আইলার ক্ষত তাজা করে দিল আম্পান

  ঘূর্ণিঝড় আম্পান


রফিকুল ইসলাম মন্টু স্পেশালিস্ট রাইটার বার্তা২৪.কম
আম্পানের প্রভাবে ঝুঁকিতে বাঁধ

আম্পানের প্রভাবে ঝুঁকিতে বাঁধ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আম্পান অবশেষে শক্তি হারিয়ে চলে গেল। ডানা ঝাপটা দিয়ে গেল পশ্চিম উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়টির মূল কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের দিঘা এবং কলকাতায় প্রচণ্ড ধাক্কা দিলেও এর প্রভাবে বাংলাদেশের পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আম্পান যখন এই ধাক্কা দিল, এর মাত্র তিনদিন পরেই প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আইলার এগারো বছর পূর্ণ হতে চলেছে। ২০০৯ সালের ২৫ মে এই ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছিল খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায়। সেই ক্ষতই যেন তাজা করে দিয়ে গেল ঘূর্ণিঝড় আম্পান।

এ পর্যন্ত পাওয়া খবরের সূত্রগুলো বলছে, আম্পানের ঝাপটায় এবারও সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা। বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ধ্বসে পানি ঢুকেছে লোকালয়ে। প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করলেও প্রবল বাতাসের তোড় পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা উপকূলকেই নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ধ্বসে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কমবেশি সমগ্র উপকূলেই আম্পানের প্রভাব লাগলেও এবারের ঝড় পশ্চিম উপকূলের মানুষদের আইলার ক্ষতই উসকে দিল। দীর্ঘ সময় নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো মানুষগুলো আবার পড়ল বিপাকে।

বাগেরহাটের শরণখোলার গাবতলা। যেখানে ২০০৭ সালে আঘাত করেছিল প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর, সেখানে নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধ ধ্বসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কয়রার উত্তর বেদকাশী ও দক্ষিণ বেদকাশী, সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ধ্বসে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও স্থানীয় জনসাধারণ বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা করেছে। পশ্চিম উপকূলের বাঁধগুলো এতটাই নড়বড়ে; এ বাঁধ ধ্বসে যেতে আম্পানের মত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রয়োজন হয়না। স্বাভাবিক জোয়ারেও ভেঙে যায় বাঁধ। ফলে বর্ষাকাল এলেই নাজুক বেড়িবাঁধের আশপাশের মানুষেরা আতংকে থাকেন। এবারের বর্ষার শুরুতে খুলনার কয়রা ও সাতক্ষীরার আশাশুনিতে বেশ কয়েকবার বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। আম্পানের সতর্কতায় ওইসব এলাকার মানুষজন আতংকিত হয়ে পড়েছিল।

আম্পানের প্রভাবে ঝুঁকিতে বাঁধ

ঘূর্ণিঝড় আম্পান এ এলাকায় ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়ে গেল- বলছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম। তিনি জানান, ওই ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ নাজুক হয়ে গিয়েছিল আইলার প্রলয়ে। সে সময় গোটা ইউনিয়ন ডুবে গিয়েছিল লবণ পানিতে। কৃষি জমি পরিণত হয়েছিল বিরাণ ভূমিতে। মানুষের আশ্রয় হয়েছিল বেড়িবাঁধে। আইলার পর এলাকায় তীব্রভাবে দেখা দেয় সুপেয় পানির অভাব। বহু মানুষ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। বহু পরিবার পথে বসে যায়। এলাকার মানুষ সেই সংকট আজও সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় চাষাবাদ শুরু হয়েছিল; এগারো বছরে গাবুরার বিরাণ ভূমিতে কোথাও মাথা তুলেছিল সবুজ। এরই মধ্যে এই ধাক্কা আবার সমস্যা বাড়িয়ে তুলল।

