কুড়িগ্রামে ভারতীয় হাতির তাণ্ডবে নষ্ট কৃষকের পাকা ধান
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় বন্য হাতির তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী কৃষকরা। প্রতি রাতেই সীমান্ত পেরিয়ে বন্য হাতির দল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পাকা ধানসহ খেয়ে ফেলছে বিভিন্ন ধরনের ফসল। এ অবস্থায় ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ও আগুন জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন কৃষকরা।
গত এক সপ্তাহ ধরে ভারতের গারোহিল পাহাড় থেকে আসা একাধিক হাতির দল কালাইচর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে। ২৫ থেকে ৩০টি করে এসব বন্য হাতির দল রৌমারী উপজেলার আলগারচর, খেওয়ারচর, বকবান্দা, ঝাউবাড়ী, চুলিয়ারচর ও বড়াইবাড়ীর চরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে পিষিয়ে নষ্ট করে ফেলছে। এতে করে উঠতি ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ঐসব এলাকার কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকদের দাবী, প্রতি রাতে এসব বন্য হাতির দল আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ১০৫৭ থেকে ১০৭২ এর মধ্য দিয়ে কাটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে। রাতভর ফসলের ক্ষতি করে সকাল হতেই সীমানার নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছে এসব হাতি। খাবার না পেলে কৃষকের ঘর-বাড়িতেও হামলা চালায় বলে জানান তারা।
রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ীর চরের আবুল হোসেন জানান, ভারতীয় বন্য হাতি তার এক বিঘা জমির পাকা ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মুড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে। প্রতি বছর এভাবেই ভারতীয় বন্য হাতি তার ধান খেয়ে ও নষ্ট করে দিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মো: রুহুল আমিন জানান, আমি সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময়ে সীমানা পেরিয়ে ভারতীয় বন্য হাতি রৌমারী এলাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়া বন্ধ করার জন্য দু’দেশের সরকারের নিকট আবেদন করেছিলাম। এখনও করছি।
বন্য হাতি রৌমারী উপজেলায় কী পরিমাণ জমির ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষতি করেছে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়ার হোসেন বলেন, কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপনের কাজ চলছে। তবে আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল ইমরান জানান, ফসল রক্ষায় স্থানীয়ভাবে হাতি তাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হচ্ছে।