স্বাস্থ্যসুরক্ষা কেবল বাসস্ট্যান্ডেই, নির্দেশনার বেশি যাত্রী বহন
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই দীর্ঘ ৬৭ দিন পর সীমিত আকারে চলাচল শুরু করেছে দূরপাল্লাসহ যশোরের অভ্যন্তরীণ ১৫টি রুটের বাস।
সোমবার (১ জুন) যশোর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৫টি রুটে প্রায় ৪শ’ বাস দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচল করেছে। তবে বাসগুলোতে অফিসমুখী যাত্রী ছাড়া সাধারণ যাত্রীদের চাপ নেই বলে জানিয়েছেন পরিবহনের চালক ও হেলপাররা। বাসস্টপেজ থেকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে যাত্রী তুললেও যাত্রাপথে স্বাস্থ্যসুরক্ষা না মেনেই যাত্রী উঠিয়েছে বাসগুলো। সড়কে যাত্রীদের হাত ধরে বাসের দিকে নিয়ে যাওয়া, মালামাল কিংবা ব্যাগ নিয়ে বাসের ভেতর রেখে দেওয়ার চেষ্টা হেলপারদের। পাশাপাশি দুইটি সিট কিংবা মোট সিটের অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করছে বাসগুলো। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই সড়কে গড়িয়েছে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বাসের চাকা।
শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, বাসের চালক ও তার সহকারীর মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস থাকলেও অনেক যাত্রীদের ছিল না কোনো মাস্ক কিংবা গ্ল্যাভস। যাত্রীরা মুখে মাস্ক পরে বাসে উঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একেকজন যাত্রী একেক সিটে বসছেন।
যাত্রীদের অভিযোগ, যেসব শর্ত দিয়ে বাস চলাচল শুরু হয়েছে সেসব মানা হচ্ছে না। কিছুটা স্বাভাবিক দিনের মতো আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে তদারকি করতে দেখা যায়নি।
খাইরুল ইসলাম নামে এক বাসচালক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছি। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে একেকজন যাত্রীর জন্য একেকটি সিট বরাদ্দ রেখেছি। একজনের পাশের আরেকজনকে বসতে দিচ্ছি না। মুখে মাস্ক না থাকলে কোনো যাত্রীদের আমরা বাসে উঠতে দিচ্ছি না।
যশোর-বেনাপোল সড়কের চলাচল করা আকাশ বাসের হেলপার সালাম হোসেন বলেন, সকালে অফিস টাইমে কিছুটা যাত্রীর চাপ ছিল। তবে সকাল ১১টার পর থেকে যাত্রী তেমন একটা নেই। আবার অফিস ছুটি হলে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে যাত্রী কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন।
সেলিম হোসেন নামে এক চাকুরিজীবী জানান, নিজেদের সাধ্য মতো স্বাস্থ্যবিধি ও আরোপিত নির্দেশনা মেনেই বাসে উঠেছি। তবে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। যাত্রী কম থাকায় আজ স্বাস্থ্যবিধি মানতে কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। তবে দিন বাড়লে এসব মেনে চলা কিছুটা কষ্টকর হবে।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থার সভাপতি মামুনুর রহমান বাচ্চু বার্তা ২৪.কমকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সোমবার থেকে যশোরের বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বাসের ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রা পথে স্বাস্থ্যসুরক্ষা মানা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা সব নির্দেশনা দিয়েছি চালক ও হেলপারদের। যাত্রা পথে না মানলে আমাদের করার কিছু নেই। তারপরেও কিছু স্বার্থলোভী চালক এসকল কর্মকাণ্ড করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বার্তা ২৪.কমকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বাস মালিকদের সড়কে বাস চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সড়কে বাস চলাচলে তদারকি করতে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের টিম। তারপরেও যদি কোনো চালক বা বাস মালিক এসব নিদের্শনা না মানে তাহলে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।