৬০০ ওষুধ নিচ্ছিলেন আরএমও’র আত্মীয়রা, ছেড়ে দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ!
নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আমিনুল ইসলামের দুই আত্মীয়ের কাছ থেকে ১১ ধরনের ৬০০ ওষুধ উদ্ধার করার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তারা হলেন ডা. আমিনুল ইসলামের মামাতো ভাই গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরের আহমেদ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম স্বপন ও স্বপনের ভায়রা নাটোর সদর উপজেলার জলারকান্দি গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে জাহের উদ্দিন।
উদ্ধার হওয়া ওষুধের মধ্যে রয়েছে-ইসোরাল ৬০ পিস, সলবিয়ন-৪০ পিস, ওপি ক্যাপসুল ৮০ পিস, কট্রিম ১৬০ পিস, এমোক্স ৪০ পিস, প্যারাসিটামল ১০০ পিস, সিপ্রোসিন ২০ পিস, সিট্রিজিন ২০ পিস, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ৬০ পিস, এসিলোফিকাল ২০ পিস এবং জেন্টামাইসিন ক্রিম ৪টি।
বুধবার (৩ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে আরএমও’র কক্ষেই দুই আত্মীয়কে ওষুধগুলো ব্যাগে ভরতে দেখেন নাটোর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান। বিষয়টি তিনি সিভিল সার্জনকে জানালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওষুধগুলো উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই দুইজনকে ছেড়ে দিয়ে শুধু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে চিকিৎসার জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে আসেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান। চিকিৎসার প্রয়োজনে আরএমও ডা. আমিনুল ইসলামের কক্ষে প্রবেশ করেন তিনি। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে দেখেন আরএমও’র আত্মীয় স্বপন ও জাহের উদ্দিন তাদের ব্যাগে বেশ কিছু ওষুধ ঢোকাচ্ছেন। এসময় চেয়ারম্যান রমজান এসব ওষুধ তারা কোথায় পেয়েছেন, জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা। তখনই চেয়ারম্যান বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক আনসারুল ইসলাম ও জেলা সিভিল সার্জনকে অবহিত করেন। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধার করা ওষুধগুলো নাটোর আধুনিক সদর হাসাপাতালের রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরবরাহ করা।
এ ব্যাপারে আরএমও আমিনুল ইসলাম জানান, তার আত্মীয় শফিকুলের হাত কেটে যাওয়ায় মাত্র ৪টি ক্রিম দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাকি ওষুধগুলো কীভাবে তাদের ব্যাগে এলো, তা তিনি জানেন না। ওষুধ নেয়ার সময় তিনি তার কক্ষে ছিলেন না।
সদর হাসপাতালের মেডিসিন কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট রেবেকা সুলতানা বলেন, আমি এসব ওষুধ কাউকেই দেইনি।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আনসারুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনা জানার সাথে সাথে ওষুধগুলো জব্দ করেছি। জব্দ করা ওষুধগুলোর মধ্যে তিন প্রকারের ওষুধ বর্তমানে হাসপাতালের স্টকেই নেই। কোনো ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশে এসব ওষুধ মজুদ করে রেখেছিলেন। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করার জন্য হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আনসারুল ইসলামকে বলা হয়েছে। সরকারি ওষুধ জনগণের জন্য। ভিন্ন উদ্দেশে এর মজুদ গ্রহণযোগ্য নয়। হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।