠক খাবে না; তাই এই মানুষগুলো খবরের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবে? তা তো হতে পারে না।

রফিকুল ইসলাম মন্টু

প্রান্তিক জনপদের মানুষের খবর মারা পড়ে বিভিন্নভাবে। তার অভিযোগ, অনুযোগ বলার কোন স্থান নেই। ভিজিডি-ভিজিএফ পাবে এই দশজন, কিংবা অমুক সহায়তা পাবে এই কুড়িজন। এরা কেন পাবেন, অন্যরা কেন পাবেন না, সেসব প্রশ্নের জবাব মিলে না। ওই স্তরের মানুষের গলার আওয়াজটা কোথাও প্রতিফলিত হয় না। শুধু নিরবে সয়ে যাওয়া। শুধু কী পাওয়া, না পাওয়ার খবর? না, হাসি-কান্না-বেদনার খবরও আছে। যে নারী সারাজীবন পথপানে চেয়ে রইল তার হারানো স্বামী ফিরে আসবে বলে; তার খবরটা আমরা কতটুকু রাখতে পারছি? যে সন্তান সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরেনি; তার মায়ের কান্নার আওয়াজ আমাদের কানে আসে? বাঘের থাবায় নিহতদের স্বজনদের নোনাকষ্ট আমরা বুঝতে পারি না। কেমন আছেন তারা; খোঁজ নিতে পারি না। ভিটেহারা বিপন্ন মানুষেরা এক জীবনে কতবার স্থান বদলায়; তারপরও কীভাবে টিকে আছে? খোঁজ আছে আমাদের কাছে? আবার যারা টিকতে পারছে না; তারা কোথায় যাচ্ছে? কৃষকের চকচকে লাঙ্গলের ফলা আমাদের খাবার যোগায়। কিন্তু তারা কী পায়? জেলের রাতদিন কঠোর শ্রম-ঘামে আসে রূপোলি ইলিশ। কিন্তু জেলে কী পায়? তার অবস্থা কতটা বদলায়? আবার যদি একটু অন্যদিকে ফিরি, উপকূলের উর্বর ভূমি আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে। জনপদ জুড়ে আছে বিরাট সম্ভাবনা। সেই সম্ভাবনা বিকাশেই বা আমাদের সংবাদ মাধ্যম কতটা অগ্রসর? এক একটি প্রশ্নের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক একটি সংবাদ। আর এইসব খবরের মধ্যে অনেক খবরই মৃত্যুবরণ করে। ধুঁকে ধুঁকে চরম অবহেলার মধ্যেও কিছু সংবাদ আবার স্থান করে নেয়।

কোনকিছু বাদ রেখে নয়, সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলার প্রত্যয় মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল বার্তা২৪-এর। সে কারণেই হয়তো প্রান্তিকেও নজর রয়েছে তার। প্রান্তজনের একটা ভালো প্রতিবেদন এখানে স্থান পায় খুব গুরুত্বের সঙ্গে। পাঠক-দর্শক-শ্রোতা গোষ্ঠীর আগ্রহ বিবেচনায় শহুরে খবর গুরুত্বপূর্ন। তারপরও প্রান্তিকের খবরের যে আলাদা মর্যাদা আছে, সে কথা ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। গতানুগতিক কনটেন্টের ভিড়ে ব্যতিক্রমী প্রতিবেদনগুলো তো হারিয়েই যেতে বসেছে। একটা ঘটনা ঘটে গেলে আরেকটি ঘটনার জন্য হা করে তাকিয়ে থাকে এদেশের সংবাদ মাধ্যম। পৃথিবী জুড়ে সাংবাদিকতার যে চর্চা চলছে; তার সঙ্গে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখনও মিলতে পারেনি। যেসব সংবাদের আশায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অপেক্ষা করে; পৃথিবী জুড়ে সাংবাদিকতা চর্চায় এসবের কোন স্থান নেই। তারা চায় আরও ভেতরের খবর; আরও গভীরের খবর। ব্যতিক্রমী স্টোরি। যে সাংবাদিক গল্পটা যত নিখুঁতভাবে তুলতে পারেন; তিনিই সবচেয়ে এগিয়ে থাকেন। উৎসাহ পান আরও ভালো কাজ করা।

ব্যতিক্রমী ধারার নিউজপোর্টাল বার্তা২৪ অল্প সময়ে যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে; তাতে তার সামনে রয়েছে বিরাট সম্ভাবনা। ইতিপূর্বে যা কেউই করেনি; তা করতে পারবে বার্তা২৪। এই পোর্টাল সে পথেই হাঁটুক; যে পথে মানুষের গল্প লুকিয়ে আছে। নিরন্তর থাকুক প্রান্তজনের সঙ্গে। নিহত সংবাদেরা জেগে উঠুক। প্রতিষ্ঠিত হোক প্রান্তজনের অধিকার। বিকশিত হোক প্রান্তিকের অফুন্তর সম্ভাবনা।

   

নীলফামারীতে বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে বাসার ছাদ থেকে পড়ে আবু সাঈদ (৪৫) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত আবু সাঈদ গদা কেরানীপাড়া এলাকার জবান উদ্দিনের ছেলে।

মঙ্গলবার( ১৬ এপ্রিল)সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরআগে বিকালে শহরের পশু হাসপাতাল মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের স্বজন ও প্রদক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আবু সাইদ বিকালে হঠাৎ পশু হাসপাতাল মোড়ের শরিফুল (সুদারুর) বাসার ছাদ থেকে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদের পর তিনি নিরাপদ বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস করতেন। স্বজনদের দাবী দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানসিক রোগে ভুগছিলেন।

এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ হাসপাতালে আছে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

;

ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে ট্রাক চাপায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের আনন্দ পরিবারের সাথে ভাগ করে নাটোর থেকে মোটরসাইকেল যোগে ঢাকার আশুলিয়ায় ফিরছিলেন পোশাক শ্রমিক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী। বাসার কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও পথিমধ্যে একটি ট্রাক কেড়ে নিল তাদের প্রাণ। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার বিশমাইল-জিরাব সড়কের বড় রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী হাসি বেগম। তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোরের সিংড়ায়। দেলোয়ার হোসেন আশুলিয়ার রাতুল নিটওয়্যার লিমিটেড নামক পোশাক কারখানায় লাইনচিফ পদে চাকরি করতেন এবং তার স্ত্রী গৃহিনী। তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তারা আশুলিয়ার পুকুরপাড় বাগানবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জিরাবো-বিশমাইল সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দম্পত্তি জিরাব এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি বড় রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় পৌছলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে পড়ে যায়। এসময় একই দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় পিএমকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।

নিহত দেলোয়ারের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আজকেই তারা গ্রামের বাড়ি থেকে এসেছে। আমি তাদের লাশ নিয়ে যেতে চাই। আমরা কোন মামলা মোকদ্দমা চাইনা। আমরা লাশ পোস্টমর্টেম করাতে চাইনা।

আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেছি। নিহতদের স্বজনরা এসেছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

;

গাজীপুরে বয়লার বিস্ফোরণে চীনা নাগরিক নিহত, আহত ৫



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরে একটি ব্যাটারি তৈরি কারখানার বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় কর্মরত প্রকৌশলী পুং জুকি (৫৩) নামে এক চীনা নাগরিক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৫ জন।

খবর পেয়ে কাশিমপুরের সারাবো ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় টং রুইদা ইন্ডাস্ট্রিজ নামে ব্যাটারি কারখানার বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ব্যাটারি কারখানা চালু করতে গেলে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এ সময় বয়লারের আশেপাশে থাকা পাঁচ জন গুরুতর আহত হন। পরে তাৎক্ষণিক ভাবে আহতদের উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে চীনা নাগরিক পুং জুকিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকিদের ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মোহাম্মদ শামসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

;

বরিশালে কর্মস্থলমুখী জনস্রোত অব্যাহত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ উল ফিতরের আগে বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকামুখী জনস্রোত ঈদ পরবর্তি সময়ে এখনো কর্মস্থলমুখী। পরিবহন বিশেষজ্ঞসহ মালিক ও শ্রমিকদের মতে এবারো ঈদ উল ফিতরের আগে পরে বরিশালসহ সন্নিহিত এলাকার সাথে রাজধানী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের অন্তত দশ লাখ মানুষ যাতায়াত করছে। কিন্তু দেশের একমাত্র রেললাইন বিহীন বরিশাল বিভাগে এতদিন নৌপথেই ৭৫ ভাগ যাত্রী যাতায়াত করলেও পদ্মা সেতু চালু হবার পরে সড়ক পথেই ৬৫ ভাগ চলাচল করছে।

