ট্রেন চালাতে রেলস্টেশনে চলছে প্রস্তুতি
সরকারের নির্দেশনায় প্রায় দুই মাস পরে রোববার (৩১ মে) থেকে বিভিন্ন রুটে আটটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হচ্ছে। ট্রেন চালানোর নির্দেশনা পাওয়ার পর স্টেশনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
তারই অংশ হিসেবে দেশের বড় স্টেশন খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ সব স্টেশনে এরই মধ্যে প্রস্তুতি চলছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রেল স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের সামনে। যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে তিন ফুট দূরে দূরে বৃত্ত এঁকে দেওয়া হচ্ছে। ট্রেন চালু হলে যাতে যাত্রীরা টিকেট কাটার জন্য তিন ফুট দূরত্ব অবস্থান করতে পারেন।
তাছাড়া, স্টেশনে যাত্রীদের সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ঢোকার মুখে বসানো হবে থার্মাল স্ক্যানার। একই সাথে অন্যান্য স্টেশনেও যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে স্টেশন কতৃপক্ষ।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালাতে কি ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আসাদুল হক।
বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, নির্দেশনা পাওয়ার পর স্টেশনে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। এরই মধ্যে যাত্রীরা যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে টিকেট কাটতে পারেন, সেজন্য তিন ফুট দূরত্বে বৃত্ত করে দেওয়া হয়েছে স্টেশনে। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে স্টেশনে ঢুকতে হবে, সে প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। সেই সাথে স্টেশনে রেলওয়ের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রামের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) সাদেকুর রহমান ট্রেন চালানোর প্রস্তুতির বিষয়ে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদের আগে থেকেই আমরা কিছু কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। রোববার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালানোর জন্য এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে যেসব আন্তঃনগর ট্রেন চালু হবে, সেগুলোর দরজা-জানালা, হাতল, সিট, হেড বেল্ট কাভার, টয়লেট ও মেঝে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে এবং জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে নিয়মিত। যাত্রীদের স্টেশনের প্রবেশের আগে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে এবং তাদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে স্টেশনে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হক বার্তা২৪.কমকে আরো বলেন, স্টেশন কেন্দ্রীক প্রস্তুতি চলছে। পুরো স্টেশন ভালোভাবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। তাছাড়া রেলের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী সরাসরি যাত্রীদের সাথে কাজ করবেন, তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে তাদের জন্য মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিইসহ সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে।
এদিকে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ট্রেনের ৫০ ভাগ টিকেট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাতে করে একটি সিট খালি রেখে যাত্রীরা বসতে পারেন। একই সাথে যাত্রীরা টিকেট কাটার জন্য যাতে স্টেশনে ভিড় করতে না পারেন, সেজন্য অনলাইনেও টিকেট বিক্রি করা হবে।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত ছিল। তাছাড়া কৃষকের পণ্য পরিবহনে গত পহেলা মে থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে পার্সেল স্পেশাল ট্রেন।