বহু চেষ্টায় নড়বড়ে বাঁধগুলো রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের আইলার এগারো বছর পূর্ণ হতে চলেছে। আজ এই দুর্যোগের দিনে সেই দিনটির কথাই মনে পড়ছে। আইলা যে ঝাঁকুনি দিয়ে গেছে, তা এতদিনেও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। বরং আইলায় প্রবল পানির চাপে বাঁধের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আজও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। বরং বাঁধগুলো দিনে দিনে নাজুক হয়ে পড়ছে। আম্পানের ধাক্কায় আরও নড়বড়ে হবে বাঁধ। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলের দুর্যোগে আবার বিপদ ডেকে আনবে।

খুলনা বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে কয়রা উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এ বাঁধগুলো বিভিন্ন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি করেছিল ঘূর্ণিঝড় আইলা। দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের জোড়শিং গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলছিলেন, আইলায় এই এলাকার কৃষির বৈচিত্র্যই বদলে দিয়ে গেছে। এক সময় এই এলাকায় মানুষ ধান কাটতে আসতো বিভিন্ন এলাকা থেকে। এখন এই এলাকার মানুষজন ধান কাটতে যায় বিভিন্ন এলাকায়। যে জমিতে ধানের আবাদ হতো; সেখানে এখন চিংড়ি চাষ হচ্ছে। বহু মানুষ বেকার হয়ে গেছে। কেননা, ধান আবাদে লোকজন বেশি প্রয়োজন হলেও চিংড়ির ঘেরে শ্রমিক লাগে কম।

সাইফুল ইসলাম বলেন, আইলা যে ক্ষতি আমাদের করে দিয়ে গেছে। তা পুষিয়ে নেওয়া কঠিন। তবুও অনেক চেষ্টা করে জীবনকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে মানুষ। কিন্তু আম্পানে তো আবার ক্ষতি করে দিয়ে গেল। গত বছর ফণী-বুলবুলেও তো অনেক ক্ষতি করেছে। ক্ষতি হলেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। এরই সূত্র ধরে কামরুল ইসলাম সরদার বলছিলেন, ভাঙনে, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধের ক্ষতি হলেও তা ঠিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয় না। আমাদের ঝুঁকি তো দিনে দিনে বাড়ছেই। এভাবেই বেঁচে আছি, কী করব।

কয়রায় নড়বড়ে বাঁধ সুরক্ষার চেষ্টা

ঘূর্ণিঝড় আইলা খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের একটি গ্রামকে ঝুলন্ত গ্রামের পরিণত করেছিল। গ্রামটির নাম কালাবগি। শিবসা নদীর তীরে সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামের মানুষ আইলায় সব হারিয়েছে। এবার আম্পানও নাড়িয়ে দিয়েছে ওই গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলছিলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল পেয়ে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিল। মালামাল সুরক্ষায় কিছু মানুষ ঘরে ছিল। ঘূর্ণিঝড় আম্পান গ্রামের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি ভেঙেছে। ঘরের চালা উড়ে গেছে। ফলে ঘর গোছাতে তাদেরকে আবার হিমশিম খেতে হবে। ঝুলন্ত গ্রামের বাসিন্দা বলছিলেন, আইলায় তো আমাগো সব শ্যাষ করে দিছে। এভাবে বার বার দুর্যোগ এলে আমরা কীভাবে বাঁচি?

বিগত কয়েক দশকে চিংড়ি চাষের অঞ্চল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলো। যখন আম্পান আঘাত করলো, তখন এই অঞ্চলে চিংড়ির ভরা মৌসুম। খামার থেকে বড় সাইজের চিংড়ি তুলছিলেন চাষিরা। অনেক স্থানের চিংড়ির ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাইকগাছার সোলাদানার চিংড়ি চাষি সোহরাব হোসেন বলেন, এখন ঘের থেকে চিংড়ি ধরার মৌসুম। কিছু বাজারে গেছে। আরও অনেক চিংড়ি রয়ে গেছে ঘেরে। আম্পানের প্রভাবে পানির চাপে ঘেরের বাঁধ ধ্বসে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছি। কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

স্থানীয় সূত্রগুলো বলেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি চাষিরা চরম বিপাকে পড়বেন। অনেককেই লোকসান গুনতে হবে। করোনা ভাইরাসের কারণে এ অঞ্চলের চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষিরা দু’মাস ধরে এমনিতেই সংকটে রয়েছে। এরপর ওপর আম্পানের এই ধাক্কায় তাদের নতুন সংকটের মধ্যে ফেলবে। এছাড়াও প্রভাব পড়বে জনজীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে।

   

আরও ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি, বৃষ্টির পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। দিনদিন বাড়ছে তাপমাত্রা। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে আরও তিনদিন হিট অ্যালার্টের (তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা) পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। একই সঙ্গে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার দেওয়া পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আমরা এর আগে তিন দিনের যে হিট অ্যালার্ট জারি করেছিলাম, তার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হবে। কারণ, আপাতত বড় পরিসরে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহ দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা হিট অ্যালার্ট জারি করে সরকারকে জানিয়ে দিই। সরকার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংশ্লিষ্টরা তাদের করণীয় যা সেটা করবে।

তিনি বলেন, সারা দেশের তাপমাত্রা গতকালের থেকে আজ কিছুটা বেড়েছে। চলতি এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা দেখছি যে, এটা মে মাসের ২ থেকে ৩ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরপর হয়তো বিভিন্ন অঞ্চলে কিছু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর আগে পর্যন্ত বড় পরিসরে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয়ভাবে বিচ্ছিন্নভাবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বর্ধিত ৫ (পাঁচ) দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

  ঘূর্ণিঝড় আম্পান

;

‘কেএনএফ অস্ত্রের মুখে গাড়ি চালাতে বাধ্য করে’ আদালতে ড্রাইভারের জবানবন্দি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
‘কেএনএফ অস্ত্রের মুখে গাড়ি চালাতে বাধ্য করে’

‘কেএনএফ অস্ত্রের মুখে গাড়ি চালাতে বাধ্য করে’

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে প্রকাশ্যে সেনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের সময় কেএনএফ সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গাড়ি চালাতে বাধ্য করেছে মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে থানচির চাঁদের গাড়ি চালক কফিল উদ্দিন সাগর।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে থানচির চাঁদের গাড়ি চালক কফিল উদ্দিন সাগর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুরুল হকের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিতে একথা বলেন তিনি।

অপরদিকে বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সদস্য সন্দেহে গ্রেফতার গাড়ির ড্রাইভারসহ কফিল উদ্দিন সাগর ও আরও ছয় সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক এএসএম এমরান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বান্দরবান আদালতের জিআরও বিশ্বজিৎ সিংহ জানান, আজ তাদের ২ দিন রিমান্ড শেষে আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ পর্যন্ত মোট ৭৭ কেএনএফ সদস্য ও একজন চাঁদের গাড়ির চালকসহ মোট ৭৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী রয়েছেন।

  ঘূর্ণিঝড় আম্পান

;

চরফ্যাসনে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভোলার চরফ্যাশনে হিটস্ট্রোকে মিরাজ (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে দুলারহাট থানার আবুবক্করপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। নিহত যুবক মিরাজ ওই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

প্রতিবেশী আরিফ জানান, যুবক মিরাজ প্রচণ্ড রোদে দুপুরে তার নিজ বাড়িতে কাজ করছিলো। প্রায় দুই ঘণ্টা তীব্র রোদে থাকার পর হঠাৎ তার বুকে ব্যথার অনুভব হয়। বিকালে ব্যথা আরও তীব্র হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চরফ্যাসন হাসপাতালে কর্মরত সাব-অ্যাসিস্টেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. জাহিদ হাসান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যুবক মিরাজ হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।

  ঘূর্ণিঝড় আম্পান

;

ফেনীতে গরমে চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশের ন্যায় ফেনীতেও বইছে তীব্র তাপদাহ। কয়েকদিনের তীব্র গরমে বেড়েছে ডাবের চাহিদা, সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ডাবের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। তবে সরবরাহ কম থাকায় বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী। প্রায় ৬০ টাকা বেড়ে ছোট সাইজের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। অন্যদিকে মাঝারি ও বড় আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এটি রেকর্ড মূল্য মনে করছে ক্রেতারা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ফেনী শহরের ট্রাংক রোড, নাজির রোড, শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়ক, কলেজ রোড ও সদর হাসপাতাল মোড়, মুক্তবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ডাবের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। দাম বেশি হলেও গরমের ক্লান্তি কাটাতে ডাব কিনে খাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।


শহরের নাজির রোড এলাকায় ডাব বিক্রি করেন রিফাত। বার্তা২৪.কম-কে তিনি বলেন, ঈদের ছুটির পর পাইকাররা ডাবের দাম ৩০ থেকে ৬০ টাকা বাড়িয়েছে। গত বছরে ব্যবসায় এত বেশি দাম কখনো দেখিনি। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির সময়ও এত দাম ছিল না। বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

মুক্তাবাজারের ডাব বিক্রেতা এসানুল হক বলেন, সবসময় ঈদের পরপর চাহিদা কম থাকত, কিন্তু এবার তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে চাহিদা বেড়ে গেছে।উৎপাদকদের কাছ থেকে সরবরাহকারীরা বেশি দামে ডাব কিনেছেন, আর তাই পাইকারি বাজারে ডাবের দাম বাড়ছে বলে জানান এই বিক্রেতা।

সাফওয়ান নামে এক ক্রেতা বলেন, আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেয়। গরমে ডাবের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। তারপরও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের জন্য ১৪০ টাকায় একটি ডাব কিনেছি। দাম যেমনই হোক না কিনে তো আর পারি না।


শহরের হাসপাতাল মোড়ে কথা হয় সাহাবউদ্দিন নামে আরেক ক্রেতার সঙ্গে। ডাবের বাজারদর নিয়ে তিনি বলেন, ১২০ টাকার নিচে তেমন কোনো ভালো ডাব নেই। যেভাবে গরম পড়ছে কিছুটা স্বস্তির জন্য এখানে এসেছি। সব দোকানেই দাম প্রায় একই।

শহরের নাজির রোড এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, গরমে গত কয়েকদিন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩০-৪০টি ডাব বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে ডাবের সংকট থাকায় দাম কিছুটা বেশি। আমরা খুচরা পর্যায়ে সাধারণত কেনা দামের চেয়ে কিছু বেশি দামে বিক্রি করি। খুচরা পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আমাদের কোনো হাত নেই।

ফেনী মহিপাল ফল আড়তের আব্দুল হাকিম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ফেনী শহরে যেসব ডাব বিক্রি হয় সেগুলো মূলত নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এলাকার। অল্প কিছু ডাব জেলার উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজী থেকে আসে। এখানে ডাবের কোনো আড়তও নেই। সপ্তাহের নির্দিষ্ট কিছু দিনে ট্রাকে করে ডাবগুলো এনে খুচরা বিক্রেতাদের দিয়ে যায়। গত এক সপ্তাহে প্রতিটি ডাবের দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। সঙ্গে বেচাকেনাও বেড়েছে।

শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ্ কায়সার সড়কের এডাব ব্যবসায়ী কাইয়ুম বলেন, গরমে প্রতিদিন এখন ৬০ থেকে ৭০টি ডাব বিক্রি হচ্ছে। নোয়াখালী ও সোনাগাজী অঞ্চলের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেনা ডাব মানভেদে খুচরা পর্যায়ে ১৩০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে ঠান্ডা মৌসুমে একই ডাব ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয় বলেন তিনি।

  ঘূর্ণিঝড় আম্পান

;