নদ-নদী বহুল বরিশাল অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী নৌপথে পৌনে দুশ বছরের জৌলুস হারাতে চললেও পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে’র পরে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল অঞ্চলের জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোর অবস্থা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দময় নয়। বরিশাল মহানগরী থেকে ৯০ কিলোমিটার অপ্রসস্ত জাতীয় মহাসড়ক অতিক্রম করে উত্তরে ভাংগায় বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত পৌছতেই ৩-৪ ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। ফলে পদ্মা সেতু চালু হবার পরে বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকা রাজধানীর যতটা কাছে আসার কথা ছিল, তা এখনো সম্ভব হয়নি। এ মহাসড়কে যানবাহনের আধিক্য ৩ গুনেরও বেশী বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীরপাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সাথে বরিশাল অঞ্চলের সড়ক পরিবহনে বিড়ম্বনা আরো বেড়েছে।

ঈদকে সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরে পরিস্থিতি আরো নাজুক আকার ধারন করে। বরিশাল ও ভাংগা’র মধ্যবর্তি ৯০ কিলোমিটার মহাসড়কের বেশীরভাগ এলাকায়ই দিনরাত যানজট লেগে আছে।

এদিকে ঈদকে ঘিরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বরিশাল নদী বন্দরে অতীতের চীরচেনা দৃশ্য না থাকলেও ঈদ পরবর্তি সময়ে যাত্রীদের পদভারে মুখরিত বিগত কয়েকটি দিন। বরিশাল-ঢাকা নৌপথে রুট পারমিটধারী প্রায় ২৯টি যাত্রীবাহী নৌযানের অন্তত ১০টি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেলেও অবশিষ্টগুলো কোনমতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। রোববারে বরিশাল নদী বন্দর থেকে ১২টি নৌযান যাত্রী বোঝাই করে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার পরে সোম ও মঙ্গলবারেও প্রায় একই পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল। এমনকি বেশীরভাগ নৌযানই ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশী যাত্রী বহন করলেও এবার নৌপথে ভাড়া বাড়ায়নি মালিক পক্ষ। নিকটজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঘরেফেরা শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষ আগামী শনিবার পর্যন্তই বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকা থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন বলে আশা করছেন সড়ক ও নৌ পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্টজনেরা। দুটি বাস টার্মিনাল ছাড়াও বরিশাল নদী বন্দরেও গত কয়েকদিন পা ফেলার স্থান নেই।

এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে এবার সড়ক পথে যে যার মত করে ভাড়া আদায় করছে। এমনকি অনেক নামী দামী সড়ক পরিবহন কোম্পানী রুট পারমিটের বাইরেও বাস নিয়ে আসছেন বরিশালসহ আশেপাশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে। ভাড়াও আদায় করছেন তাদের মত করেই। বরিশাল থেকে মাত্র ১৬৫ কিলোমিটার সড়ক পথে ঢাকার বাতানুকুল বাসে সাড়ে ১২'শ টাকা ভাড়া আদায় এখন স্বাভাবিক ঘটনা। অথচ বিআরটিসি একই পথে ৬'শ টাকায় যাত্রী পরিবহন করছে। তবে রাষ্ট্রীয় এ সড়ক পরিবহন সংস্থাটি ঈদ উপলক্ষে কোন বিশেষ বাস সার্ভিস চালু করতে পারেনি যানবাহন স্বল্পতায়।

রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থাটি দিনরাতে বরিশাল-ঢাকা সড়ক পথে প্রায় ৩০টি বাসে যাত্রী পরিবহন করলেও সরকারী নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠান, বিআইডব্লিউটিসি এবারের ঈদে ছিলো সম্পূর্ণই নিরুদ্বিগ্ন। দেশের একমাত্র অভ্যন্তরীন স্টিমার সার্ভিসের জন্য সংস্থাটির হাতে ৬টি যাত্রীবাহী নৌযান থাকলেও তার কোনটিই যাত্রী পরিবহনে নেই।

রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থা-বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বরিশালের আকাশ পথে তার সাপ্তাহিক ৪টি ফ্লাইটের বাইরে ঈদের আগে ২টি বিশেষ উড়ানোর ব্যবস্থা করলেও ঈদ পরবর্তী সময়ে ছিল চুপচাপ। তবে বিগত পুরো সপ্তাহ জুড়েই যাত্রীর চাপে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটিও ৩২'শ টাকার টিকেট সাড়ে ৮ হাজার টাকারও বেশী দামে বিক্রী করছে। এব্যাপারে বিমান-এর বরিশাল বিক্রয় অফিসের জেলা ব্যবস্থাপকের ল্যান্ডফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

;