পানির নিচে পাকা ধান, দিশেহারা কৃষক
টাঙ্গাইলে অসময়ে যমুনা, ধলেশ্বরী, লৌহজংসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে শত শত কৃষকের পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া শ্রমিক সংকট আর অর্থের অভাবে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছে না কৃষকরা। ফলে চরম লোকসানে পড়েছে তারা।
তবে কৃষি কর্মকর্তার দাবি, পানিতে নিমজ্জিত ধান কাটতে হারভেস্টার মেশিন ও অন্য এলাকা থেকে শ্রমিক এনে কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থা করছেন।
জেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৬ মে. টন। সম্ভাব্য উৎপাদন ৬ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫ মে. টন। জেলায় এখন পর্যন্ত ৭৬ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ৯২ হেক্টর জমির পাকা ধান বর্তমানে পানির নিচে নিমজ্জিত আছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার কৃষকের পাকা ধান। এর প্রভাব পড়েছে টাঙ্গাইলের নদ-নদীগুলোতে। ঘূর্ণিঝড় আম্পাানের প্রভাব আর কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে অসময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, বাসাইল, ভুঞাপুর ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কৃষকের শত শত হেক্টরের পাকা বোরো ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া মহামারি করোনার কারণে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।
মির্জাপুর, বাসাইল ও ভুঞাপুর উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, অসময়ে নদীর পানি নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করায় ব্যাপক আকারে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকরা পানিতে নেমে ধান কাটতে চায় না। কাটলেও বেশি মজুরি চায়। ধান কাটতে যে খরচ হবে তাতে লোকসান গুনতে হবে।
শ্রমিকরা জানান, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন কর্মহীন হয়ে থাকায় আর্থিক সংকটের কারণে কষ্ট করে হলেও পানিতে ধান কাটছেন। এভাবে কয়েকদিন ধান কাটলে তারাও অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মালেক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে পানিতে নিমজ্জিত ধান কাটতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, নিমজ্জিত ধান কাটতে হারভেস্টার মেশিন ও অন্য এলাকা থেকে শ্রমিক এনে কৃষকের ধান কাটার ব্যবস্থা করছেন। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে।